৬ এপ্রিল ২০২২, গুটুদিয়া, ডুমুরিয়া, খুলনা
আর্থিক অনটনের কাছে হার মানা কুয়েট ছাত্র অন্তু রায়ের বাড়ি থেকে বের হলাম। মা বাবাসহ স্বজনদের আহাজারি চলছে।
আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে অন্তু। সবার ধারণা আর্থিক অনটনের কারণে এটা ঘটেছে।
মা গীতা রায়, বাবা দেবব্রত রায় দিনমজুর। মাঠে কাজ করেন।
ঘরে একটা খাট। কখোনো চার জন একসাথে ঘুমান বা রাতে কেউ কেউ বারান্দায় থাকেন। ঘরের এক কোণায় ফাঁস নিয়েছে বলে জানা গেল। এত ছোট নড়বড়ে ঘর, ফাঁস নেওয়ার জায়গা খুঁজে পাওয়া কঠিন!
অন্তুর একমাত্র ছোট বোন চৈতি। মেধাবী শিক্ষার্থী। এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবে। খরচ বেশি তাই পরিবার তাকে বিজ্ঞান বিভাগে পড়াননি। মানবিক বিভাগে পড়ছে।
অন্তুর মা গীতা রায় বললেন, “ছেলেকে বলেছিলাম, আমার দুই হাত আছে, কাজ করে টাকা জোগাড় করবো। তুমি চিন্তা করবা না। পড়াশুনা করবা । সবসময় টাকা দিতে পারিনি। ও আমাদের চিন্তা মুক্ত করে চলে গেল।”
কুয়েট কতৃপক্ষ কী দায়িত্ব পালন করেছে? কোন ছাত্র পরীক্ষা দিতে পারছে না কেন? কেউ আর্থিক অনটনে পড়লে ঐ অনটন মিটানোর বিকল্প পথ খুঁজেছেন কী? এসব প্রশ্নের উত্তর তাদের দিতে হবে।
আর যারা বলে চলেছেন, মানুষ ভালো আছে! এইতো ভালো থাকার ছোট্ট নমুনা মাত্র। এদের কথার উত্তর দিয়ে সময় নষ্ট করার প্রয়োজন নেই। এই সমাজ? “এ জন্যই তো এই সমাজ ভাঙতেই হবে” ।
লেখক: সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ কম্যুনিস্ট পার্টি
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র অন্তু রায় (২১) আত্মহত্যা করেছে। ৪ এপ্রিল (২০২২) সকালে ডুমুরিয়া উপজেলার গুটুদিয়া ইউনিয়নের নিজ বাসাতেই তিনি আত্মহত্যা করেন।
জানা যায়, অন্তু খুবই মেধাবী ছাত্র ছিল। তবে তার পরিবারে আর্থিক অনটন ছিল। পাশাপাশি কুয়েটের ড. এম এ রশিদ হলেও তার অনেক টাকা বকেয়া হয়ে গিয়েছিল। গত রোববার অন্তু তার পরিবারের কাছে টাকা চায়। এ সময় তার মা তাকে ৩ হাজার টাকা দিয়েছিল। এরপর সোমবার সকালে তার বাবা দেবব্রত রায় ও তার মা মাঠে যায় কাজ করতে। তার ছোট বোন বেলা ১১টার দিকে প্রাইভেট পড়া থেকে এসে ঘরের মধ্যে অন্তুর লাশ ঝুলতে দেখে।