প্রশ্ন উঠেছে— তারা সরকারি কোষাগারে বেশি জমা করেন, নাকি ঘুষ হিসেবে বেশি টাকা নেন? খুলনা কাস্টমস্ কমিশনারেটের সার্কেল-১-এর মধ্যে পড়েছে এমন কয়েকজন ব্যবসায়ী নাম গোপন রাখার শর্তে ঘুষ প্রদানের কথা অকপটে স্বীকার করেছেন।
সার্কেল-১-এর একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী বলেছেন, আমরা ভ্যাট বেশি দিলেও ঘুষ আমাদের একই পরিমাণই দিতে হবে। এজন্য আমরা ভ্যাট বাড়াই না। আর যেহেতু স্বর্ণ ক্রয়ের সময় ক্রেতারা ভ্যাট দেয় না, ফলে টাকাটা আমাদেরই দিতে হয়।
তবে আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে বাংলাদেশের স্বর্ণের বাজারে দামের যে পার্থক্য রয়েছে তাতে ‘ক্রেতারা ভ্যাট দেয় না’ বলে যে মন্তব্য তিনি করেছেন ক্রেতা হিসেবে সেটি মানতে নারাজ বিটিআরসি-এর সাবেক কর্মকর্তা আজম মাসুদ। তিনি বলেন, ৫% ভ্যাট যোগ করে দাম নির্ধারণ করলেও বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম সব সময় বেশি থাকে। পাশাপাশি স্বর্ণ আমদানী তো আসলে ভূতে করে!
বড় বাজারের একজন কাপড় ব্যবসায়ী বলেছেন, তারা (রাজস্ব কর্মকর্তা) একটা বড় অংক প্রথমে ধার্য করেন। ওটা দেওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। বিক্রি যা-ই হোক লাভের সব টাকা কি দিয়ে দেওয়া সম্ভব? বাধ্য হয়ে আমাদের ঘুষের আলোচনায় যেতে হয়।
সোনাডাঙ্গার একজন রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী বলেছেন, আমরা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে যত টাকা দিই, ঘুষ হিসেবে তার চেয়ে কম দিলে চলে না।
খুলনা কাস্টমস্ কমিশনারেটের সাবেক এবং বর্তমান তিনজন রাজস্ব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রচলিত এই টেবিল খরচের বাইরেও চাপ দিয়ে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বড় অংকের ঘুষ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। একটি কোম্পানি ফলোআপ নিউজ-কে বলেছে, আমরা মোটা অংকের ঘুষও দিলাম, আবার মামলাও খাচ্ছি!
এ বিষয়ে খুলনা কাস্টমস্ কমিশনারেটের কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে কথা বলতে চাইলে তারা মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। সাংবাদিকতার কাজে অসহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা সুজল বণিকের বিরুদ্ধে। ফলোআপ নিউজকেও তিনি কোনো তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
এ বিষয়ে এনবিআর-এর একজন উদ্ধর্তন কর্মকর্তার সাথে কথা বলা হলে তিনি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ চেয়েছেন, এবং ব্যবসায়ীরাই কর্মকর্তাদের অনেক সময় অবৈধ পথে ধাবিত করে বলে মন্তব্য করেছেন।
সম্পর্কিত সংবাদ
খুলনায় বড় প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট ফাঁকি বেশি
