ডেভিড ল্যাটিমার বোতলের গাছটি লাগিয়েছিলেন ১৯৬০ সালে। গত ৪৪ বছর ধরে বোতলটির মুখ সম্পূর্ন বন্ধ এবং বাইরের দুনিয়া থেকে বোতলের আভ্যন্তরীন জগৎ সম্পূর্ন পৃথক। এর ভিতরেই স্পাইডারওর্ট প্রজাতির একটি গাছ বিকশিত হয়েছে ডালপালা সমেত।
“এটাকে জানালা হতে ৬ ফুট দূরে রাখা হয়, তাই পর্যাপ্ত আলো পায়। এর এটি আলোর দিকে বাড়ার চেষ্টা করে তাই মাঝে মাঝে ঘুরিয়ে দেওয়া হয় যেন সবদিকে সুষমভাবে বৃদ্ধি পায়”, ল্যাটিমার জানান। তিনি আরো বলেন, “এটিকে আমি কখনোই ছাঁটাই করিনি, তাই এটি বোতলের ধারনক্ষমতা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে”।
এই বোতলের ভিতরে এর নিজস্ব ক্ষৃদ্রাকৃতির বাস্তুসংস্থান তৈরি হয়েছে। যদিও বাইরের জগৎ থেকে সম্পূর্ন পৃথক, তথাপি এটি সালোকসংস্লেশনের জন্য প্রয়োজনীয় সূর্যের আলো পায়। এই প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ সূর্যের আলোকে তাদের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় শক্তিতে রূপান্তর করে।
সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় অক্সিজেন উৎপন্ন হয় এবং বাতাসে আদ্রতাও তৈরি হয়। এই আদ্রতা বোতলের গায়ে জমা হয়ে পুনরায় মাটিতে পৌঁছায়। এর ঝরে যাওয়া পাতা পঁচে তা থেকে পুষ্টি ও কার্বন-ডাই অক্সাইড তৈরি হয়, যা সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার জন্য অপরিহার্য।
১৯৬০ সালের ইস্টার সানডেতে ল্যাটিমারের ভাষায় ‘শুধুমাত্র অলস কৌতুহল’ থেকে তিনি বোতল বাগানটি তৈরি করেছিলেন। তিনি বলেন, “সেই সময় মাত্র প্লাস্টিকের বোতল প্রচলিত হতে শুরু হয়েছিলো, তাই বাজারে প্রচুর কাচের বোতল পাওয়া যাচ্ছিলো। বোতলের বাগান তখন একধরনের উন্মাদনা ছিলো এবং আমি দেখতে চেয়েছিলাম পুরো জিনিসটিকে আবদ্ধ করে ফেললে কী হয়।” তিনি যেই বোতলটি নিয়েছিলেন তার ধারন ক্ষমতা দশ গ্যালন, এটিতে প্রাথমিকভাবে সালফিউরিক এসিড বহনের কাজে ব্যবহৃত হতো।
তিনি বোতলটিকে ভালোভাবে পরিস্কার করে এর মধ্যে কিছু কমপোস্ট নিলেন এবং একটি তারের মাধ্যে বীজ বপন করলেন। তারপর এর মধ্যে কিছু পানি দিলেন। একযুগ পর তিনি আরেকবার পানি সরবরাহ করেন। সেই থেকে এটি চিরস্থায়ীভাবে আবদ্ধ হয়ে যায়।
#বিজ্ঞানপত্রিকা হতে নেওয়া।