দেশে যখন চিকিৎসার সব চেষ্টা ব্যর্থ হয় তখন আমাদের পাড়ি জমাতে হয় বিদেশে। আর চিকিৎসার জন্য আমাদের দেশের বিশাল একটা অংশ আমাদের প্রতিবেশি দেশ ভারতের ওপর নির্ভর করে। আজ থাকছে ভারতের ভেলোরের চিকিৎসা সেবা নিয়ে কিছু প্রয়জনীয় তথ্য।
ভেলোর (Vellore) ইন্ডিয়ার তামিল নাড়ুর (Tamil Nadu) একটি জেলা শহর যেখানে বাংলাদেশিরা বেশিরভাগ সময়ই যায় উন্নত চিকিৎসার জন্য। ভেলোর শহরে CMC (Christian Medical College) ও শ্রী নারায়ণী (Sri Narayani ) Hospital অবস্থিত হওয়ায় এখানে উন্নত চিকিৎসার জন্য মানুষের আনাগোনা বেশী।
ভারতে যেতে যা যা প্রয়োজন
যেহেতু ভেলোর ভারতে অবস্থিত তাই আপনাকে আগে ভারত ঢোকার ব্যবস্থা করতে হবে। বাংলাদেশ থেকে বাইরের যেকোনো দেশে যেতে হলে আগে আপনার প্রয়োজন পাসপোর্ট। পাসপোর্ট হলো ছাড়পত্র, যা আপনার বাইরের দেশে যাবার অনুমতি বহন করে। লাগবে ভারতের ভিসা, যা আপনারা ইন্ডিয়ান হাইকমিশন থেকে পাবেন। ভিসা হলো যে দেশে যাবেন সেই দেশে প্রবেশ এবং অবস্থানের অনুমুতিপত্র।
আপনার কয়েক কপি ছবি, পাসপোর্টের কয়েকটি ফটোকপি ও কলম সাথে রাখুন। কলকাতায় এসে সময় পেলে আপনার সর্বশেষ ভিসার কয়েকটি ফটোকপি (ভারতে জেরক্স/xerox নামে পরিচিত) করে রাখুন, কারণ সিম কিনতে কাজে লাগবে।
আপনি সার্ভস করলে কর্মরত প্রতিষ্ঠান থেকে ছুটি নিন এবং এর লিখিত ডকুমেন্ট কয়েকটি ফটোকপি সহ সাথে রাখুন । বর্ডারে লাগতে পারে। বাংলাদেশ বর্ডার পার হবার সময় বাংলাদেশ সরকারকে ট্রাভেল ট্যাক্স দিতে হয়। আগে ছিল ৩০০ টাকা, এখন তা ৫০০ টাকা করা হয়েছে।
কোন পথে যাবেন?
আকাশ পথ কিংবা স্থল পথে যাওয়া যায়। আকাশ পথে যেতে চাইলে আগে থেকেই ভিসায় উল্লেখ থাকবে হবে। প্লেনে সরাসরি ভেলোর যাওয়া যায় না, ঢাকা থেকে চেন্নাই (Chennai) এ প্লেনে যাওয়া লাগবে। তারপর বাস কিংবা ট্রেনে ভেলোর। ঢাকা থেকে চেন্নাই (Chennai) এ সপ্তাহে চারটি প্লেন যাওয়া আসা করে এবং সময় লাগে ২ঘন্টা ৩৫ মিনিটের মতো। প্লেনের টিকেট আগে থেকে কেটে রাখলে খরচ কিছুটা কম পড়ে।
স্থল পথে যেতে চাইলে দেখুন আপনার পাসপোর্টে ভারতে ঢোকার জন্য কোন বর্ডারের উল্লেখ আছে। যদি আপনি হিলি বর্ডার দিয়ে ইন্ডিয়া প্রবেশ করেন তবে আপনি মালদা (Malda) থেকে কিংবা কলকাতা (Kolkata) থেকে ট্রেন ধরতে পারেন। কলকাতা থেকে ভেলরের দুরত্ব প্রায় ১৭৫০ কিলোমিটার ।
সময় লাগে ৩০-৩৮ ঘন্টা। কলকাতা বা মালদা থেকে সরাসরি কিছু ট্রেন আছে। আবার অনেক সময় একটু ভেঙ্গে ভেঙ্গেও আসতে হতে পারে যেমন: মালদা থেকে কলকাতা, কলকাতা থেকে চেন্নাই, চেন্নাই থেকে ভেলোর।
ইন্ডিয়াতে দুরের জার্নিগুলো ট্রেনেই ভালো হয়। কলকাতায় কয়েকটি বড় বড় ট্রেন স্টেশন আছে যেখান থেকে ছেড়ে যায় বড় বড় শহরে। হাওড়া (Howrah) স্টেশন কিংবা সাতরাগাছী (Santragachi) স্টেশন থেকে ছেড়ে আসে চেন্নাই কিংবা ভেলোরের উদ্দেশ্যে।
ভারতে দুরের ট্রেনের টিকেট পাওয়াটা অনেক সময় কষ্টের হয়ে যায। কারণ, ট্রেনের যাত্রি অনেক অনেক বেশি। এখানে আগে ছিল ২ মাস আগে থেকে ট্রেনের টিকেট কাটার ব্যবস্থা এখন সেটা হয়েছে ৪ মাস। তবে ‘ততকাল’ নামে আর একটি ব্যবস্থা আছে যা ট্রেন ছাড়ার আগের দিন টিকেট ছাড়ে। তাই অনেক সময় কলকাতায় থাকতে হতে পারে।
কলকাতায় থাকবেন কোথায়?
