৩ লক্ষ ২২ হাজার ৭৬৬ জন সহকর্মী থাকতে একজন শিক্ষক বিনা চিকিৎসায় মারা যাবেন কেন?

আলোকদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়

মোট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৩ হাজার ৬০১ টি, শিক্ষক সংখ্যা ৩ লক্ষ ২২ হাজার ৭৬৬ জন, ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা ২ কোটি ১৯ লক্ষ ৩২ হাজার ৬৩৮ জন। দেশে এককভাবে এর চেয়ে বড় কোনো প্রতিষ্ঠান নেই।


দেখতে দেখতে কেটে গেছে জীবনের ৫০টি বছর ঘুণাক্ষরেও এতদিন টের পাননি যে, শরীরে বাসা বেধেছে কোনো মারণ রোগ যখন জানতে পারলেন ততদিনে তার দুটো কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে এক মেয়ে এবং বেকার স্বামী নিয়ে সংসার তার আছেন নির্ভরশীল শশুর-শাশুড়ি শশুর-শাশুড়ি এবং স্বামীও বিভিন্নভাবে অসুস্থ মেয়েটি এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে সারাজীবন অভাব অনাটনে কাটিয়ে কেবল সংসারে একটু স্বচ্ছলতা ফিরেছিল যখন থেকে সকল চাকরিজীবীদের বেতন বেড়ে দিগুণ হলো সাহস করে চাকরি থেকে লোন নিয়ে ছোট্ট একটি বাড়ি করলেন, ঘরে কিছু জিনিসপত্রও কিনলেন, মেয়েকে উচ্চশিক্ষিত করবার স্বপ্ন দেখতে শুরু করলেন, ঠিক তখনই দুঃস্বপ্ন হয়ে এল এ খবরটি এতদিন চিকিৎসা করিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে পরিবারটি শুধু ঐ ঘরখানিই আছে, আর চাকরিটা প্রতি মাসের বেতনের টাকা দিয়ে চিকিৎসার খরচ কুলোয় না সংসারের খাওয়াপরাও আর চলে না। এখন তো শয্যাশায়ী, চাকরিটাও আর করতে পারছেন না কী করবেন এখন? ধারদেনা করে করে এখন চিকিৎসার খরচ চালাতে হচ্ছে কুলোচ্ছে না কিছুতেই করুণা রাণী দাসের স্বামী দিশেহারা হয়ে ছুটছেন বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে যে, কিছু সরকারি সহযোগিতা মেলে কিনা মেলে না, কিছু যা মেলে তাতে যাতায়াত খরচই হয় না

আমাদের সাংবাদিকদের বিষয়টি জানালে আমরা বললাম, দিদি, আপনাদের শক্তির বিষয়টা আপনারা কী জানেন? সারা বাংলাদেশে ৩ লক্ষ ২২ হাজার ৭৬৬ জন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আছেন আপনার এর মধ্যে এক লক্ষ বা পঞ্চাশ হাজার বা বিশ হাজার বা দশ হাজার শিক্ষকও যদি আপনারা পরস্পরের সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন তাহলেই যথেষ্ট হয়ে যায় দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরই আমরা সবচেয়ে শক্তিশালী মনে করি শিক্ষার শক্তি তো আপনাদের আছেই, একইসাথে রয়েছে সংখ্যার শক্তি, এই শক্তি কাজে লাগিয়ে যেকোনো শুভ কাজ করা সম্ভব আপনারা যদি মনে করেন যে, আপনাদের কোনো সহকর্মীকে বিনা চিকিৎসায় মরতে দেবেন না, সেটি সম্ভব, খুব সহজেই সম্ভবসেজন্য মাথাপিছু হয়ত আপনাদের সর্বোচ্চ ৫০০টাকা ব্যয় করতে হবে বছরে একজন রোগীর জন্য মাথাপিছু একশো টাকা দিলেই যথেষ্ট, এবং এরকম বিষয় বছরে পাঁচটির বেশি আসবে বলে মনে হয় না, আবার সবাই সবার পাশে যে সবসময় দাঁড়াতে হচ্ছে সেটিও তো নয় করুণা রাণী দাসের হয়ে আমরা আপনাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি সাধ্যমতো আপনারা এই শিক্ষকের পাশে দাঁড়ান

যদিও বাস্তবতা আমরা জানি, এ ধরনের লেখায় অনেকে একটি লাইক হয়ত দিয়ে যাবেন, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে পাশে দাড়াতে সমর্থ হবেন না কেউই! এভাবে ভাববেন না যে, অনেকেই এগিয়ে আসবেনে, বাস্তবে সেটি ঘটে না, হয়ত আপনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি ফেসবুকে একটি লাইক দিয়ে দায় সারেননি, আদতেই সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন। দিদি পথ চেয়ে আছেন, আমরা বাস্তবতার ভয়ে দিদির মুখের দিকে তাকাতে পারছি না! তবু আশা রাখি, নিশ্চয় এর পরের লেখায় আমরা হাজার খানেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম লিখে হাত ব্যথা করব আনন্দ নিয়ে যারা দিদির জন্য সত্যিই সাহায্যের হাত বাড়াবেন।

আপনাদের হয়ে আমি একটা দাবী জানিয়ে রাখি, যে দাবীটা আপনারাও জোরেসোরে জানাতে পারেনপ্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের চিকিৎসার জন্য একটি হাসপাতাল থাকা দরকার, এবং এটি সম্ভব, আপনারা উদ্যোগ নিলে খুবই সম্ভব


করুণা রাণী দাসকে সাহায্য পাঠাবার ঠিকানা:

A/C Name: করুণা রাণী দাস

A/C NO: ৩৪০৬১৪৪৫

সোনালী ব্যাংক লিঃ, কচুয়া শাখা, বাগেরহাট।  

karuna rani das