প্রশাসনিকভাবে গোপালগঞ্জ জেলা গঠিত হয় ১৯৮৪ সালে। এটি পূর্বে ফরিদপুর জেলার অন্তর্গত একটি মহকুমা ছিল। গোপালগঞ্জ জেলা ঢাকা বিভাগের একটি প্রশাসনিক জেলা। বাংলাদেশের দক্ষিণ পশ্চিমাংশে মধুমতি নদী বিধৌত একটি জেলা গোপালগঞ্জ।
জেলার পাঁচটি উপজেলার মধ্যে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা আয়তনে এবং জনসংখ্যায় সর্ববৃহৎ (৩৯১.৩৫ বর্গ কিমি) এবং এটি জেলার মোট আয়তনের ২৬.২৭% এলাকা জুড়ে অবস্থিত। জেলার সবচেয়ে ছোট উপজেলা টুঙ্গীপাড়া (১২৭.২৫ বর্গ কিমি)।
গোপালগঞ্জ জেলায় ইউনিয়ন রয়েছে মোট ৬৮টি। কাশিয়ানী উপজেলা ব্যতীত প্রতিটি উপজেলায় পৌরসভা রয়েছে। মোট গ্রাম রয়েছে ৮৮০টি, এর মধ্যে মুকসুদপুরে গ্রামের সংখ্যা সর্বাধিক ২৫৪টি। সবচে ছোট উপজেলা টুঙ্গিপাড়ায় গ্রাম রয়েছে ৬৯টি।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা: জালালাবাদ, বৌলতলী, শুকতাইল, চন্দ্রদিঘলিয়া, গোপীনাথপুর, পাইককান্দি, উরফি, লতিফপুর, সাতপাড়, সাহাপুর, হরিদাসপুর, উলপুর, নিজড়া, করপাড়া, দুর্গাপুর, কাজুলিয়া, কাঠি, মাঝিগাতী, রঘুনাথপুর, গোবরা, বোড়াশী।
মুকসুদপুর উপজেলা: দিগনগর, পশারগাতী, গোবিন্দপুর, খান্দারপাড়, বহুগ্রাম, বাঁশবাড়িয়া, ভাবড়াশুর, মহারাজপুর, বাটিকামারী, জলিলপাড়, রাঘদী, গোহালা, মোচনা, উজানী, কাশালিয়া, নীনক্ষীর।
কাশিয়ানী উপজেলা: মহেশপুর, পারুলিয়া, মাহমুদপুর, সাজাইল, কাশিয়ানী, রাতইল, ফুকরা, ওড়াকান্দি, রাজপাট, হাতিয়াড়া, সিংগা, বেথুড়ী, পুইশুর, নিজামকান্দি।
কোটালীপাড়া উপজেলা: কলাবাড়ী, সাদুল্লাপুর, রামশীল, বান্দাবাড়ী, রাধাগঞ্জ, কুশলা, হিরণ, ঘাঘর, আমতলী, শুয়াগ্রাম, পিঞ্জুরী, কান্দি।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা: কুশালী, বরণি, গোপালপুর, পাটগাতি, ডুমরিয়া।
গোপালগঞ্জ জেলার উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান—
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ
- সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ, গোপালগঞ্জ
- শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ, গোপালগঞ্জ
- হাজী লালমিয়া সিটি কলেজ, গোপালগঞ্জ
- গওহর ডাঙ্গা মাদরাসা, টুঙ্গিপাড়া
- ভেন্নাবাড়ী মাদরাসা, গোপালগঞ্জ সদর
- কোট মসজিদ মাদরাসা, গোপালগঞ্জ সদর
দর্শণীয় স্থান–
- টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধি কমপ্লেক্স,
- চন্দ্রা ভর্মা ফোর্ট (কোটাল দুর্গ),
- কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের পৈত্রিকবাড়ী,
- হরিণাহাটির জমিদার বাড়ী,
- দিঘলীয়া দক্ষিণা কালী বাড়ী,
- বহুতলী মসজিদ (১৫৫৩ সালে প্রতিষ্ঠিত),
- সেন্ট মথুরানাথের সমাধি,
- উজানীর জমিদার বাড়ী,
- শ্রীধাম ওড়াকান্দি,
- জগদান্দ মহাশয়ের তীর্থভূমি,
- ননীক্ষীরে নবরত্ন মঠ,
- ঐতিহাসিক রমেশ চন্দ্র মজুমদারের পৈতৃক বাড়ী,
- ধর্মরায়ের বাড়ি,
- দীঘলিয়া দক্ষিণা কালীবাড়ি,
- মধুমতি নদী,
- বিলরুট ক্যানেল,
- হিরন্যকান্দী আমগাছ,
- আড়পাড়া মুন্সীবাড়ি,
- শুকদেবের আশ্রম,
- খানারপাড় দীঘি,
- উলপুর জমিদারবাড়ি,
- ৭১-এর বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ (স্মৃতিস্তম্ভ),
- রাজা সমাচার দেব, ধর্মাদিত্য ও গোপচন্দ্রের আমলের তাম্রলিপি,
- সত্য ধর্মের প্রবর্তক দীননাথ সেনের সমাধিসৌধ (জলিরপাড়, মুকসুদপুর),
- পাগল সেবাশ্রম, কদমবাড়ি,
- বাঘিয়ার বিল (টুংগিপাড়া),
- পদ্মবিল (কোটালীপাড়া),
- বরনির বাওড়,
- বনগ্রাম ভূইয়া বাড়ি,
- সুকতাইল মঠবাড়ি,
কৃতি ব্যক্তিত্ব
- শেখ মুজিবুর রহমান – জাতির জনক;
- শেখ হাসিনা – বর্তমান প্রধানমন্ত্রী;
- সুকান্ত ভট্টাচার্য (কবি);
- হরিচাঁদ ঠাকুর – মতুয়া ধর্মের প্রবর্তক;
- গুরুচাঁদ ঠাকুর – হরিচাঁদ ঠাকুরের ছেলে;
- সুধীরলাল চক্রবর্তী (১৯১৬-১৯৫২) বাংলা ভাষার সুরকার ও সঙ্গীতজ্ঞ ও সুরকার;
- শেখ ফজলুল হক মনি (যুবলীগের প্রতিষ্টাতা চেয়ারম্যান);
- মথুরানাথ বসু (বিশিষ্ট খ্রিষ্টান ধর্ম প্রচারক);
- চন্দ্র নাথ বসু (শিক্ষানুরাগী);
- নির্মল সেন (বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট, বাম রাজনীতির পুরোধা ও মুক্তিযোদ্ধা);
- ফিরোজা বেগম (সংগীত শিল্পি);
- কাজী হায়াৎ পরিচালক, কাহিনীকার, চিত্রনাট্যকার, প্রযোজক এবং অভিনেতা;
- রমেশচন্দ্র মজুমদার (১৮৮৮- ১৯৮০) একজন বাঙালি ইতিহাসবিদ। ১৯৩৬-১৯৪২ তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সচরাচর আর, সি, মজুমদার নামে অভিহিত।
https://youtu.be/mHTCTM5mKxw?t=8