লন্ডন ব্রিজ হামলার ধাক্কা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি বিশ্ব। তবু শোককে শক্তিতে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছে সবাই। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিপক্ষে লড়াইয়ে যে যার অবস্থান থেকে লড়াইয়ের প্রতিজ্ঞা করছেন। অস্ট্রেলিয়া ফুটবল দলও সে চেষ্টা করেছে গতকাল বৃহস্পতিবার। লন্ডন হামলায় নিহত দুই অস্ট্রেলিয়ানের জন্য এক মিনিট নীরবতা পালন করার প্রস্তাব দিয়েছিল তারা। কিন্তু এ প্রস্তাবে সাড়া দিতে অস্বীকার করেছে সৌদি আরব!
আজ অ্যাডিলেডে বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া ও সৌদি আরব। ৩-২ ব্যবধানের জয়ে বিশ্বকাপ স্বপ্ন আরও উজ্জ্বল হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ম্যাচের ফলাফল ভুলে সৌদি আরবের এমন সিদ্ধান্ত নিয়েই ব্যস্ত। এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় দেশটির সমালোচনায় মেতেছেন সবাই।
৩ জুন লন্ডনের আইএসের হামলায় দুজন অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক নিহত হন। তাদের মধ্যে কার্স্টি বডেন নিজেকে ঝুঁকিতে ফেলে অন্যদের বাঁচাতে গিয়ে জীবন হারিয়েছেন। তাই শোকেও গর্বিত অস্ট্রেলিয়ানরা নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে ম্যাচের আগে এক মিনিট নীরবতা পালনের সিদ্ধান্ত নেন।
বিশ্ব ফুটবলে এমন দৃশ্য নিয়মিত দেখা যায়। তাই এতে প্রতিপক্ষের রাজি হয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ফক্স স্পোর্টসের সঞ্চালক অ্যাডাম পিকক জানিয়েছেন, এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনের (এএফসি) অনুমতি থাকা সত্ত্বেও সৌদি আরব এতে রাজি হয়নি। এ নিয়ে ফুটবল ফেডারেশন অস্ট্রেলিয়া (এএফএ) অনেক দর-কষাকষির চেষ্টা করেও সফল হয়নি।
ফলে অস্ট্রেলিয়া দল নিজেরাই নির্ধারিত মুহূর্তে নীরবতা পালন করে। ওই সময়ে সৌদি খেলোয়াড়েরা ওয়ার্ম আপ করা চালিয়ে যান। শুধু একজন খেলোয়াড়, সালমান-আল-ফারাজ অস্ট্রেলিয়ার দলের উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে সম্মান জানানোর ভদ্রতা দেখিয়েছেন।
সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার উত্তরে অনেকেই জানিয়েছেন, আরব সমাজে নীরবতা পালন করে সম্মান জানানোর রীতি নেই। তাই এভাবে সমালোচনা করা ভুল হচ্ছে। কিন্তু সে যুক্তি ধোপে টেকেনি। কারণ, সঙ্গে সঙ্গে মানুষ প্রমাণ দেখিয়ে দেয় প্রয়াত সৌদি বাদশাহ আবদুল্লাহর মৃত্যুর পর বিভিন্ন খেলায় সৌদি আরবের নীরবতা পালনের ঘটনা। এমনকি গত ডিসেম্বরে বার্সেলোনার সঙ্গে এক সৌদি ক্লাব প্রীতি ম্যাচ খেলতে নেমেও নীরবতা পালন করেছিল। সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান।
আমাদের সূত্র : প্রথম আলো