মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের ১ কোটি ৩০ লাখ মায়েদের কাছে উপবৃত্তির টাকা পৌঁছে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (০১ মার্চ) সকালে গণবভন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে উপবৃত্তি কার্যক্রম উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এখন আর সন্তানের উপবৃত্তির টাকা পেতে মায়েদের কষ্ট করতে হবে না।
এটিকে ডিজিটাল বাংলাদেশের আরেকটি সুফল হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ বাস্তব। গ্রামের মানুষও ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা পাচ্ছে।
সারা বিশ্বে এটা প্রথম কোনো উদ্যোগ বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে উপবৃত্তির টাকা বিতরণ প্রকল্পের নাম ‘মায়ের হাসি’। এ সময় রূপালী ব্যাংকের শিওর ক্যাশ ও টেলিটকের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রকল্প বাস্তবায়নে টেলিটক বিনামূল্যে ২০ লাখ সিম, মাসে ২০ টাকার ফ্রি টকটাইম দেওয়ার চুক্তি করেছে বলে জানান তিনি।শিক্ষার্থীদের মন দিয়ে পড়াশোনা করার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করবে, নিজের পায়ে দাঁড়াবে। এরাইতো আমাদের আগামী দিনের ভবিষ্যত।
ছোটবেলা থেকেই ছেলেমেয়েদের দেশপ্রেম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তোলারও আহ্বান জানিয়ে অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজের ছেলেমেয়েরা যেন মন দিয়ে পড়াশোনা করে। পাশাপাশি খেয়াল রাখবেন কেউ যেন বিপথে না যায়। ছেলেমেয়েরা যেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে ওঠে।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী জানান, মোবাইল ব্যাকিংয়ের মাধ্যমে ১৬০০ কোটি টাকা উপবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। ১ কোটি ৩০ লাখ মা এ টাকা পাবেন। প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মায়ের অ্যাকাউন্টে এ টাকা সরাসরি পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মায়ের অ্যাকাউন্টে শিক্ষা উপবৃত্তির টাকা প্রদান করে সরকার। মোবাইল ব্যাকিংয়ের মাধ্যমে উপবৃত্তি টাকা প্রদানের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে রূপালী ব্যাংকের সিওর ক্যাশ। এ সার্ভিসের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মায়েরা টাকা উত্তোলন করতে পারবেন। এ কার্যক্রমে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছে টেলিটক। এসএমএসের মাধ্যমে উপবৃত্তির তথ্য জানতে পারবেন মায়েরা।
প্রধানমন্ত্রী গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া, রংপুরের পীরগঞ্জ, দিনাজপুরের পাবর্তীপুর উপজেলার উপকারভোগী শিক্ষার্থীর মা, শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেন।
পীরগঞ্জের মুকিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মা শাহনাজ পারভীন বলেন, আগে উপবৃত্তি আনতে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। ঐদিন সংসারের আর কোনো কাজ করা সম্ভব হতো না।
গণভবনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, তৌফিক-ই-ইলাহী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ফারুক খান প্রমুখ।
সূত্র : বাংলানিউজ