ইংরেজি ভাষায় রচিত সাহিত্য হচ্ছে ইংরেজি সাহিত্য। যে কোনো দেশের যে কোনো ভাষাভাষীর লোক ইংরেজি ভাষায় সাহিত্য রচনা করলে, তা ইংরেজি সাহিত্য হিসেবে বিবেচিত হবে। বিসিএস-এর সিলেবাসে রয়েছে ইংরেজি সাহিত্য।
অর্থাৎ ইংরেজি সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য অংশ সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে, তবে অন্য ভাষার কিছু সাহিত্যও আলোচনায় চলে আসে বিশ্বব্যাপী তার গুরুত্ব বিবেচনায়, বিশেষ করে ইংরেজি ভাষায় অনূদিত হওয়ার পর, এবং বিশ্বব্যাপী ইংরেজি অনুবাদটি পঠিত হওয়ার পর ওটি আসলে ইংরেজি সাহিত্য হিসেবেই বিবেচনা পেয়েছে।
সিলেবাস মাথায় রেখে এবং শুধু বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার্থীদের জন্য বইটি (প্রিলিমিনারি ইংরেজি সাহিত্য) রচিত হওয়ায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্য এখানে উল্লেখিত হয়নি, কারণ, সেগুলো ইংরেজি সাহিত্য নয়। বিশেষ করে ফরাসি এবং রাশিয়ার বিশাল সাহিত্যভাণ্ডার এখানে উন্মোচিত হয়নি।
ইংরেজি সাহিত্যধারা শুরু হয়েছিল খ্রিস্টীয় ৮ম থেকে ১১শ শতাব্দীর মধ্যে কোনো এক সময়ে রচিত মহাকাব্য বিউলফ-এর মাধ্যমে। কাব্যটি স্ক্যান্ডিনেভিয়া অঞ্চলের পটভূমিতে রচিত হলেও ইংল্যান্ডের জাতীয় মহাকাব্যের স্বীকৃতি পায়। কবি জিওফ্রে চসারের (১৩৪৩-১৪০০) রচনাবলি ইংরেজি সাহিত্যের পরবর্তী উল্লেখযোগ্য কীর্তি; বিশেষত দ্য ক্যান্টারবেরি টেলস্। তবে বিসিএস-এর সিলেবাসে পড়তে বলা হয়েছে এলিজাবেথান পিরিয়ড থেকে, ফলে রেনেসাঁর পূর্বের সাহিত্য এক্ষেত্রে খুব গুরুত্বের সাথে না পড়লেও চলবে।
রেনেসাঁর যুগে, বিশেষত ১৬শ শতাব্দীর শেষভাগে ও ১৭শ শতাব্দীর প্রথম ভাগে, ক্রিস্টোফার মারলো, উইলিয়াম শেকসপিয়র, বেন জনসন, জন ডান সহ অন্যান্য কবি ও নাট্যকারেরা ছিলেন ওই সময়ের প্রধান কাব্য ও নাট্যসাহিত্যের রচয়িতা।
১৭শ শতাব্দীর শেষ ভাগে অপর এক বিখ্যাত কবি জন মিলটন (১৬০৮-৭৪) রচনা করেছিলেন মহাকাব্য প্যারাডাইস লস্ট (১৬৬৭)। ১৭শ শতাব্দীর শেষ ভাগে ও ১৮শ শতাব্দীর প্রথম ভাগটি ছিল ব্যঙ্গসাহিত্যের (স্যাটায়ার) যুগ। এই যুগেই জন ড্রাইডেন ও আলেকজান্ডার পোপের কাব্য ও জনাথন সুইফটের গদ্যরচনাগুলি রচিত হয়েছিল। ১৮শ শতাব্দীতে ড্যানিয়েল ডিফো, স্যামুয়েল রিচার্ডসন ও হেনরি ফিল্ডিংয়ের রচনার মাধ্যমে ইংরেজি সাহিত্যে উপন্যাস সাহিত্যের সূচনা ঘটে। অন্যদিকে ১৮শ শতাব্দীর শেষভাগে ও ১৯শ শতাব্দীর প্রথম ভাগে রোম্যান্টিক কবি উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ, স্যামুয়েল টেলস কোলরিজ, পার্সি বিশি শেলি, লর্ড বায়রন ও জন কিটসের উত্থান ঘটে।
ভিক্টোরিয়ান যুগটি (১৮৩৭-১৯০১) ইংরেজি সাহিত্যের (উপন্যাস) প্রধান বিভাগ হয়ে ওঠে। এই সময়কার প্রধান ঔপন্যাসিক ছিলেন চার্লস ডিকেন্স। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্রন্টি ভগিনীগণ (চার্লটি ব্রন্টি এর্ব এমিলি ব্রন্টি) ও টমাস হার্ডি। ১৯শ শতাব্দীর শেষ ভাগে এরাই ছিলেন ইংরেজি সাহিত্যের প্রধান ব্যক্তিত্ব।
১৯শ শতাব্দীতেই আমেরিকান সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কীর্তিগুলি রচিত হতে শুরু করে। এই সময়কার আমেরিকান সাহিত্যিকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দ্যা ওল্ড ম্যান এন্ড দ্যা সি উপন্যাসের রচয়িতা আর্নেস্ট হেমিংওয়ে এবং মবি ডিক উপন্যাসের রচয়িতা ঔপন্যাসিক হারমান মেলভিল, কবি ওয়াল্ট হুইটম্যান ও এমিলি ডিকিনসন। ১৯শ শতাব্দীর শেষভাগে ও ২০শ শতাব্দীর গোড়ার দিকে প্রধান আমেরিকান ঔপন্যাসিকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হেনরি জেমস। অন্যদিকে ২০শ শতাব্দীর প্রথম দুই দশকের একজন বিশিষ্ট ব্রিটিশ সাহিত্যিক হলেন পোলিশ-বংশোদ্ভুত জোসেফ কনরাড।
২০শ শতাব্দীতে আইরিশ লেখকরা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আধুনিকতাবাদ আন্দোলনের দুই কেন্দ্রীয় চরিত্র জেমস জয়েস ও স্যামুয়েল বেকেট। আমেরিকান আধুনিকতাবাদী সাহিত্যিকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কবি টি. এস. এলিয়ট ও এজরা পাউন্ড এবং ঔপন্যাসিক উইলিয়াম ফকনার।
২০শ শতাব্দীর মধ্যভাগে ব্রিটিশ কমনওয়েলথের বিভিন্ন রাষ্ট্রে ইংরেজি ভাষায় সাহিত্য রচনা শুরু হয়। এই সব দেশের অনেক সাহিত্যিক সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারও লাভ করেন। ২০শ ও ২১শ শতাব্দীর অনেক প্রধান সাহিত্যিকই যুক্তরাজ্যের বাইরের অধিবাসী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সাহিত্যের বিভিন্ন দিকগুলিকে উত্তর-আধুনিক সাহিত্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।