তিউনিসিয়ায় যে আইনে নারীদের অমুসলিম পুরুষকে বিয়ে করা নিষিদ্ধ, সেই আইনটি বাতিল করা হয়েছে। নতুন আইনে তিউনিসীয় নারীরা অমুসলিম পুরুষদের বিয়ে করতে পারবেন। ‘স্বামী হিসেবে পছন্দের স্বাধীনতা’ পাওয়ার জন্য নারীদের স্বাগত জানিয়ে তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট বেজি সাইদ এসেবসির এক মুখপাত্র এ ঘোষণা দিয়েছে। আজ শুক্রবার বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
তিউনিসিয়ায় এখনো পর্যন্ত অমুসলিম কোনো পুরুষ দেশটির কোনো মুসলিম নারীকে বিয়ে করতে চাইলে তাকে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করতে হয় এবং ধর্মান্তরিত হওয়ার সনদ দাখিল করতে হয়।
তিউনিসিয়ার ৯৯ শতাংশ মানুষ মুসলিম। আরব দেশগুলোর মধ্যে নারী স্বাধীনতার দিক থেকে তিউনিসিয়াকে সবচেয়ে প্রগতিশীল বলে বিবেচনা করা হয়ে থাকে।
প্রেসিডেন্ট এসেবসি ১৯৭৩ সালে প্রণীত বিয়ের সীমাবদ্ধতা আইন বাতিল করার উদ্যোগ নেন। এরপর নতুন আইনটি প্রণয়ন করা হলো।
গত মাসে জাতীয় নারী দিবস উদ্যাপনের সময় ভাষণে এসেবসি বলেন, বিয়ের আইনটি ‘স্বামী-স্ত্রী বেছে নেওয়ার স্বাধীনতায়’ বাধা ছিল। দেশটির মানবাধিকার সংগঠনগুলোও আইনটি বাতিল করার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল।
নতুন আইনটি শিগগিরই বাস্তবায়ন করা হবে এবং নারী-পুরুষ স্বাধীনভাবে সরকারি কার্যালয়ে গিয়ে বিয়ে নিবন্ধন করতে পারবেন।
নারী স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিয়েতে নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার বিষয়টি যুগান্তকারী বলে মনে করছেন দেশটির অনেকে। নতুন এই আইনের ফলে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে রাষ্ট্রীয় ধর্মের বাইরের কোনো ব্যক্তিকে বিয়ের ক্ষেত্রে আইনি বাধা দূর করা প্রথম দেশে পরিণত হলো তিউনিসিয়া। এত দিন দেশটির পুরুষেরা ধর্মীয় কোনো নথিপত্র ছাড়াই অমুসলিম নারীকে বিয়ে করতে পারতেন।
দেশটিতে মুসলিম বাদে ইহুদি ও অল্পসংখ্যক খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের লোক রয়েছে। এ আইনের ফলে তিউনিসিয়ার নারীদের স্বাধীনতায় সাংস্কৃতিক ও ঐতিহ্যগত যে বাধা রয়েছে, তা দূর না হলেও আইনি দিক থেকে নারীরা বড় ধরনের স্বাধীনতা পাবে।