হেফাজতের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান এবং হুমকিদাতাদের গ্রেফতারের দাবী

সিরডাপ মিলনায়তন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি

হেফাজতে ইসলাম প্রকাশ্যে মানুষকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে, দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে উল্লেখ করে হেফাজত সংগঠনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন ‘সুলতানা কামালসহ প্রগতিশীল নাগরিকদের হত্যা-হামলা ও হুমকি’র বিরুদ্ধে আয়োজিত নাগরিক সমাজের প্রতিবাদ সভায় বক্তারা।

ঘাতক দালাল নিমূল কমিটি
ঘাতক দালাল নিমূল কমিটির সভাপতি, লেখক-সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির। ছবি : অনলাইন

৮ জুন ২০১৭, বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এই প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামালকে যারা হত্যার হুমকি দিচ্ছে তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন প্রতিবাদ সভার বক্তারা। তাদের গ্রেপ্তার না করলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলার কথা বলেছেন তারা।

অনুষ্ঠানে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, “হেফাজত দেশবিরোধী এজেন্ডা নিয়ে মাঠে নেমেছে। তারা ১৩ দফা ঘোষণার পর থেকে দেশের বিভিন্ন মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর শুরু করেছে। তারা ২০১৩ সালে যে তাণ্ডব করেছে, তার বিচার এখনও শুরু হয়নি। এছাড়া প্রকাশ্যে তারা হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এসব হুমকিদাতাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।”

সভায় বিজ্ঞান লেখক এবং মানবাধিকারকর্মী অজয় রায় বলেন, “হেফাজতের কোনও বিজ্ঞানলদ্ধ জ্ঞান নেই। তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সিপিবি-বাসদসহ সব বাম সংগঠনকে একত্রে রাজপথে নামতে হবে।”

অজয় রায় বলেন, কওমি মাদ্রাসার সনদের স্বীকৃতি দেয়া প্রধানমন্ত্রীর একটি ভুল সিদ্ধান্ত, এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর তারা আস্কারা পেয়েছে বলেও মন্তব্য করেন অজয় রায়।

সভায় বক্তারা কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিস সনদের স্বীকৃতি বাতিলের দাবি করা হয়।

বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক আবুল বারকাত বলেন, “আমরা অন্ধকার যুগে প্রবেশ করেছি। সরকার ২০১৩ সালেও বলেছিল হেফাজত মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী। অথচ আজ তাদের সঙ্গেই হেফাজতের সখ্যতা।”

দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে নাগরিক সমাজের ব্যানারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা আরো বলেন, সরকার হেফাজতে ইসলামকে আশকারা দিয়ে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে শক্তিশালী করছে। এই পরিস্থিতিতে প্রগতিশীল শক্তি ঐক্যবদ্ধ হতে না পারলে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে।

আলোচকদের অভিযোগ- প্রগতিশীল সমাজ ও হেফাজত ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্য দেশকে গৃহযুদ্ধে ঠেলে দেয়ার শামিল। কওমী মাদ্রাসার স্বীকৃতি দেয়া সরকারের সবচেয়ে বড় ভুল বলে মন্তব্য করেন তারা।

প্রগতিশীলদের ঐক্যের অভাবেই সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান ঘটছে বলে মনে করেন বক্তারা। এছাড়া, সুপ্রিম কোর্টে ভাস্কর্য সরানো ইস্যুতে ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি লিটন নন্দীসহ অন্যদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয় এই প্রতিবাদ সভায়।


সূত্র: অনলাইন