শুধু ভালোবাসা নয়, যৌনেচ্ছা প্রকাশের স্বাধীনতাও থাকা উচিৎ

ভালোবাসার কথা বলা যায়, তবু বুক কাঁপে প্রায় সবার। ভালোবাসা প্রকাশে আইনগত বাধা নেই বাংলাদেশে, তবে যৌনেচ্ছা প্রকাশের সুযোগ নেই, সামাজিকভাবে তো নেই, আইনটাও খুব গোলমেলে। বিষয়টিকে ঘিরে কেউ অভিযোগ করলে ইচ্ছাপোষণকারীর জেল পর্যন্ত হতে পারে।

পতিতাবৃত্তিও বাংলাদেশে বৈধ নয়। আইনে যাই থাক প্রশ্ন হচ্ছে, ব্যক্তির যৌন জীবনের স্বাধীনতা থাকা উচিৎ কিনা? অনেক দেশই বিষয়টিকে ব্যক্তিগত বিষয় হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ বন্ধ করেছে, ঐ একই দেশগুলোতেই আবার জোর জবরদস্তি বা ধর্ষণের জন্য কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়।

ফ্রান্সের জনগণ এ ব্যাপারে যথেষ্ট স্বাধীনতা ভোগ করে। সেখানে সেক্স পয়শা দিয়ে কেনা বা বেঁচা বৈধ নয়, তবে বাণিজ্যিকভাবে বেশ্যালয় চালানো অবৈধ, অর্থাৎ বিক্রেতাকে নিজেই এখানে মালিক হতে হবে। যদিও নীতিগতভাবে ফ্রান্স সেক্স কেনা-বেঁচার পক্ষে নয়।

আসলে কেনাবেঁচা হয়ই, টাকার বিনিময়ে না হোক, কোনো না কোনো মূল্য দেওয়া তো লাগেই। মেয়েরা মূল্য নেয়, যেহেতু পুরুষের অস্থিরতা বেশি, তাই মূল্য নেওয়ার সুযোগটা এক্ষেত্রে মেয়েদেরই বেশি থাকে। তাছাড়া মেয়েদের মূল্য নেওয়ার প্রাকৃতিক ‘কারণটিও’ মাথায় রাখতে হবে। যৌনান্দ ভোগ করার পরবর্তী জটিলতা নারীরাই বেশি ভোগ করে থাকে। হয়ত এক্ষেত্রে একারণেই মেয়েরা অনেক বেশী সংযমী এবং সম্মানী।

ফ্রান্স মনে করে সামাজিকভাবেই নিজেদের প্রয়োজনে নারী-পুরুষ শারীরিকভাবে মিলিত হবে। শারীরিক সম্পর্কটা অত্যন্ত আবেগের, লোভের, লাভের এবং প্রয়োজনের একটি বিষয়, এক্ষেত্রে আলাদাভাবা কোনো লেনদেনের প্রয়োজন নেই। লেনদেনটা শারীরিক সম্পর্কে এতটাই অন্তর্নিহীত যে সুন্দর বোঝাপড়া হলে আলাদা কিছু লাগে না।

কেনা-বেঁচা হলে যৌনতার আবেগের দিকটা দুর্বল হয়ে যায় বলে ফ্রান্সের সমাজ বিজ্ঞানীরা মনে করে। ফ্রান্সে আইনগতভাবে আঠারো বছরের কম বয়সী কারো কাছ থেকে সেক্স কেনা যায় না। তবে নন কমার্সিয়াল সেক্স হলে তা পনেরো বছর বয়সের কারো সাথেও হতে পারে।

অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, যৌনেচ্ছা প্রকাশের সুযোগ থাকলে সমাজে কিছু সমস্যা কমবে। তারা মনে করেন— যৌনাকাঙক্ষা প্রকাশের সুযোগ থাকতে হবে পাশাপাশি প্রত্যাখানের সুযোগ থাকতে হবে আরও স্পষ্টভাবে। এ বিষয়ে সামাজিক সচেতনতা প্রয়োজন বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। নারী পুরুষ উভয়ের জন্য এ সুযোগ থাকা উচিৎ।


লেখক: নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক