হেফাজত জামায়াতের বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার হুমকির প্রতিবাদে চরভদ্রাসনে নির্মূল কমিটির মানববন্ধন কর্মসূচী

হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব, মাদ্রাসার দখলদার, ধর্মব্যবসায়ী মামুনুল হক গংদের বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার হুমকি এবং মুক্তিযোদ্ধা এবং দেশের বরেণ্য ব্যক্তিদের প্রতি ঘৃণ্য ভাষায় বিষোদগারের প্রতিবাদে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, কেন্দ্রীয় কমিটির ডাকা কর্মসূচীর অংশ হিসেবে নির্মূল কমিটি, চরভদ্রাসন শাখা আয়োজন করে এক মানববন্ধন কর্মসূচী। শহীদ বুদ্ধিজীবী শেখ সৈয়দ আহম্মদের নাতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা, চরভদ্রাসন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আজীজুল হক (আজীজ মাস্টার)-এর জেষ্ঠ পুত্র, নির্মূল কমিটি চরভদ্রাসন শাখার আহ্বায়ক সাজ্জাদুল হক সাজ্জাদের সভাপতিত্বে মানববন্ধন কর্মসূচীতে প্রধান অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন চরভদ্রাসন উপজেলার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোতালেব হোসেন মোল্যা, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন সুলতানা, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, বীর মুক্তিযোদ্ধ, শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ এবং চরভদ্রাসন উপজেলার সর্বস্তরের জনগণ। করোনাক্রান্ত থাকায় উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইমদাদুল হক তালুকদার উপস্থিত থাকতে না পারলেও এই মানববন্ধনের সাথে একাত্মতা পোষণ করে আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান।

মানববন্ধন

জনাব সাজ্জাদুল হক বলেন, ১৪ নভেম্বরের ঢাকার বিএমএ মিলনায়তনে রাজধানীর ধোলাইরপাড়ে জাতির পিতার ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করে তা অবিলম্বে বন্ধের দাবি তোলেন মামুনুল হক। এমনকি বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেওয়ার কথা বলেন হেফাজতের এই নেতা। এরপর ১৫ নভেম্বর চট্টগ্রামে এক অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী ও চট্টগ্রাম-৯ আসনের সাংসদ মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতাকারীরা ক্ষমা না চাইলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মৌলবাদী গোষ্ঠীকে বেশি বাড়াবাড়ি না করতে হুঁশিয়ার করে নওফেল বলেছিলেন, “বেশি বাড়াবাড়ি করলে ঘাড় মটকাতে সময় লাগবে না।” আমরা শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট ভাষায় প্রতিবাদ করতে চাই, আমাদের কোনো ক্ষমতা প্রয়োজন নেই, তাই আমাদের কৌসুলি হবারও কোনো প্রয়োজন নেই। আপনাদের অবগতির জন্য বলতে চাই, সৌদি আরব, ইরান, তুরস্ক, পাকিস্তান -সকল মুসলিম দেশেই ভাস্কর্য রয়েছে, তাহলে বাংলাদেশে তারা কোন ইসলামের জাগরণ ঘটাতে চান? আমরা জানি, তারা মওদুদিবাদী ওয়াহাবীবাদী জঙ্গিবাদী ইসলামের প্রসার ঘটাতে চান বাংলাদেশে। তারা পাকিস্তানি অপশক্তির ক্রীড়নকে পরিণত হয়েছেন। ধর্মব্যবসায়ী এসব লোকেদের কাছে দেশটাকে তুলে দেওয়ার জন্য আমাদের বাপ দাদারা শহীদ হন নাই, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জীবন দেন নাই। আমরা কিছুতেই শান্তির ধর্ম ইসলামকে নিয়ে এভাবে ব্যবসা করতে দেব না, ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করতে দেব না। ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তস্নাত বাংলাদেশে ধর্মব্যবসায়ীদের ঠাই হবে না। কিছুতেই না। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির পক্ষ থেকে আমরা বলতে চাই, এরা ঘাতকদের উত্তরসুরী, এই মামুনুল হকের পিতা সঘোষিত রাজাকার ছিলেন। তাদেরকে প্রতিহত করা শহীদ পরিবারের সদস্যদের দায়িত্ব। আমরা তা করবই।

চারু বালা
মানববন্ধনে শ্রদ্ধান সাথে হাজির করা হয় গাজীরটেক ইউনিয়ন গণহত্যার নির্মম শিকার শহীদজায়া, শহীদজননী, বীরঙ্গনা চারুবালাকে।