বিভিন্ন পরিবেশগত কারণে সব জায়গায় বিশুদ্ধ পানি পাওয়া সম্ভব হয় না। তাছাড়া ফুটালেও পানি পরিপূর্ণভাবে বিশুদ্ধ হয় না। পানিতে বিভিন্ন হার্ড পার্টিকেল থেকে যায়, যা পানি শোধন ছাড়া কোনোভাবেই অপসারণ সম্ভব নয়। আবার কিছু কারণে সব জায়গার পানি ফোটানো সম্ভব হয় না। ঢাকা শহরের মতো শহরগুলোতে গ্যাস সহজলভ্য হওয়ায় অনেকে সহজে পানি ফুটাতে পারলেও যেসব শহরে সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবহার করতে হয় সেসব জায়গায় পানি ফোটানো বেশ ব্যয়বহুলও। সেসব জায়গায় পানি বিশুদ্ধকরণ বড়ি ব্যবহার করা যেতে পারে। আরও সহজভাবে পানি বিশুদ্ধ করতে চাইলে পানি পরিশোধকযন্ত্র ব্যবহার করতে পারেন।
গ্রামের মানুষ এক সময় টিউবয়েলের পানি পান করত। কিন্তু আর্সেনিক এবং অতিমাত্রায় আয়রনের সমস্যার কারণে তারা এখন আর টিউবয়েলের পানি পান করতে পারছে না। ফলে গ্রামেও প্রয়োজন হয়ে পড়েছে বিশেষভাবে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা। গ্রামের মানুষই বরং এখন বিশুদ্ধ পানি নিয়ে বড় সংকটে আছে।
অনেক সময় আমরা রেস্টুরেন্ট বিভিন্ন জায়গা থেকে খোলা পানি খেয়ে ফেলি, এতে কিন্তু মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে যায়। আপনি আক্রান্ত হতে পারেন পানিবাহিত রোগে। মনে রাখকে হবে পানির মাধ্যমে রোগজীবাণু সহজে ছড়িয়ে পড়ে। আবার পানি পান করতেও হবে। পানি পান না করলে বা পানি পান করতে দেরি হলে অথবা কম পানি পান করলে শরীরে অনেক ধরনের সমস্যা তৈরি হয়। এজন্য ব্যাগে বোতলে সবসময় বিশুদ্ধ পানি রাখা জরুরী।
পানির অভাবে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে। বিষন্নতা এবং হাতাশাও তৈরি হয় পর্যাপ্ত পানি শরীরে না থাকলে, বা শরীর ডিহাইড্রেশনে আক্রান্ত হলে।
পানি হজমশক্তি বাড়ায়, হজমপ্রক্রিয়া ঠিক রাখে, শরীরের ভারসাম্য ধরে রাখে। শরীরে ঠিকভাবে খাবার হজম হওয়ার জন্য প্রচুর বিশুদ্ধ পানির দরকার। পানি কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়, পেট ফোলা-ফাঁফা কমায়। পানি ঠিকমতো পান না করলে শরীর সব পানি শুষে নেয়, তখন ডিহাইড্রেশন দেখা দেয়। পানি কিডনির পাথর হওয়া থেকে বাঁচায়, কারণ পানি প্রস্রাবের লবণ ও খনিজ ভেঙে দেয়, ফলে কিডনিতে পাথর হয় না। একটু পরপর পানি পান করলে তাই মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকা যায় এবং শারীরিক শক্তি বাড়ে। একবারে অনেক পানি পান করার চেয়ে বারে বারে বিশুদ্ধ পানি পান করা উপকারী।
এছাড়া পানি রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, শরীর সজীব করে, উচ্চ রক্তচাপ কমে। মাথাব্যথার অনেক কারণের মধ্যে একটি হলো পানিশূন্যতা। এ ক্ষেত্রে পানি খেয়ে কিছু সময় বিশ্রাম নিতে হবে, দেখবেন মাথাব্যথা কমে গেছে। কখনোই একসঙ্গে অনেক পানি পান করা উচিত না। ঢকঢক করে দ্রুত পানি পান করা উচিত নয়। ভারী পরিশ্রম অথবা ব্যায়ামের সময় সবারই একটু একটু পানি পান করা উচিত। গরমের দিনে বেশি পানি পান করলে শরীর ভালো থাকে।
কীভাবে পানি বিশুদ্ধ করবেন?
যেহেতু দূষিত পানি ও অপরিচ্ছন্নতার কারণে এ রোগ হয়, তাই কষ্ট করে হলেও বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। প্রতিকূল পরিবেশ ও অন্য কিছু কারণে সব জায়গার পানি ফোটানো সম্ভব হয় না। সেসব জায়গায় পানি বিশুদ্ধকরণ বড়ি ব্যবহার করা যেতে পারে। আরও সহজভাবে পানি বিশুদ্ধ করতে চাইলে পানি পরিশোধকযন্ত্র ব্যবহার করতে পারেন।