এভাবে গায়ের জোরে, অহঙ্কারে চললে, রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না শিখলে পুরো মানবজাতিকে নিয়েই ডুববে তারা। অথবা হয়ত একদিন মহিষের, বলদের কাজগুলোই তাদের ভাগ্যে নির্দিষ্ট হয়ে যাবে।
নাকের উপর কালশিটে পড়া। বাম হাতের কনিষ্ঠা আঙ্গুল ফুলে ঢোল, ব্যাথায় নাড়াতে পারছেনা। মাকে কাজে সাহায্য করে ২০-২২ বছর বয়সী মেয়েটা। মোবাইল টিপতে দেখে সন্দেহ আর রাগে অন্ধ হয়ে মেরেছে ওর স্বামী।
উপজেলার আউটডোরে পিঠে কিডনির এরিয়াতে প্রচণ্ড ব্যাথা নিয়ে এসে একটা মেয়ে বলল পড়ে গেছিলাম, সরাসরি বললাম মেরেছে কেউ? লজ্জা লজ্জা করে বলল, হ্যাঁ স্বামী। দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিল না। পরীক্ষা করে তার স্বামীকে ডাক দিলাম, বললাম খুব খারাপ জায়গায় আঘাত, কিডনিতে আঘাতে রক্ত জমতে পারে, ভর্তি করে টেস্ট করা লাগবে, বড় মেডিকেলে যেতে হতে পারে। আমি আর আমার আরেকজন মেয়ে কলিগ ছিলাম। ভর্তি করে চিকিৎসা লাগবে শুনে সেই স্বামী পারলে আমাদেরও মারে। আর মেয়েটা স্বামীর হাত পা ধরতে যায়, খুব মায়া নিয়ে আমাদের বলে, ও বোঝে না, মাথা গরম।
জোর কিছু বেশি আছে পুরুষ মানুষের গায়ে। জোর খাটানো আর ক্ষমতা দেখানোর ইচ্ছাটাও তাদের বেশি। কিন্তু এখনকার যুগে গায়ের জোরের মূল্য কম। জোর খাটাতে গেলে, রাগ দেখাতে গেলে মস্তিষ্ক খাটানো ভুলে যেতে হয়। মহিষের দিকে তাকালেই বোঝা যায়, ওটা দিয়ে কি বিশেষ কোনো কাজ হয়? এভাবে গায়ের জোরে, অহঙ্কারে চললে, রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না শিখলে পুরো মানবজাতিকে নিয়েই ডুববে তারা। অথবা হয়ত একদিন মহিষের, বলদের কাজগুলোই তাদের ভাগ্যে নির্দিষ্ট হয়ে যাবে।
লেখক: দিপ্রা নাথ
সহাকারী সার্জন, উপজেলা স্থাস্থ্য কমপ্লেক্স, দুর্গাপুর, রাজশাহী।
ফেসবুক: Dipra Nath