টিকেট আগে থেকে কাটা না থাকলে কিংবা পেতে সময় লাগলে আপনাকে কলকাতাতে দুই এক রাত থাকতে হতে পারে। কলকাতার সব হোটেল আপনাকে রাখতে পারবে না। তবে নিউ মার্কেটের আশে পাশের হোটেলগুলোতে থাকতে পারেন । ঢাকার বাসগুলো যেখানে থামে সেখানে অর্থাৎ marquis street এ বেশ কিছু হোটেল আছে থাকবার মতো। সেখানে চেক আউট (হোটেল ছাড়ার সময়) টাইম দুপুর ১২টা । অর্থাৎ সেখানে দিন কাউন্ট হয় দুপুর ১২টা থেকে পরদিন দুপুর ১২টা। এবং হোটেল ভাড়া ৫০০, ৬০০, ৭০০ বিভিন্ন রকমের ।
টাকা/ডলার কোথায় ভাঙ্গাবেন?
টাকা বা ডলার আপনি অনেক জায়গাতেই চেঞ্জ করতে পারেন। তবে বর্ডারে টাকা বা ডলার চেঞ্জ রেট কম। অর্থাৎ বর্ডারে চেঞ্জ করলে আপনি পরিমাণে কম পেতে পারেন। প্রয়োজনে কিছু চেঞ্জ করে নিতে পারেন। সবচেয়ে ভালো হয় কলকাতায় চেঞ্জ করে নিলে। তাহলে চেহ্জ রেট বেশ ভালো পাওয়া যায়। যেখানে ঢাকার বাসগুলো থামে সেখানে অর্থাৎ marquis street এ বেশ কিছু মানি চেঞ্জার আছে। তবে কয়েক দোকানে খোঁজ নিয়ে যে ভালো রেট দিচ্ছে তার কাছ থেকে চেঞ্জ করে নিতে পারেন। অনেকেই মনে করতে পারেন যে ভেলোরে গিয়েই ভাঙ্গাবো ! সেক্ষেত্রে চেঞ্জ রেট কম পাবার সম্ভাবনা থাকে, কারণ, ভেলরে টাকা চেঞ্জ হয় অনেক কম। তাই রেটটাও কম।
বাড়ির সাথে যোগাযোগ রাখবেন কীভাবে?
