গুলি করে ঝাঁজরা করে দিয়েছে, কথার ছলে বলা কথা। আসলে কয়টা গুলি করলে লাগলে ঝাঁজরা করে দেয়া বলা যায়? ১টা, ২টা, ৩ টা?
তাঁর নাম জোসনা। থাকেন ঢাকার শাহজাহানপুরে। পাকিস্তানিরা ৬ টা গুলি করেছিলো তাঁর শরীরে। বেঁচে থাকার কথা না, বেঁচে গিয়েছেন। বাকিগুলি বের করা হয়েছিলো। একটা রয়ে গেছিলো বুকের ভেতর।
স্বাধীনতার ৪৬ বছর পার হয়ে গেছে। প্রায় ভুলেই গেছিলেন সেই গুলির কথা। হঠাৎ কাশির সাথে শুরু হলো রক্তপাত। ছুটে গেলেন ডাক্তার ফাতেহ আকরাম দোলন এর কাছে। এক্স রে করে দেখা গেলো, লুকিয়ে থাকা গোপন ঘাতক মাথা চাড়া দিচ্ছে।
আমরা পাকিস্তানি লন বুকে না জড়ালে ইজ্জত থাকেনা। পাকিস্তানের বোরকা না হইলে ঠিক মোসলমান হইতে পারিনা। পাকিস্তানের ক্রিকেট না সাপোর্ট করলে ঠিক রক্তে নাচন লাগে না। সমস্যাটা অইখানেই, রক্তে।
আপনি ভুলে যান আপনার পূর্বপুরুষের কথা। অথচ তাঁর রক্তজবার মতো ক্ষতের উপর দাঁড়িয়ে আপনি। তিরিশ লক্ষ শহীদের রক্ত ছড়িয়ে দিলে ভিজে যাবে পুরো বাংলার মাটি। সেই মাটির উপর দাঁড়িয়ে আপনি দেশকে তুচ্ছ করেন।
ঘৃণা করতে বলিনা। ঘৃণা করার সময় পেরিয়েছে। দাবি আদায়ের সময় এসেছে। যে টাকা পাকিস্তানিরা আমাদের কোনদিন ফেরত দেয়নি, সেটা চাওয়া। যে ধ্বংশযজ্ঞ তারা চালিয়েছে, তার ক্ষতিপুরন চাওয়া। যে অসংখ্য বাঙ্গালীর উপর তারা অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে তার জন্য নিজের প্রাপ্যটা বুঝে নেয়া। তিরিশ লক্ষ প্রানের হত্যার দায় স্বীকার করে হায়েনারা যেন ক্ষমা চায় তার জন্য চিৎকার করে যাওয়া।
আপনি ভুলে যান, আমি ভুলে যাই, জোসনাও ভুলে যান। পিঠ ফুঁড়ে বুকের ভেতর বসে ঘাতকের বুলেট, ঘাতকেরা এই বাংলায় আস্তে আস্তে কুরে কুরে খায়। রক্তবমি না ওঠা পর্যন্ত আমরা বুঝিনা আমরা শেষ হয়ে যাচ্ছি।
ইতিহাস দাগ রেখে যায়, ইতিহাস বুলেট হয়ে ফিরে এসে বলে দিয়ে যায়, রক্ত-ঋণ ভুলে যেয়ো না।
ছবি ও তথ্যের জন্য কৃতজ্ঞতাঃ Razibul Bari Palash