ঝাক্কি দিয়ে ওঠ্ – প্রদ্যোত

ঝক্কি দিয়ে ওঠ্

এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের স্বাধীনতা কতিপয় বিপথগামী দুষ্কৃতকারীর অশুভ কর্মকাণ্ডে আজ হুমকির সম্মুখীন। এখনই সময় জেগে ওঠার! রুখে দাঁড়াও, দেশপ্রেমিক তারুণ্য!

টকটকা লাল রক্তের বইন্যায়
দ্যাশটারে গোসল করাইয়া দিয়া ভাবছিলাম
এই মাডি পবিত্র হইবো – হয় নাই।
সবুজ পতাকার অন্তরের মইধ্যে
গণগনা সূর্য আইক্যা দিয়া ভাবছিলাম –
সব আন্ধার কাইট্যা যাইবো – কাডে নাই।
দুই-একখান যা ক্যানসারের জীবানু ছিল এই জমিনে;
হেইগুলান আইজ বংশ
বাড়াইতে বাড়াইতে
সারা দ্যাশ ছাইয়া ফ্যালাইছে।

ছোড ছোড ক্যানসারের বাচ্চারা আইজ
ওয়াঁ ওয়াঁ করতে করতে –
মোগো টুটি চাইপ্যা ধরতে চায়!
মোরা কিছুই করবার পারিনা!
আর মোগো পোলাপানেরা!
যাগো লাইগা এল.এম.জি হাতে –
নয়ডা মাস ধাবড়া-ধাবড়ি করছি,
কতা কইছি বুলেটের লগে,
হাত ভিজাইছি; জানের দোস্তোর
বুকেরতোন ফিনকি দিয়া ছোডা রক্তে।
হেই পোলাপানগুলান,
হেই মর্দ্দা জুয়ানগুলান!
আইজ স্বাধীনতার কেচ্ছা হোনলে-
কান মোচড়াইতে মোচড়াইতে সইরা যায়,
ডিশের চ্যানেল অন কইরা, চক্ষু বড়বড় কইরা
মাধুরী-ম্যাডোনার মাজা-
ঢুলাইন্যা ন্যাংটা নাচোন দ্যাহে
আর মারহাবা মারহাবা কইয়া চিক্কুর পারে।
স্বাধীনতার কতা হ্যাগো ভালো লাগেনা,
গল্প গল্প মনে হয়।
ওরে, স্বাধীনতার মর্ম তোরা বুঝবি ক্যামনে!
মোঁয়া আইন্যা দিছি,
মচমচাইয়্যা খাইতে আছোস,
ফুরাইয়া গ্যালে বুঝবি মোঁয়ার স্বাদ!

আইজ এ্যাত্তোগুলান বছর পরও
যহোন দেহি
চাঁন-তারা আকইন্যা ফাকিস্তানি পতাকা লইয়া
হগুনগুলান ঘোরে আমার দ্যাশে;
বুকের মইধ্যে ছ্যাৎ কইরা ওডে তান্ডবের ভয়ে!
আর তোরা হ্যাগোর ভন্ডামীর লেকচার –
হজম কইরা ফ্যালাস ঘুমের বড়ির ল্যাহান!

যহন দেহি
হেই বেজম্মাগো পয়দা করা কুত্তাগুলান
তোগো বইনেগো ইজ্জত লইয়া মাতম করে,
খাবলাইয়া খাবলাইয়া খায়
মোগো স্বাধীন শরিলডা!
রক্তের মইধ্যে তুফান ওডে,
ইচ্ছা করে আবার ঝাপাইয়া পড়ি -পারিনা!
আর তোরা!
তোরা তহন গাঞ্জার কল্কিতে দম দিয়া –
রাজা-বাদশা সাজোস,
ডাইলের বোতলে চুবনি খাইয়া –
দ্যাহোছ রঙ্গিন হপ্পন,
‘আমার সোনার বাংলা’ গান ভুইল্যা –
‘ওলে ওলে’ আর ‘হাম্বা হাম্বা’ কইয়া
দামড়া বাছুরডার লাহান ফাল পাড়স্!
তোগো শরিলের গিডেগিডে জং ধইরা গ্যাছে,
কাল হইছে রক্ত আর মাথা খাইছে নেশায়!

বুঝবি!
যেইদিন ওরা তোগো মা-বইনেরে ছিড়া-খাইয়া
তোগো হাত-পায়ের রগ কাটবো,
নরলিতে চালাইবো খুর;
হেইদিন বুঝবি!
ডিশের নাচোন আর ডাইল-গাঞ্জার মজা কারে কয়!
এ্যাহোনও সময় আছে বাপ!
রক্তের মইধ্যে আগুন জ্বালাইয়া,
ঝাক্কি দিয়া ওঠ্!
রক্ষা কর তোগো উত্তরাধিকারে পাওয়া
এই স্বাধীনতা।

১২.১২.১৯৯৬ এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা

কাব্যগ্রন্থ: দ্রোহের জলে দহন

কাব্যগ্রন্থ