ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয়ের (ঢাবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. অজয় রায়ের স্মরণে শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অজয় রায় (১ মার্চ ১৯৩৫- ৯ ডিসেম্বর ২০১৯) বাংলাদেশি পদার্থবিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞান লেখক এবং মানবাধিকার কর্মী ছিলেন।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর ২০১৯) বিকালে শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চ এই শোকসভার আয়োজন করে।
শোকসভায় উদীচীর সাবেক সভাপতি হাসান ইমাম বলেন, অজয় রায়ে মতো ব্যক্তিদের মৃত্যুতে আমাদের দেশে যে শূন্যতা তৈরী হচ্ছে, তা সহজে পূরণ হবে না। ভয়, ভীতি, প্রলোভনকে দূরে ঠেলে যদি তরুণরা এগিয়ে আসে, তবেই এই শূন্যতা পূরণ করা সম্ভব। অন্যথায় এই শূন্যতা আর পূরণ হবে না।
বর্তমানে দেশ গভীর অন্ধকারের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, বর্তমানে দেশ এক কালো অন্ধকারের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। অবশ্য পুরো বিশ্বেরই একই অবস্থা। মুক্তিযুদ্ধের সময় আগরতলায় আশ্রয় নিয়েছিল অনেকে কিন্তু এখন আবার সাম্প্রদায়িক আঘাত আসলে পালানোরও সুযোগ থাকবে না। কারণ ভারতেও সাম্পদ্রায়িক সরকার ক্ষমতায়। তাই আমাদেরকে আমাদের দেশেই লড়াই করে বেঁচে থাকতে হবে।
বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মানবেন্দ্র দেব বলেন, অজয় রায় ধীর, স্থির এবং শক্ত মানসিকতার সংমিশ্রণের একজন মানুষ ছিলেন। একাধারে মুক্তিযোদ্ধা, বিজ্ঞানী ও সংগ্রামী ছিলেন তিনি। বাংলাদেশ নামক দেশটাকে মনের মধ্যে ধারণ করতেন। তার প্রতি সম্মান জানাতে হলে এদেশকে একটি অসাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ ও সমাজতান্ত্রিক দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেহেদী হাসান নোবেল বলেন, তিনি একজন আমৃত্যু মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকেই অস্ত্র ছেড়ে দিয়ে তাদের দায়িত্বের কথা ভুলে গিয়েছেন। কিন্তু অজয় রায় তাদের মতো ছিলেন না। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখার জন্য মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত কাজ করে গেছেন।
প্রকাশক ও লেখক রবিন আহসান বলেন, পুরো দেশে লেখক, ব্লগার প্রকাশকরা যখন ভয়ালো পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলো তখন আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন অজয় রায়। বর্তমানে অনেকেই প্রগতিশীলতার কথা বলেন যারা তখন চুপ ছিলেন।
শোকসভার শুরুতে অজয় রায়ের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন ও এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী আকরামুল হকের সভাপতিত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ড. কাবেরী গায়েন, মঞ্চের আহবায়ক এ্যড. জীবনানন্দ জয়ন্তসহ আরো অনেকে।