‘হেফাজত প্রকাশ্যে মানুষকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে, দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। তাই এদের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’ ‘সুলতানা কামালসহ প্রগতিশীল নাগরিকদের হত্যা-হামলা ও হুমকি’র বিরুদ্ধে আয়োজিত নাগরিক সমাজের প্রতিবাদ সভায় এ আহ্বান জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার (০৮ জুন) দুপুরে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এই প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান লেখক এবং মানবাধিকারকর্মী অজয় রায় বলেন, ‘হেফাজতের কোনও বিজ্ঞানলদ্ধ জ্ঞান নেই। তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সিপিবি-বাসদসহ সব বাম সংগঠনকে একত্রে রাজপথে নামতে হবে।’
অজয় রায় বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসার সনদের স্বীকৃতি দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর একটি ভুল সিদ্ধান্ত। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর তারা আস্কারা পেয়েছে।’
এসময় কওমি মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিস সনদের স্বীকৃতি বাতিলের দাবি করা হয়।
অনুষ্ঠানে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘হেফাজত দেশ বিরোধী এজেন্ডা নিয়ে মাঠে নেমেছে। তারা ১৩ দফা ঘোষণার পর থেকে দেশের বিভিন্ন মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর শুরু করেছে। তারা ২০১৩ সালে যে তাণ্ডব করেছে, তার বিচার এখনও শুরু হয়নি। এছাড়া প্রকাশ্যে তারা হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এসব হুমকিদাতাদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।’
বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক আবুল বারকাত বলেন, ‘আমরা অন্ধকার যুগে প্রবেশ করেছি। সরকার ২০১৩ সালেও বলেছিল হেফাজত মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী। অথচ আজ তাদের সঙ্গে হেফাজতের সখ্যতা!’
এ সময় অন্যান্য বক্তারা বলেন, ‘জাতীয় মসজিদকে অপরাজনীতির কেন্দ্রে পরিণত করেছে হেফাজত। জামায়াতের মতো হেফাজতকেও প্রতিহত করতে হবে। শাসকগোষ্ঠী হেফাজতকে ভাড়াটিয়া সংগঠন হিসেবে ব্যবহার করছে। আজ হেফাজত ঠিক করে দিচ্ছে, আমাদের মেয়েদের বিয়ের বয়স কত হবে।’
টকশোতে হেফাজত নেতাদের আমন্ত্রণ না জানানোর আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, ‘হেফাজতকে এসব অনুষ্ঠান থেকে বর্জন করতে হবে।’
অজয় রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, মানবাধিকারকর্মী খুশি কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এমএম আকাশ, নাট্যব্যক্তি হাসান ইমাম ও সারা যাকের প্রমুখ।