Headlines

২২ হাজার টাকা দিয়েও শোধ হয়নি কৃষি ব্যাংকের ৫ হাজার টাকা ঋণ

বাংলানিউজ পত্রিকা

বাংলানিউজ পত্রিকা

লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে প্রাণহরি দাস নামের এক অসহায় বৃদ্ধের বয়স্ক ভাতা থেকে কৃষিঋণের টাকা জোরপূর্বক আদায় করার অভিযোগ উঠেছে কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। পাঁচ হাজার টাকার ঋণ পরিশোধের নামে গত আট বছরে বয়স্ক ভাতা থেকে ২২ হাজার টাকা কেটে নেওয়া হলেও ঋণের বোঝা থেকে মুক্তি পাননি তিনি।

ঋণের টাকা বয়স্ক ভাতা থেকে কেটে নেওয়ার অভিযোগে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান মোল্লার নিকট অভিযোগ করেন তিনি। প্রাণহরি দাস উপজেলা চর কাদিরা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা।

প্রাণহরি দাস জানান, ১৯৯৮ সালে কৃষি ব্যাংক তোরাবগঞ্জ শাখা থেকে পাঁচ হাজার টাকা কৃষিঋণ নেন তার ছেলে। গত আট বছর ধরে ওই ঋণ পরিশোধের নামে ভাতা উত্তোলনের দিন উত্তোলিত টাকা থেকে ঋণের টাকা কেটে নেওয়া হয়। এভাবে ভাতা থেকে ২২ হাজার টাকা নিলেও আরও টাকা পাওনা বলে দাবি করছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। বর্তমানে তিনি অসুখে ভুগছেন এই দরিদ্র ব্যক্তি।

প্রাণহরি আরও জানান, গত ৭ জুলাই ব্যাংকে বয়স্ক ভাতার তিন হাজার টাকা উত্তোলন করতে যান তিনি। এ সময় ব্যাংক থেকে তাকে এক হাজার টাকা দিয়ে ঋণ থাকায় দুই হাজার টাকা কেটে নেওয়া হয়। তখন নিজের দুঃখ কষ্টের কথা জানালেও তারা (ব্যাংক কর্মকর্তারা) টাকা ফেরত দেননি।

জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে প্রাণহরি দাসের ছেলে মেঘনাথ দাস তার বাবার নামে পাঁচ হাজার টাকা ঋণ  নেয়। তখন কর্মকর্তারা দুই হাজার টাকা খরচের কথা বলে রেখে দেন। অসহায় ওই বৃদ্ধ ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ২০০২ সালে কৃষি ব্যাংক তোরাবগঞ্জ শাখা থেকে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়। ওই নোটিশে সুদ-আসলসহ সাত হাজার ২০০ টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়।

সরজমিনে ব্যাংকে গিয়ে দেখা যায়, ব্যাংক নথিতে ২০০৯ সালে প্রাণহরি দাসের নামে ছয় হাজার টাকার ফের ঋণ নেওয়ার তথ্য রয়েছে। কিন্তু প্রাণহরি দাস এ ব্যাপারে কিছুই জানেন না।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ব্যাংক কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে ঋণ আদায় না করে নির্দিষ্ট সময় এলে ঋণ পরিশোধ দেখিয়ে ফের নতুন করে ঋণের খাতা খোলেন ওই বৃদ্ধের নামে। এভাবে বৃদ্ধের নামে তিনবার ঋণ গ্রহণ দেখায় ব্যাংক। এদিকে, পাঁচ বছর আগে প্রাণহরি দাসের ছেলে মেঘনাথের মৃত্যু হলে একা হয়ে পড়েন  অসহায় ওই বৃদ্ধ।

এ ব্যাপারে কৃষি ব্যাংক তোরাবগঞ্জ শাখার ব্যাবস্থাপক আবদুল কাইয়ুম বলেন, “দুইবার তার নামে ঋণ নবায়ন করা হয়েছে; লোকবলের অভাবে মাঠে গিয়ে ঋণের টাকা আদায় সম্ভব হয়নি। এ সময় তিনি বয়স্ক ভাতা থেকে ঋণ পরিশোধে ২২ হাজার টাকা কেটে নেওয়ার কথা স্বীকার করেন। আরও প্রায় দুই হাজার টাকা ব্যাংকের পাওনা রয়েছে বলে জানান তিনি। কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান মোল্লা বলেন, “বৃদ্ধের অভিযোগ পেয়ে ব্যাংক ব্যবস্থাপকের কাছে বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়েছে।”


সংবাদটি ‘কালের কণ্ঠ’ পত্রিকা হতে প্রাপ্ত। ছবিটি ‘বাংলানিউজ’ অনলাইনের