হ্যাঁ, অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি সামরিক দখল নেওয়ার আগে বা কোনো দেশে প্রভাব বিস্তারের আগে, সেই দেশের “বিরাজনীতিকীকরণ” (depoliticization) প্রক্রিয়া চালায়। তবে এটি সব সময় সবদেশে একইভাবে হয় না; দেশভেদে ও পরিস্থিতিভেদে পদ্ধতি আলাদা হয়।

“বিরাজনীতিকীকরণ” বলতে কী বোঝানো হয়?
এই ধারণায় সাধারণত বোঝানো হয়—
একটি দেশের জনগণ, মিডিয়া, বুদ্ধিজীবী, ও রাজনৈতিক শক্তিগুলোর রাজনৈতিক চেতনা ও সংগঠিত প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে দেওয়া।
এটি করা হয় যাতে বিদেশি শক্তি (যেমন যুক্তরাষ্ট্র) সহজে তাদের অর্থনৈতিক, সামরিক বা নীতিগত লক্ষ্য অর্জন করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র সাধারণত যেভাবে এই প্রক্রিয়া চালায়ঃ
মিডিয়ার প্রভাবের মাধ্যমে:
গণমাধ্যম ও এনজিও-এর মাধ্যমে কোটি কোটি ডলার ব্যয় করে। ফেসবুকের কারণে মানুষের মনস্তত্ত্ব নিয়ে কাজ করা তাদের জন্য আরো সহজ হয়েছে।
এর ফলে জনগণ রাজনৈতিক চিন্তা থেকে দূরে সরে গিয়ে ভোক্তা বা ব্যক্তিকেন্দ্রিক চিন্তায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
রাজনৈতিক দল ও নেতৃত্বকে বিভক্ত করাঃ
বিরোধী দলগুলিকে দুর্বল বা বিভক্ত করতে কূটনৈতিক চাপ, অর্থনৈতিক সহায়তা, বা “ডেমোক্রেসি প্রোমোশন” প্রোগ্রাম ব্যবহার করা হয়।
কখনো “প্রো-আমেরিকান” রাজনীতিবিদদের শক্তিশালী করা হয়।
এনজিও ও সিভিল সোসাইটির মাধ্যমে নরম প্রভাব (Soft Power)ঃ
মানবাধিকার, গণতন্ত্র, শিক্ষা বা নারী উন্নয়নের নামে ফান্ডিং দিয়ে সমাজের ভেতরে নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি ঢোকানো হয়।
ধীরে ধীরে এসব এনজিও সরকারবিরোধী বা রাষ্ট্রীয় নীতিবিরোধী মতাদর্শ ছড়ায়।
অর্থনৈতিক নির্ভরতা তৈরিঃ
ঋণ, সাহায্য, বা বাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে দেশটিকে অর্থনৈতিকভাবে আমেরিকার ওপর নির্ভরশীল করে ফেলে।
তখন দেশটির নীতিনির্ধারকরা রাজনৈতিকভাবে স্বাধীন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না।
যুক্তরাষ্ট্র প্রভাবিত দেশের সেনাবাহিনী বা গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে, যাতে পরবর্তী সময়ে প্রয়োজন হলে “ইনটারভেনশন” সহজ হয়।
