মতবিনিময় সভাটি আয়োজন করেছে REcNU (Rehabilitation for Extraordinary Children and Neurodiverse Understanding)। একটি অটিজম পুনর্বাসন কেন্দ্র এবং মানসিক হাসপাতাল নির্মাণের অভিপ্রায় থেকে এ আয়োজন। ইতোমধ্যে রেনু এ জন্য খুলনায় একটি জায়গা নিয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে রেনু বাসায় গিয়ে অটিস্টিক শিশু-কিশোর এবং মানসিক সমস্যায় ভুগছে এমন মানুষদের খোঁজখবর নিয়ে আসছে। সাধ্যমতো তাদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করছে। তারই অংশ হিসেবে রেনু ধারাবাহিকভাবে মত বিনিময় সভার আয়োজন করে চলেছে।
অনুষ্ঠানে অনেকের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হিচাক স্কুলের ভাইস প্রিন্সিপাল জোহরা সুলতানা, সিডস্ স্কুলের পরিচালক এবং থেরাপিস্ট শাহ তারিকুল ইসলাম, মাহবুবা খাতুন, শিক্ষক পারভীন আক্তার, সমাজকর্মী মলয় মুখার্জি, বিশেষ শিশু মানহা (মা নুপুর), বিশেষ শিশু আইমান (মা অশ্রুমনী), বিশেষ শিশু ফারহানা (মা জিনাত সুলতানা), বিশেষ শিশু ফাহমিদা (মা মনিরা ইয়াসমিন), বিশেষ শিশু ঈশপ (মা নুরুন নাহার), বিশেষ শিশু মেসবা (মা সোনিয়া), বিশেষ শিশু আমান (মা খালেদা আক্তার মীম), বিশেষ শিশু রোজা (মা সেলিনা), বিশেষ শিশু সামিউল (মা সুমাইয়া), বিশেষ শিশু আইয়াদ (নানা ইছা), বিশেষ শিশু আসলাম (বাবা আরিফ)। অনুষ্ঠান সমন্বয় করেছেন দিব্যেন্দু দ্বীপ, সহযোগিতা করেছেন দিপ বিন্দু সরকার। খুলনার জিরোপয়েন্টে অবস্থিত রূপকথা রেস্টুরেন্টে এই মত বিনিময় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনাসভা এবং মত বিনিময় সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অভিভাবকেরা সবাই ছিলেন অত্যন্ত স্বতঃস্ফূর্ত। শিশুরা ছিলো খুশি এবং প্রাণবন্ত। রেনুর নির্বাহী পরিচালক দিব্যেন্দু দ্বীপ অটিস্টিক শিশু-কিশোরদের জন্য একটি আবাসকি পুনর্বাসন কেন্দ্র এবং একটি মানসিক হাসপাতাল নির্মাণ করার ঘোষণা দিয়ে সভা শুরু করেন। এরপর ‘হিচাক’ স্কুলের সহকারি অধ্যক্ষা জোহরা সুলতানা এ ধরনের একটি পুনর্বাসন কেন্দ্রের প্রয়োজনিয়তা এবং এ ধরনের সদস্য রয়েছে এমন পরিবারগুলোর প্রতিবন্ধকতা এবং সামাজিক সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
বক্তব্য রাখেন ‘সিডস্’ থেরাপি সেন্টারের পরিচালক সাহা তারিকুল ইসলাম। তিনি এ ধরনের শিশুদের বিভিন্ন ধরনের থেরাপি প্রয়োজন হয় জানিয়ে বলেন, থেরাপি নিতে গেলে যে ধরনের খরচ অভিভাবকদের হয়, বেশিরভাগ অভিভাবকের পক্ষে সেটি সম্ভব নয়। খুলনায় যথেষ্ট পরিমান থেরাপি সেন্টার নেই জানিয়ে তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন শ্রেণি এবং পেশার সক্ষক ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে, যাতে স্বল্প খরচে এ ধরনের শিশু-কিশোরদের সেবা দেওয়া যায়। পাশাপাশি ভাবতে হবে— বড় হলে বা পিতা-মাতার অনুপস্থিতিতে এদের পুনর্বাসন কীভাবে হবে। অভিভাবকদের মধ্যে থেকে মনিরা ইয়াসমিন, সোনিয়া এবং জিনাত সুলতানা তাদের সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন। এ ধরনের একটি উদ্যোগ নেওয়ায় সবাই রেনুর প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং আস্থা জ্ঞাপন করেন।
ব্যক্তিগত সংগ্রাম এবং পারিবারিক আর্থিক সমস্যার পাশাপাশি অভিভাবকেরা ভুগছেন মানসম্মত স্কুল, থেরাপি সেন্টার, ট্রেনিং সেন্টার, দক্ষ ট্রেইনার এবং চিকিৎসকের অভাবে। এ সমস্যার সমাধানে অটিজম বিষয়ে একটি সরকারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট খুলনায় থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষ শিশুর অভিভাবকেরা। সর্বশেষে অভিভাবক এবং শুভানুধ্যায়ীরা এ ধরনের একটি মানবিক উদ্যোগ নেওয়ার জন্য রেনুর জন্য শুভকামনা ব্যক্ত করেন।