লিভার বা যকৃত শরীরের সবচেয়ে বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। সুস্থ থাকতে লিভারের খেয়াল রাখার কোনো বিকল্প নেই। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই লিভার খারাপ হওয়ার কারণ হয় কিছু বদ অভ্যাস, সাধারণত খাবারের অভ্যেস এক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ। জেনে নিন লিভার সুস্থ রাখার ১০টা সহজ উপায়।
১. লো ফ্যাট ফুডে ‘না’: ফ্যাটি লিভারের সমস্যা এড়াতে অতিরিক্ত মদ্যপান, তেল-মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিৎ। একই সাথে লো ফ্যাট ফুড (সুপার মার্কেট এবং রেস্টুরেন্টে সরবারাহকৃত) হইতেও সাবধান থাকতে হবে। এই সব খাবার থেকে ফ্যাট বাদ দেওয়া হয় হয়ত, কিন্তু স্বাদ ধরে রাখতে যোগ করা হয় প্রচুর পরিমাণ চিনি, এতে লিভারের সমস্যা আরও বেড়ে যায়।
২. স্ট্রেস থাকলে খাবেন না: বিরক্ত লাগলে, এনার্জি কম থাকলে কী করি আমরা? অনেকেই এই সময় খাবার খেয়ে মুড ঠিক করতে চাই। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন যে, লিভার সুস্থ রাখতে স্ট্রেসের সময় খাবার খাওয়া যাবে না। এই সময় হজম ঠিক মতো হয় না।
৩. হার্বাল কেয়ার: এটা ঠিক যে, বেশ কিছু গাছের মূল রয়েছে যা লিভার সুস্থ রাখতে সাহায্য করে— ড্যানডেলিওন, মিল্ক থিসল বা হলুদের মূল লিভারের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু অনেক হারবাল লিভারের বারোটা বাজিয়েও দেয়। হারবাল ওষুধ কিনে না খাওয়াই ভালো। কারণ, বাণিজ্যিক এসব পণ্যে কীভাবে কী করা হয়েছে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
৪. সাপ্লিমেন্ট: প্রোটিন বা ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার সময় সতর্ক থাকতে হবে। এমন সাপ্লিমেন্ট বাছাই করতে হবে যা লিভার ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন সি লিভার পরিষ্কার রাখে। প্রোটিনের মধ্যে থাকা অ্যামাইনো অ্যাসিডও লিভার পরিষ্কার রাখার জন্য কার্যকর। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড লিভার সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
৫. ওষুধ থেকে সাবধান: বেশি কিছু ওষুধ লিভারের ক্ষতি করে —এসব ওষুধ খাওয়া যাবে না। কিছু পেনকিলার, যেমন টাইলেনল বা কোলেস্টেরলের ওষুধ লিভারের প্রভূত ক্ষতি করে।
৬. কফি: চা, কফি খেলে শরীরের কিছু ক্ষতি হয় ঠিকই, চা-কফি খাওয়ার কিন্তু অনেক সুফলও রয়েছে। গবেষণা জানাচ্ছে, নিয়মিত কফি খেলে লিভারের অসুখে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমপক্ষে ১৪ শতাংশ কমে যায়।
৭. টক্সিন: ত্বকে বিষক্রিয়া লিভারের উপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে। ত্বকের মাধ্যমে বিষ রক্তে শোষিত হয়। তাই স্প্রে, টক্সিন থেকে দূরে থাকুন, ত্বকে কোনো অসুখ থাকলে চিকিৎসা নিন।
৮. প্লান্ট প্রোটিন: লিভার সুস্থ রাখতে সবচেয়ে বেশি জরুরি সঠিক খাবার বাছাই করি। অ্যানিমাল প্রোটিনের থেকে লিভারের জন্য বেশি ভাল প্লান্ট প্রোটিন, চর্বির বেলায়ও একই কথা। এনিমেল ফ্যাট খুব ক্ষতিকর। ডাল, সবুজ শাক-সব্জি, বাদাম, ফাইবার জাতীয় খাবার খান। মাংসা না খেয়ে মাছ খান, এক্ষেত্রে সামুদ্রিক মাছ এবং ছোট মাছ উপকারী।
৯. অ্যালকোহল: অ্যালকোহল লিভারের সমূহ ক্ষতি করে— টক্সিন জমা করে। ফলে অতিরিক্ত মদ্যপান থেকে বিরত থাকুন, তবে শীতের দেশে হালকা অ্যালকোহল শরীরের পক্ষে ভাল।
১০. হেলদি ফ্যাট: ফ্যাট শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। তাই লিভার সুস্থ রাখতে ফ্যাট ডায়েট চার্ট থেকে একেবারে বাদ দেওয়া যাবে না। হেলদি ফ্যাট খেতে হবে— অলিভ অয়েল অথবা তিলের তেল ব্যবহার করতে হবে, সম্ভব না হলে অন্তত খাঁটি সরিষার তেল ব্যবহার করুন।