বাড়ির সাথে যোগাযোগ রাখার মাধ্যমগুলো হতে পারে মোবাইল ফোন কিংবা ইন্টারনেট। মোবাইল বা ইন্টারনেটের জন্য আপনাকে একটি ইন্ডিয়ান সিম কিনতে হবে । বর্ডারে অনেক সময় অনেকেই সিম কেনেন। প্রায়ই দেখা যায় সিমগুলো কলকাতার মধ্যেই সীমবদ্ধ থাকে, এর বাইরে আর কাজ করে না। সিম বর্ডারে না কিনে কলকাতাতে কিনুন। এয়ারটেল (Airtel ) কিংবা ভোডাফোন ( Vodafone ) এর সিম কিনতে পারেন।
সিম কেনার সময় বলুন যে আপনি বাংলাদেশে কথা বলবেন এবং কলকাতার বাইরে যেতে হলে সেটাও বলুন। ইন্ডিয়া থেকে সাধারণত বাংলাদেশে কলরেট ১০–১২ রুপি (INR)। তবে এখানে সিমে প্রোমো রিচার্জ করে নেওয়া যায় বাংলাদেশের জন্য, যার মেয়াদ থাকে ৩০দিন। এটা করলে কলরেট চলে আসে ২ রুপি প্রতি মিনিট।
ইন্ডিয়াতে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে গেলে সিমে রোমিং চালু হয়ে যায়। এক্ষেত্রে আপনি কল রিসিভ করলেও একটা চার্জ কাটা হয় (প্রায় ০.৬০ পয়সা মতো) আপনি যদি ভেলোরে এসে সিম কেনেন তাহলে রোমিং চার্জ থাকবে না (তবে ভেলোরের বাইরে গেলে আবার এই সিমেও রোমিং চালু হবে)। কলকাতার সিম হলে থাকবে। ইন্টারনেটের কোনো রোমিং চার্জ নেই। যদি ভেলোরেই বেশি দিন থাকতে হয়, তো সেখানেই একটি সিম কিনে নিতে পারেন।
বাংলাদেশিরা বা যেকোনো ফরেনাররা ইন্ডিয়াতে যে সিম কেনে সেটার মেয়াদ থাকে ভিসা ভেলিড থাকা সাপেক্ষে। অর্থাৎ ভিসার মেয়াদ শেষ হলে সিমের মেয়াদও শেষ। লোকাল এড্রেস দিয়ে সিম নিতে পারলে, বা ভারতের কারো নামে কিনে ব্যবহার করতে পারলে সেই সিম এক্টিভ থাকে, কিন্তু অনেক সময় অনেকের ক্ষেত্রে সেটি সম্ভব হয় না।
ট্রেনের টিকেট কাটবেন কীভাবে?
ভারতে ট্রেনের টিকেট অনলাইনেও কাটা যায়। ইন্ডিয়ান রেইলওয়ের ওয়েবসাইটটি হল http://www.indianrail.gov.in/ তবে অনেকের ক্ষেত্রেই হয়তো সেটা কঠিন হবে।
এজেন্টের মাধ্যমে কিংবা আপনি নিজে স্টেশনে গিয়ে টিকেট কাটতে পারেন । ইন্ডিয়াতে ততকাল নামে একটি টিকেটিং ব্যবস্থা আছে যা প্রতিটি স্টেশনে এমনকি অনলাইনেও আছে। আসলে এই ব্যবস্থাতে ট্রেন ছাড়ার ২৪ ঘন্টা আগে সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত চলে । এবং নির্ধারিত কিছু সিট যাত্রীদের জন্য দেওয়া হয়।
তবে ফরেনারদের জন্য আলাদা একটি সুবিধাও দিয়ে থাকে ইন্ডিয়ান রেইলওয়ে। অর্থাৎ আলাদা কিছু সিট রাখা হয় বিদেশীদের জন্য। এই টিকেট কলকাতায় ফেয়ারলি পেলেস এ দেওয়া হয়। পুরো ঠিকানা হল: Farely Place, Near 14, Strand Road, Kolkata.
এখানে আপনার পাসপোর্ট নিয়ে হাজির হন, আশা করা যায় টিকেট পেয়ে যাবেন। তবে সকাল সকাল এলে সেদিনের টিকেট পাবার সম্ভাবনা বেশি । সকাল সকাল বলতে ১০টার আগে এবং এখানেও ‘ততকালে’ টিকেট দেওয়া হয় । ততকালে টিকেটের দাম একটু বেশিই পড়ে। ক্যান্সার রোগীদের জন্য এবং তার এটেন্ডদের জন্য টিকেটে ছাড় আছে।
ইন্ডিয়ান রেলের সিটের কয়েক প্রকার ক্লাস আছে। প্রধান দুটি ভাগ হল— এসি ও নন এস। নন এসির মধ্যে আছে জেনারেল ( গাদাগাদি সিস্টেম ) এবং স্লিপার (শুয়ে বসে যাওয়া যায়। আর এসির মধ্যে আছে ৩ টায়ার এসি (উপর থেকে নিচে ৩ জন শোবার এবং পাশাপাশি ৩ জন বসার ব্যবস্থা আছে), ২টায়ার এসি (উপর থেকে নিচে ২ জন শোবার এবং পাশাপাশি ২ জন বসার ব্যবস্থা আছে)। এসি আসনগুলোতে একটি বালিশ, বালিশ কাভার, একটি কম্বল দেওয়া হয়, তবে নন এসিতে নিজেকেই সাথে নিতে হবে এসব যদি প্রয়োজন মনে করেন ।
ট্রেনের টিকেট করার সময় আপনার কাছে ট্রেনের নাম্বার জানতে চাওয়া হতে পারে। কোন রুটে কোন ট্রেন চলে, কবে কবে চলে এবং তাদের নাম্বার কী জানতে ভিজিট করুন http://www.indianrail.gov.in/between_Imp_Stations.html (এই নাম্বার টি সাধারনত ৫ ডিজিটের হয়ে থাকে) যেমনঃ 22818 হল MYS HOWRAH EXP ট্রেনের নাম্বার।
আপনার টিকেটের স্টাটাস জানার জন্য ইন্ডিয়ান রেইলওয়ের ওয়েব সাইটে http://www.indianrail.gov.in/pnr_Enq.html গিয়ে PNR Status চেক করুন। অনেক সময় দেখা যায় যে প্রথমে আপনার সিট নাও হতে পারে, তবে পরে আবার সিট হয়ে যায়। ওয়েটিং লিস্ট দুরে থাকলে অনেক সময় রিস্ক হয়ে যায় সিট কনর্ফাম হওয়ার।
এজেন্টের মাধ্যমেও টিকেট কাটতে পারবেন। এরা টিকেট প্রতি ২০০ থেকে ৭০০ রুপি পর্যন্ত সার্ভিস চার্জ নেবে। marquis street এ বেশ কিছু এজেন্ট পাবেন।
ট্রেন কোন প্লাটফর্মে দাড়াবে?
