১৯৭১ সালে ময়মনসিংহ সদরে হিন্দুগলির ১৮ নং বাড়িতে আলাউদ্দিন এবং তার বাক প্রতিবন্দী মা মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়মিত রান্না করে খাওয়াতেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত আলাউদ্দিন এবং তার মায়ের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি মেলেনি। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বিভ্রান্ত এবং সর্বস্বান্ত হয়েছেন শুধু।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মতিউর রহমান প্রিন্সিপাল, মুক্তিযোদ্ধা গাইরা শামসু, মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা জিয়ারুল এবং নাম না জানা আরও অনেক মুক্তিযোদ্ধাদের ময়মনসিংহ শহরের হিন্দুগলির ১৮ নং বাড়িতে (বর্তমান হোল্ডিং নম্বর) আলাউদ্দিন ও তার বাক প্রতিদবন্ধী মা মুক্তিযোদ্ধাদের রান্না করে খাওয়াতেন। এলাকার রাজাকাররা আলাউদ্দিনকে প্রায়শই নানান প্রশ্ন করত, এবং বলত, এত বাজার করো কেন, কাদের খাওয়ায়? কিশোর আলাউদ্দিন নানানভাবে তাদের বুঝ দিতেন, কখনই মুক্তিযোদ্ধাদের কথা বলতেন না। ভয়ে ভয়ে বাজার করে নিয়ে এসে বাকপ্রতিবন্ধী মাকে দিতেন। মা রান্না করে মুক্তিযোদ্ধাদের খাওয়াতেন।
আলাউদ্দিন পকিস্তানি বাহিনী এবং রাজাকারদের অনেক হত্যা নির্যাতনেরও প্রত্যক্ষ সাক্ষী। আলাউদ্দিনের মা মারা যান ২০০০ সালে। কোনো ধরনের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি বা কোনো সুযোগ সুবিধা আলাউদ্দিন এবং তার মা পাননি। তিনি বলেছেন, উল্টে অনেক লোক— যেমন, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে (জামুকা) কর্মরত উচ্চমান সহকারি শাহ আলম আমার কাছে থেকে বিশ হাজার টাকা নেয়। এভাবে অনেকদিন ধরে প্রতারণার শিকার হয়ে আসছেন বর্তমানে আটষট্টি বছর বয়স্ক আলাউদ্দিন। এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করে অনেকেই মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন, সে হিসেবে আমার বাক প্রতিবন্ধী মা এবং আমিও মুক্তিযোদ্ধা। আমি চাই, সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ তদন্তপূর্বক আমাকে এবং আমার মাকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুক।