৪১ বছর বয়সি বেটসি গত তিন বছর ধরে লু গ্রিগস্ রোগে ভুগছিলেন। চিকিত্সরকরা তাঁকে জানিয়েছিলন, এই রোগের ফলে ধীরে ধীরে তাঁর শরীরে প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হতে শুরু করবে। শুধু তাই নয়, এই রোগের ফলে শরীরে অসহ্য যন্ত্রণা হয়।
২০১৩ সালে এই মর্মান্তিক খবর শোনার পর ঘুরে বেড়ানোর একটা তালিকা তৈরি করেন বেটসি। তিনি জীবনের শেষ ক’টি দিন আনন্দের মধ্যে দিয়েই কাটাতে চেয়েছিলেন। গত ক’ মাস ধরে তাঁর শারীরিক অবস্থার অত্যন্ত অবনতি হয়। তার সঙ্গে যন্ত্রণাও বেড়ে যায় বহু গুণ। প্রায় মাস খানেক আগে ক্যালিফোর্নিয়ায় একটি সুইসাইড আইন পাস হয়। তাতে কোনও মৃত্যু শয্যায় থাকা কোনও রোগী চাইলে স্বেচ্ছা মৃত্যু নিতে পারেন। বেটসি এই আইন অনুযায়ী স্বেচ্ছায় মৃত্য বরণ করলেন।
তাঁর বোন বলেন, বেটসি শেষে কিছুই করতে পারত না। ব্রাশ করা, খাওয়া কিছুই না। ও নিজের শেষ ইচ্ছার কথা আমায় জানায়। এ ভাবেই ও শেষ বিদায় জানাতে চেয়েছিল সকলকে। হাসতে হাসতে। নিজে হাতে পার্টির শিডিউল তৈরি করেছিল। ওর কোন কোন পোশাক কোন বন্ধুকে দিয়ে যাবে তাও ঠিক করে রেখেছিল। সেই পোশাক পরে সকলে ওর সামনে ফ্যাশন শো করেন। দু’ দিন ধরে হওয়া এই পার্টিকে ও ‘পুনর্জন্ম’ হিসেবেই দেখেছে।’
পার্টির নিমন্ত্রণপত্রে বেটসি লেখেন, ‘ডিয়ার রিবার্থ পার্টিসিপ্যান্টস, তোমরা প্রত্যেক খুবই সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছ। আমায় এ ভাবে বিদায় জানানোর জন্য ধন্যবাদ। এই পার্টির কোনও নিয়ম নেই। যা খুশি পরো, যা খুশি বলো, নাচো, লাফাও, গান করো, প্রার্থনা করে — যা খুশি করো, শুধু আমার সামনে কাঁদবে না। এই একটাই নিয়ম মানতে হবে।’
নীল-সাদা কিমোনো পরে বেটসি জীবনের শেষ সূর্যান্ত দেখলেন সকলের সঙ্গে। সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে চিকিত্সক, নিজের বোন এবং মাসাজ থেরাপিস্টের সামনে ইঞ্জেকশন নেন। চার ঘণ্টা বাদে মারা যান বেটসি। তাঁর প্রিয়জনদের মতে, বেটসি মৃত্যুর সময়ও দেখিয়ে গেলেন বেঁচে থাকা কাকে বলে।
সূত্র: এইসময়.কম