১
নেকড়ের একটি দল জঙ্গলে ঘোরাঘুরি করছিল। হঠাৎ তারা দেখল একটি শিশু গাছের মধ্যে শুয়ে আছে। তারা সৃষ্ঠিকর্তাকে ধন্যবাদ দিল, কারণ, সেখানে কাছাকাছি কোনো বাঘ তখন ছিল না।
২
তারা শিশুটিকে তুলে তাদের গুহায় নিয়ে যায়। এটা বোঝা কঠিন ছিল না যে শিশুটির পিতা-মাতাকে বাঘে খেয়েছে। নেকড়েরা শিশুটির নাম রাখে মুগলি।
৩
পিতা নিকড়ে তার স্ত্রীর সাথে পরামর্শ করে কীভাবে শিশুটিকে বাঘের শিকার থেকে নিরাপদে রাখা যায়। অবশেষে তারা যেকোনো মূল্য মুগলিকে বাঘের থাবা থেকে রক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেয়।
৪
নেকড়ে পরিবার বালো নামের ভল্লুক এবং বাঘেরা নামের চিতার সাথেও শিশুটির নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করে। তারা সবাই যেকোনো মূল্যে শেরখান নামের বাঘের কাছ থেকে মুগলিকে রক্ষা করতে একমত হয়।
৫
মুগলি অন্যান্য মায়াবী পশুদের সাথে জঙ্গলে বড় হচ্ছিল। নেকড়েরা তাকে জঙ্গলের ভাষা শিখিয়ে দিয়েছিল। বালো তাকে জঙ্গলের আইনকানুন শিখিয়েছিল, বাঘেরা শিখিয়েছিল কীভাবে শত্রুর কাছ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হয়।
৬
মুগলি একদিন জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছিল। হঠাৎ একদল বানর এসে মুগলিকে বিরক্ত করা শুরু করে। রানা নামের ঈগলটি আড়াল থেকে বিষয়টি খেয়াল করছিল।
৭
রানা বিষয়টি জানানোর জন্য দ্রুত বালো এবং বাঘেরার কাছে ছুটে যায়। এবং তাদেরকে মুগলিকে হেনস্তা করার বিষয়টি জানায়।
৮
বালো এবং বাঘেরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। পথ থেকে তাদের বন্ধু কাক এবং সাপও তাদের সাথে যোগ দেয়।
৯
দ্রতই তারা বানদের তাড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়। মুগলি মুগ্ধ গয়ে দৃশ্যটি দেখতেছিল। কিছু বানর আহত হয়ে সেখানে পড়েছিল এবং কিছু পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
১০
একদিন নেকড়ে পরিবার বাঘেরা, বালো এবং মুগলির সাথে কথা বলছিল। হঠাৎ শেরখান সেখানে প্রবেশ করে এবং মুগলিকে চায়। মুগলি সেখানে তখন আগুনের পাশে বসেছিল।
১১
মুগলি তৎক্ষণাৎ আগুনের ডিব্বাটি শেরখান বাঘের দিকে ছুড়ে দেয়। ভয়ে পেয়ে শেরখান ছুটে পালায়। এরপর নেকড়েরা মুগলিকে মনুষ্য সমাজে গিয়ে বসবাস করতে বলে কারণ, সেখানে তার জীবন সংশয় তৈরি হয়েছিল।
১২
ভারাক্রান্ত হৃদয়ে মুগলি তাদের ছেড়ে কাছের একটি পাহাড়ী গ্রামে পৌঁছায়।
১৩
একটি নেকড়ে শাবক প্রতিদিন ঐ গ্রামে এসে মুগলিকে জঙ্গলে কত সুখ তা বলে। মুগলি নেকড়ে শাবকের সাথে শেরখান বাঘকে হত্যা করার কথা আলোচনা করে এবং এ কাজে তারা সাঁড়দের সহযোগিতা নিতে চায়।
১৪
দ্রুতই তারা সুযোগটা নেয়, যখন তারা শেরখানকে পর্বতের একটি সরু পথ দিয়ে যেতে দেখেছিল।
১৫
তারা পথের দুই মুখ দিয়ে সাঁড়দের পাঠিয়ে দেয়। শেরখান ছেড়ে দেয়া সাঁড়দের পায়ে পৃষ্ঠ হয়ে মারা যায়। এভাবে আক্রমণকারী অবশেষে মারা পড়ে।
১৬
এখন আর মুগলির কোনো ভয় থাকল না। সে শান্তিতে জঙ্গলে তার বন্ধুদের সাথে বাস করে।
রুডইয়ার্ড কিপলিং-এর জাঙ্গল বুক অনুকরণে দিব্যেন্দু দ্বীপ