Headlines

ব্যাংক কর্মকর্তার ঋণ প্রতারণা ॥ বিপাকে বিধবা কিষানি

full_1611263071_1431164817

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ মোল্লাহাটে অক্ষরজ্ঞানহীন এক কৃষাণীকে কৃষি ব্যাংকের লোন দেয়ার নামে চাঞ্চল্যকর প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক মোল্লাহাট শাখার দুর্নীতিবাজ এক কর্মকর্তার অভিনব লোন প্রতারণার শিকার হয়ে অক্ষরজ্ঞানহীন বিধবা ওই ভূমিহীন কৃষাণী এখন সন্তানদের নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন। ওই ঘটনায় দুর্নীতিবাজ ব্যাংক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে তাকে রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।

উপজেলার গাংনী গ্রামের মৃত বাদল বিশ্বাসের স্ত্রী ক্ষেতমজুর রেখা বিশ্বাস জানান, প্রায় দুই বছর আগে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি তার আশ্রয়স্থলে (অন্যের জমিতে বসতঘর) গিয়ে তাকে বলেন, কৃষি ব্যাংক মোল্লাহাট শাখার আইও নেছার উদ্দিনের সঙ্গে দেখা করলে তিনি তাকে আর্থিক সাহায্য করতে পারেন। সে মোতাবেক দেখা করলে আইও নেছার সাহেব বলেন, ছবি এবং সন্তানদের তালিকা দিলে দু-একদিনের মধ্যে কিছু টাকা অনুদান দিতে পারবেন। ওই দিনই কৃষি ব্যাংক মোল্লাহাট শাখার অদূরে হাসপাতাল মোড়ের এক দোকান থেকে ছবি তুলে নেছারের নিকট দিলে তিনি বলেন, অনুদানের টাকা রেডি করতে একটু সময় লাগবে এবং কিছু খরচাপাতি লাগে। তখন অভাব-অনটনের কথা বলতেই তিনি তার মোবাইল নম্বর দিয়ে বলেন, ঠিক আছে তুমি ফোন করে আসবা, আমি রেডি করি। পরে মোবাইলে যোগাযোগ করলে ৫-৬ দিন পর অক্ষরজ্ঞানহীন ওই কৃষাণীকে ব্যাংকে ডেকে নিয়ে কয়েকটি টিপ রেখে ব্যাংকের বাইরে অপেক্ষা করতে বলেন। পরে আইও নেছার সেখানে গিয়ে তার হাতে পাঁচ হাজার টাকা দেন এবং বলেন, খরচের টাকা রেখে এই টাকা দিলাম। বর্তমানে ওই ব্যাংকের আইও মিরাজুল ইসলাম তার স্থলে বদলি হয়ে আসার পর রেখা বিশ্বাসকে লোন পরিশোধের জন্য চাপ দেন। রেখা বিশ্বাসকে বলছেন, তিনি নিজের পরিচয় গোপন রেখে কেবল ছবি এবং আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে চিনিয়ারা নামের অন্য এক নারীর পরিচয়ে ৮০ হাজার টাকা লোন নিয়েছেন। এমনকি ওই মুসলিম নারীর নিজস্ব জমিও লোন হিসেবে বন্ধক দেখানো হয়েছে। ব্যাংক কর্মকর্তার লোন প্রতারণা থেকে মুক্তির দাবিতে অক্ষরজ্ঞানহীন রেখা বিশ্বাস আরও বলেন, নিজস্ব কোন জমি/বসতবাড়ি না থাকায় অন্যের আশ্রয়ে থেকে তিনি ও তার এক মেয়ে এবং এক ছেলে বিভিন্ন লোকের জমিতে (ক্ষেত-খামারে) শ্রম বিক্রি করে সংসার চালানোসহ অতিকষ্টে এক মেয়েকে পড়ালেখা করাচ্ছেন। অভিযুক্ত ব্যাংক কর্মকর্তা নেছার উদ্দিন মোবাইল ফোনে জানান, গাংনী এলাকার জনৈক দালালকে বিশ্বাস করে তিনি বেকায়দায় পড়েছেন, কেবল রেখা বিশ্বাস ও চিনিয়ারাই নয়, তার সরলতার সুযোগে ওই দালাল মোট ১৩টি লোন তাকে দিয়ে করিয়েছেন, যার সবই হেড অফিসের মাধ্যমে তদন্ত চলছে। বর্তমান শাখা ব্যবস্থাপক বলেন, যেহেতু রেখা বিশ্বাসের সংশ্লিষ্টতা আছে, সেহেতু বর্তমান আইও তার কাছে গেছেন। এছাড়া নেছারের বেশকিছু লোনে সমাস্যা রয়েছে।

সূত্র: খবরটি জনকণ্ঠ পত্রিকা থেকে সংগৃহীত। জনকণ্ঠ পত্রিকায় খবরটি প্রকাশিত হয়

প্রকাশিত : ৩১ ডিসেম্বর ২০১৫, ১২:৩৬ এ. এম.