কক্সবাজার: সদর উপজেলার জালালাবাদ জলদাস পাড়ায় আওয়ামী লীগ নেতার নেতৃত্বে রাতের আঁধারে এক হিন্দু পরিবারের ওপর হামলা ও তাদের বসতভিটা দখল করা হয়েছে। এ সময় সন্ত্রাসীদের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন ৪ জন। এছাড়া স্বর্ণালংকার ও টাকা লুটেরও অভিযোগ উঠেছে।
গত ৯মার্চ ২০১৬ তারিখে হিন্দুদের পক্ষ হতে জেলা জজ আদালতে অভিযুক্ত সাইফুল মেম্বারের বিরুদ্ধ একটি মামলা করা হয়। থানায় গ্রেফতারের নোটিস আসলেও কোন ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না পুলিশ। প্রতিদিন পুলিশের সামনে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে সন্ত্রাসীরা।
অভিযোগে জানা গেছে, দীর্ঘ ৭০/৮০ বছর ধরে নিজ দখলীয় জমিতে বসবাস করে আসছিলেন মৃত সূর্য কুমার জলদাসের ছেলে সুদর্শন জলদাস। আহত সুদর্শন জলদাস অভিযোগ করে বলেন, ইসলামাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম মেম্বারের নেতৃত্বে প্রভাবশালী চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে তাদের ভোগদখলীয় বসতভিটা দখলে নিতে উঠেপড়ে লাগে। দখল ছেড়ে দিতে তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দেয়।
৭ জানুয়ারি রাতে সাইফুলের নেতৃত্বে ২০/৩০ জনের সন্ত্রাসী দল জোরপূর্বক সুদর্শন জলদাসের বাড়িতে হামলা করে তাদের বসতভিটা দখলে নেয়। তাদের রাতের আঁধারে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এতে বাধা দিতে গিয়ে দখলদারদের হামলায় সুদর্শন জলদাস, তার স্ত্রী অঞ্জলি দাস, ছেলে সোহেল দাস ও ভাইয়ের বউ সাগতা আহত হন। আহতদের জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঈদগাহ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই মিনহাজ জানান, এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন সুদর্শন জলদাস।
ঘটনাটির একদিন পর এক পর্যায়ে বৃহত্তর ঈদগাহে হিন্দুরা কালী বাড়ি মন্দিরের জড়ো হয়। সবাই সিদ্ধান্ত নেন পরের দিন মানববন্ধন করে জেলাপ্রসাশকের নিকট স্বারকলিপি প্রদান করা হবে। এমন সময় কক্সবাজার সদর আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি আবু তালেব বিষয়টি আমলে নেন এবং তিনি বৃহত্তর ঈদগাহ কালী বাড়ি কমিটির সভাপতি উত্তম রায় পুলককে ফোন করে এ বিচারটি তিনি করার সিদ্ধান্ত দেন। বিচারে দিন আজ না কাল, কাল না পরশু এভাবে চলতে থাকে।
অবশেষে ঘটনার ১০দিন পর বিচারের দিন ধার্য করা হয় ১৭ জানুযারি ২০১৬ইং তারিখে বিকাল ৩টায়। ঐ দিন সকালে এমপি (সংসদ সদস্য) সায়েমুন সরওয়ার কমল দেখা করলে তিনিও উপযুক্ত বিচার করার আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘আমি আবু তালেবকে বলে দেব।’
বিচারের দিন আবার বলেন দুই তিন দিন পর আরেকটি বিচারের দিন দেওয়া হবে। ঘটনা ২মাস পার হলেও এখনো বিচারের দিন হল না। গত ৬ মার্চ হিন্দুদের বিরুদ্ধে ১৪৪ ধারা জারি করে এবং ঘটনার পর থেকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
ঘটনার ১ম আসামি আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম মেম্বার হিন্দুদের বলেন, “তোমরা বাংলাদেশে কয় জন হিন্দু আছ? ধানের খড় দিয়ে পোড়া দিলেও খড় বেচে যাবে।” মাস্তান দিয়ে আরো বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিচ্ছেন তিনি। হিন্দুরা এখনও হুমকির মুখে আছে।
ঘটনার পর দিন সদর মডেল থানায় মামলা দিলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। অবশেষে গত ৯মার্চ ২০১৬ তারিখে হিন্দুদের পক্ষ হতে জেলা জজ আদালতে সাইফুল মেম্বারের বিরুদ্ধ একটি মামলা করা হয়। থানায় গ্রেফতারের নোটিস এলেও কোন ধরনের ব্যবস্হা এখন পর্যন্ত গ্রহণ করেনি পুলিশ।