গরুর দুধ খাওয়ার পরেই জলাতঙ্ক! র্যাবিস ভাইরাসের সংক্রমণে মহিলার মৃত্যু দিল্লিতে
♣ যে গরুর দুধ ওই মহিলা খান, সেই গরুটিকে কুকুর কামড়েছিল!
♣ চিকিৎসকরা পরীক্ষা করলে ধরা পড়ে মহিলার শরীরে র্যাবিস ভাইরাস রয়েছে।
♣ গবেষকরা বলছেন, কুকুরের মতোই গরুও ব়্যাবিস ভাইরাস বহন করে।
♣ যদি কেউ গুরুর দুধ না ফুটিয়ে খান সেক্ষেত্রে তাঁর শরীরে ভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে।
♣ হতে পারে, যে গরুর দুধ ওই মহিলা খেয়েছিলেন সেই গরুটিকে দিনকয়েক আগে কুকুর কামড়েছিল।
গরুর দুধ খেয়ে জলাতঙ্কে মৃত দিল্লির মহিলা। কীভাবে দুধে এল ভাইরাস, চিন্তায় পড়ে গিয়েছেন গবেষকেরা। এই ঘটনার পরেই সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ’ (আইসিএআর)।
গরুর দুধ খাওয়ার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে ধরা পড়ে মহিলা জলাতঙ্ক বা হাইড্রোফোবিয়ায় আক্রান্ত। শরীরে পাওয়া যায় র্যাবিস ভাইরাস। সংক্রমণের জেরেই মৃত্যু হয় মহিলার। এই ঘটনা ঘটেছে দিল্লিতে। এর পরেই দিল্লি ও আশপাশের এলাকার খাটালগুলোতে নজরদারি শুরু হয়েছে।
এই ঘটনার পরেই সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ’ (আইসিএআর)। কীভাবে দুধে ভাইরাস এল তা নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষাও শুরু হয়েছে। গবেষকদের দাবি, যে গরুর দুধ ওই মহিলা খেয়েছিলেন সেই গরুটিকে দিন কয়েক আগে কুকুর কামড়েছিলো। তা থেকেই গরুটির শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে। সংক্রমিত গরুটির দুধ খাওয়ার পরে মহিলাও র্যাবিসে আক্রান্ত হন।

ভারতে দেশে প্রতি বছর পাঁচ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয় র্যাবিস ভাইরাসের কারণে। অনেকেই সময়মতো জলাতঙ্কের টিকাও নেন, কিন্তু তার পরেও শরীরে সংক্রমণ ঘটে। ভাইরাস শরীরে ঢোকার সাত দিনের মধ্যে উপসর্গ দেখা দিতে থাকে। শরীরের রোগ প্রতিরোধী কোষগুলি একের পর এক নষ্ট হতে থাকে। প্রথমে জ্বর হয়। তার পর ধীরে ধীরে শরীরের গ্রন্থিগুলি ফুলে উঠতে থাকে। সারা শরীরে র্যাশ দেখা দেয় অনেকের। প্রদাহ শুরু হয় এবং এর জেরে খিঁচুনি বা পক্ষাঘাতও হতে পারে রোগীর। মুখ দিয়ে লালা পড়তে থাকে, জল দেখলে ভয় হয়। কথাবার্তা অসংলগ্ন হয়ে যায়, ভাবনাচিন্তা গুলিয়ে যেতে থাকে। কিছু ক্ষেত্রে রোগী কোমাতেও চলে যেতে পারেন।
কুকুরের কামড়ে কেবল নয়, র্যাবিস আক্রান্ত প্রাণীর মলমূত্র, লালা, দেহাবশেষ থেকেও ছড়াতে পারে। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, র্যাবিস আক্রান্ত গরুটির দুধেও ভাইরাস ছিলো। সেই দুধ ভাল করে না ফুটিয়ে খাওয়ার কারণেই মহিলা আক্রান্ত হন। এই ঘটনার পরে এলাকার সকলকে অ্যান্টি-র্যাবিস টিকা ও র্যাবিস ইমিউনোগ্লোবিউলিন (আরআইজি) প্রতিষেধক নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শরীরে ভাইরাস পাওয়া গেলে দেরি না করে দু’টি প্রতিষেধকই নিতে হবে। অ্যান্টি-র্যাবিসের সঙ্গেই আরআইজি টিকা নিলে সঙ্গে সঙ্গে রক্তে অ্যান্টিবডি তৈরি হবে। এই দুই প্রতিষেধক নিলে দ্বিস্তরীয় সুরক্ষাবলয় তৈরি হবে শরীরে। ফলে প্রাণসংশয়ের আশঙ্কা থাকবে না।
সূত্র: ভারতের অনলাইন পত্রিকা