সংলাপে কোনো বিশেষ সমাধান পাওয়া যায়নি : ড. কামাল হোসেন

প্রানতোষ তালুকদার, ঢাকা

ড. কামাল হোসেন বলেছেন সভা-সমাবেশের অনুমতি ছাড়া সংলাপে কোনো বিশেষ সমাধান পাওয়া যায়নি। জাতীয় ঐক্যফ্রণ্টের উদ্যোক্তা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ১০টার কিছু পর পর্যন্ত সাড়ে তিন ঘণ্টা চলে এই সংলাপ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে গণভবনে।
গত ১ নভেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে সংলাপ শেষে ১ নভেম্বর ২০১৮ রাত ১২টায় ৭, বেইলি রোডের নিজ বাসায় এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে ঐক্যফ্রন্টের অন্যান্য শরিক দলের নেতাগণসহ ড. কামাল হোসেন জানান সভা-সমাবেশের অনুমতি ছাড়া সংলাপে কোন বিশেষ সমাধান পাওয়া যায়নি।
ড. কামাল হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমাদের সংলাপ ছিলো। আমরা তিন ঘণ্টা সেখানে ছিলাম। আমরা অনেকগুলো কথা বলেছি। নেতৃবৃন্দ সবার অভিযোগ ও বক্তব্য তুলে ধরেছেন। সবার কথা শোনার পর প্রধানমন্ত্রী বেশ লম্বা বক্তৃতা দিলেন। তবে তিনি বলেনÑওখানে কোনো বিশেষ সমাধান আমরা পাইনি।
সমাবেশের ব্যাপারে উনি (প্রধানমন্ত্রী) যেটা বললেন একটা ভালো কথা বলেছেন। তারপর গণফোরাম নেতা সুব্রত চৌধুরী সংলাপ নিয়ে লিখিত সারসংক্ষেপ পাঠ করে শুনান।
দলটির নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, প্রথমে আমাদের নেতা ড. কামাল হোসেন প্রধানমন্ত্রীর সামনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন। এরপর বিএনপির মহাসচিব সাত দফা দাবি তুলে ধরেছেন। জাতীয় ঐক্যফ্রণ্ট্রের অন্যান্য নেতারাও আমাদের পক্ষ থেকে বক্তব্য তুলে ধরেন।
ঢাকাসহ সারাদেশে সভা-সমাবেশসহ রাজনৈতিক কর্মসূচির ওপর কোন বাধা থাকবে না রাজনৈতিক দলসমূহ যে যেখানে সভা করতে চাইবে তাদের কোন বাধা দেবে না এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যেই নির্দেশনা দিয়েছেন। রাজনৈতিক মামলা সম্পর্কে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের মামলা ও গায়েবি মামলার তালিকা আপনারা দেন; আমি অবশ্যই বিবেচনা করবো যাতে হয়রানি না হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন উত্থাপিত দাবি-দাওয়া নিয়ে ভবিষ্যতে আলোচনা অব্যাহত থাকবে; সুব্রত চৌধুরী বলেছেন। খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কি-না বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনÑএ ব্যাপার আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সুর্দিষ্টভাবে কোন কিছু বলেননি। তিনি বলেছেন এই বিষয়গুলো নিয়ে ভবিষ্যতে আরও আলোচনা হতে পারে। বিএনপি কী এতে আশাবাদী? প্রশ্ন করা হলে ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমি তো বলেছি যে ভাই আমি এ বিষয়ে খুব সন্তুষ্ট নই, এটা আগেই বলেছি।
সংলাপে সমাধানের আগে নির্বাচনে তফসিল ঘোষণা হবে কি-না প্রশ্ন করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা তফসিলের বিষয়ে বলেছি। উনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, তফসিল দেওয়ার এখতিয়ার তাদের নেই। সেটা নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।
ঐক্যফ্রন্টের কর্মসূচী কী হবে? এর জবাবে ফখরুল বলেন, আমাদের ঐক্যফ্রণ্টের যে কর্মসূচি ছিল সে কর্মসূচি চলবে।
মির্জা ফখরুলকে বলা হয় সংলাপ থেকে আপনারা কী পেলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সব সময় কী সব কিছু অর্জ হয় নাকি! এ পর্যায়ে জেএসডির নোত আ স ম আব্দুর রব বলেন, একদিনে সব পাওয়া যায় না। গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন আমরা সংলাপের সুযোগ পেয়েছি। আমরা আমাদের কথা বলে এসেছি উনাকে (প্রধানমন্ত্রীকে)। উনি জানতে পেরেছেন। উনি উনার কথাগুলো বলেছেন, উনার মনের কথা আমরা কিছুটা জানতে পেরেছি। আ স ম আব্দুর রব বলেন, স্যারের কথাগুলো শুনেছেন আমরা ৭ দফা কর্মসূচি দিয়েছি। মানা না মানার দায়িত্ব হলো সরকারের। আমাদের কর্মসূচি আমরা দিয়েছি এ নিয়ে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
পরিশেষে জাতীয় ঐক্যফ্রণ্টের উদ্যোক্তা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দল নিয়ে সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ১০টার কিছু পর পর্যন্ত সাড়ে তিন ঘণ্টা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে গণভবনে চলে এই সংলাপ এবং সংলাপে উত্থাপিত হয় যে সংসদ ভেঙে দেওয়া, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় একাদশ সংসদ নির্বাচনের দাবি তোলা; জাতীয় ঐক্যফ্রণ্ট গত ২৮ অক্টোবর সংলাপের আহ্বান জানান ড. কামাল হোসেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গণভবনে ১ নভেম্বর ২০১৮, বৃহস্পতিবার এ সংলাপের আয়োজন করা হয়।