হাওড়া স্টেশনে ২৩টি প্লাটফর্ম আছে। এরকম অনেক স্টেসনই আছে যার প্লাটফর্ম সংখ্যা বেশ কয়েকটি। ইন্ডিয়াতে প্রতিটি ট্রেনের ইউনিক নাম্বার আছে। আপনার টিকেটেই লেখা থাকবে আপনার ট্রেনের নাম্বার। এবং প্রতিটি স্টেশনেই স্পিকারে এনাউনসড্ করা হয় কোন ট্রেন কোন প্লাটফর্মে দাড়াবে। আবার বড় বড় স্টেশনগুলোতে ডিসপ্লেবোর্ড আছে এবং সেখানেও দেখানো হয় কোন ট্রেন কোন প্লাটফর্মে দাড়াবে। ট্রেন ছাড়ার ৪০–৪৫ মিটিন আগে থেকে ডিসপ্লেবোর্ডে দেখায়।
ট্রেন ছাড়ার মিনিমাম ২০ মিনিট আগে প্লাটফর্মে যাবেন, কারণ ট্রেনের বগি অনেক বেশি। অনেকটা পথ হাটতে হতে পারে। তবে যাদের চলাচলে সমস্যা, স্টেশনে খোজ নিন, হুইল চেয়ার পাওয়া যেতে পারে। কিংবা অনেক সময় কুলিরও সাহায্য পাওয়া যেতে পারে, কারণ ওদের ঠেলাগাড়ি থাকে।
ট্রেনের ভেতর কী খাবেন?
ট্রেনের যাত্রাটা বেশ বড়ই। আপনি চাইলে আগে থেকেই খাবার নিয়ে ট্রেনে উঠতে পারেন, কিংবা ট্রেনের ভেতরেও খাবার কিনতে পারেন। ওয়েটাররা এসে অর্ডার নিয়ে যাবে আপনার কাছ থেকে, শুধু একটু খেয়াল রাখতে হবে কখন এলো তারা। আবার বড় বড় স্টেশনগুলোতে ট্রেন বেশ কিছুটা সময় দাড়ায়, সেক্ষেত্রে প্লাটফর্ম থেকেও খাবার নিতে পারেন।
শুকনো খাবার হিসেবে নিতে পারেন বিস্কিট, চিপস, কুড়কুড়ে আর ভারি খাবার হিসেবে ভেজ ননভেজ দুধরনের খাবারই পাবেন। ট্রেনের ভেতরের ভেজ খাবার হয় ভেজ কারি রাইস, ভেজ বিরিয়ানি, আর নন ভেজ হয় এগ বিরিয়ানি, কারি রাইস। দাম ৬০ রুপি থেকে ১০০ রুপির মধ্যে।
তবে একটা কথা মনে রাখা দরকার, বাইরের খাবারে বাড়ির খাবারের স্বাদ না খোঁজাই ভালো, তবে আপনার জন্য থাকছে যখন তখন চা এর ব্যবস্থা, শুধু কিনে খেতে হবে।
খাবারের কথা যখন এলোই তাহলে আরও একটি বিষয় আসে, তা হল ত্যাগ করা। এসি কামরাগুলোতে সু ব্যবস্থা আছে টয়লেটের, সাবান, পানি, মগ সবই পাবেন। তবে নন এসি কামরার ক্ষেত্রে সাবান এবং একটি ছোট মগ সাথে রাখা ভালো । সাথে রাখুন টিস্যুও।
ভেলোর যেতে হলে কোন স্টেশনে নামতে হবে?
