শিশু বেলায় হাঁটতে-উঠতে-বসতে মানুষ পড়ে যায়, আবার উঠে দাঁড়ায়। পড়ে ওঠে পড়ে ওঠে —এভাবে। পড়ে গেলে কেউ না দেখলে কাঁদে না, কেউ দেখলেই শিশুর কান্না বেড়ে যায়।
বড় হলেও মানুষ পড়ে, প্রতিনিয়ত পড়ে। সে পড়া দেখা যায় না। রোজ পড়ছে রোজ উঠছে। এভাবে মানুষ একটা লক্ষ্যে গিয়ে পৌঁছে। পড়ে গেলে কাঁদবেন কেন? শিশু তো জানে না যে হাঁটতে হলে পড়তে হয়, তাই সে কাঁদে। কিন্তু আপনি তো জানেন, চলার পথে পড়তে হবেই। একবার দুইবার নয়, হাজার হাজার বার পড়তে হয় জীবনে। এও জানেন— আপনার পতন দেখলে মানুষ হাসে, সাহায্যে এগিয়ে আসে না কেউ। আসবেও না আপনি একেবারে মুমূর্ষু না হলে।
গোপনে কেঁদে নিন, ঠিক শিশুর উল্টো, কেউ দেখলে একেবারে কাঁদা যাবে না। বরং হাততালি দিয়ে ওঠার চেষ্টা করুন, অথবা শুয়ে পড়ুন নিশ্চেষ্ঠ হয়ে, ভাবটা এমন— আমি তো ইচ্ছে করেই পড়েছি। সবাই সরে গেলে তীব্র সংগ্রামে আবার উঠে দাঁড়ান। আবার অগ্রসর হন। দুরাবস্থা গোপন করুন, তাই বলে হারিয়ে যাবেন না, টিকে থাকার উপায় খুঁজে নিন, পড়বেন সত্য, তবে মনে রাখতে হবে— ওঠার জন্য পড়া, পড়ার জন্য ওঠা নয়।
এভাবে মনটা চাঙ্গা থাকবে, ঠিকই আর পড়বেন না, বাকি পথটুকু নির্বিঘ্নে পাড়ি দিতে পারবেন, পরিণত শিশু যেমন টুকটুক করে দৌঁড়ে পৌঁছে যায় মায়ের কোলে।
“কেন চেয়ে আছ, গো মা, মুখপানে । এরা চাহে না তোমারে চাহে না যে, আপন মায়েরে নাহি জানে। এরা তোমায় কিছু দেবে না, দেবে না— মিথ্যা কহে শুধু কত কী ভাণে।।” রবীন্দ্রনাথের এই গানটা অসাধারণ না?
দিব্যেন্দু দ্বীপ