ভেলোরের স্টেশনের নাম কাটপাটি স্টেশন (Katpadi Station)। আপনার টিকেট যদি ভেলোর পর্যন্ত হয় তাহলে আপনাকে নামতে হবে কাটপাটি স্টেশনে।
অনেক সময় কলকাতা থেকে চেন্নাই পর্যন্ত টিকেট করা থাকে। কারণ সব ট্রেন কাটপাটি যায় না। সেক্ষেত্রে আপনাকে চেন্নাই সেন্ট্রাল (Chennai Central) স্টেশনে নামতে হতে পারে আবার কোনো কোনো ট্রেন চেন্নাই এগমোর (Chennai Egmore) স্টেশনে নামিয়ে দেবে আপনাকে। এবার সেখান থেকে বাসে কিংবা ট্রেনেও আপনি ভেলোর আসতে পারেন। ট্রেনে এলে খরচটা কম পড়ে।
আপনাকে যদি চেন্নাই এগমোর স্টেশনে নামতে হয় তো সেখান থেকে আপনি আবার চেন্নাই সেন্ট্রাল স্টেশনে আসুন । বাস ভাড়া ৫ রুপি আর অটো ভাড়া ৫০ রুপি। এবার চেন্নাই সেন্ট্রাল থেকে কাটপাটি পর্যন্ত ট্রেনের টিকেট করে চলে আসুন। প্রয়োজনে কর্তব্যরত পুলিশদের সহায়তা নিন স্টেশনে। আবার বড় স্টেশনগুলোতে হেল্প ডেস্কও আছে।
ভেলোরে থাকবেন কোথায়?
ভেলোর স্টেশনে নামার পর বাসে কিংবা অটোতে করে আপনি সিএমসি আসতে পারবেন। সিএমসির পাশেই বেশ কিছু হোটেল আছে । সেগুলোতে থাকতে পারেন । কিংবা সাইদাপেট এও থাকতে পারেন । হোটেল/লজ ভাড়া ১৫০ থেকে ৬০০ পর্যন্ত। CMC’র পাশের লজগুলোর ভাড়া একটু বেশি, তবে সাইদাপেটের এই পাশটায় ভাড়া একটু কম। হোটেল ম্যানেজারের সাথে যোগাযোগ করলে রান্নার সরঞ্জামও পাবেন নিজে রান্না করে খাবার জন্য। বাঙালি হোটেলও আছে কিছু।
যে হোটেল বা লজ এ থাকুন, হোটেল/লজ এর পেমেন্ট স্লিপগুলো ঠিক মতো কালেক্ট করুন এবং সাথে রেখে দিন । পরবর্তী ঝামেলা এড়াতে এগুলো কাজে দেবে ।
কোন ভাষায় কথা বলবেন?
ইন্ডিয়া অনেক বড় একটি দেশ এবং স্থানভেদে এদের ভাষার পরিবর্তন ও বেশ। কলকাতাতে আপনি বাংলা, হিন্দি কিংবা ইংলিশ চালিয়ে যেতে পারবেন। তবে তামিলরা হিন্দিতে কথা বলতে অভ্যস্ত নয় এবং বলতে বা শুনতেও আগ্রহী নয়। তবে ইদানিং হিন্দি চলে। আশার কথা হল ভেলোরের অনেকেই এখন বাংলা কিছু কাছু বোঝে এবং কথাও বলে। CMC’র ডাক্তারও কিছু কিছু বাংলা বোঝেন এবং বলেন । তবে ইংলিশ বা হিন্দি ওকে। এখানে অনেক জায়গাতেই বাংলা লেখা দেখতে পাবেন।
কী খাবেন ভেলোরে?
আমরা যেমন ভাতে পাগল তেমনি ভেলোরের স্থানীয়বা ইটলি (Edti) তে পাগল। স্থানীয় খাবার অনেকের পক্ষেই খাওয়া সম্ভব না। কারণ, এদের বেশিরভাগ খাবারই স্বাদের কিছুটা টক এবং এরা কারি পাতা (Kari Patta) প্রচুর ব্যবহার করে আমাদের ধনে পাতার মতো।
কিছু বাঙালি খাবারেরও হোটেল রয়েছে, তবে সবগুলতে পুরো বাঙালি স্বাদ পাওয়া যায় না। “অন্নপূর্না” নামে একটি বাঙালি খাবারের হোটেল আছে যেখানে আমি অনকেটা বাঙালি খাবারের সাধ পেয়েছি এবং এখানকার রাধুনিরাও প্রায় সবাই বাঙালি।