“আজ থেইকা তোর ধর্মের মায়রে বাপ”

বইয়ের বাঁধাই কারখানায় চাকরি করে ছেলেটা। অবশিষ্ট কিছু বই দিতে (মাথায় করে) একটি প্রেসের অফিশে গিয়েছে। একটু বেটাইমে গিয়েছে। কেউ তার কাছ থেকে বই বুঝে নিচ্ছে না।
অনেকক্ষণ বই মাথায় নিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে অবশেষে সে মাথা থেকে বই নামিয়েছে।
মিনিট পনেরো পরে সাড়া মিলেছে। ছেলেটা কষ্টে কঁকিয়ে ওঠে। স্বর একটু উচ্চ হতেই অফিশের ম্যানেজার তাকে শাঁসিয়ে দেয়। বলে, “ধর্ম কর্ম করস কিছু? অহন আইছস ক্যান? যা বই রাইখে ভাগ।”
ছেলেটা কিছুক্ষণ কটমট করে তাকিয়ে থেকে মনে মনে বলে, “হালা, চোরের মার বড় গলা! আজ থেইকা তোর ধর্মের মায়রে বাপ।”
ওর খুব ইচ্ছে করে চিৎকার করে কথাটা বলতে, তার আগে ম্যানেজারকে বলে, আপনের মালিকরে জিগান তো, বইয়ের মধ্যে দুই ফর্মা কাগজ ডুপ্লিকেট মারছে ক্যান?
ম্যানেজার কিছু বুঝে উঠতে পারে না, বলে, ডুপ্লিকেট মানে?
ডুপ্লিকেট মানে বুঝতাছেন না? ডুপ্লিকেট মানে নকল, সরকারি বইয়ে দেয়ার কথা ছিল ষাট গ্রাম কাগজ, সে তো তা দেয়ই নাই, দিছে পাঁচপান্নো গ্রাম, আরো দুই ফর্মা করে দিছে আরো খারাপ কাগজ। যান জিগায়ে আহেন।
ম্যানেজার এবার চটে যায়, এই পোলা, তাতে তোর কাম কী? ভাগ এইখান থেইকে।
ছেলেটাও এবার খুব রেগে যায়। চিৎকার করে বলে, আরে যা আগে ধার্মিক হালা, তোর মালিকরে জিগায়ে আয়। খানকির পোলা চোর হালা, তোর ধর্মের মায়রে বাপ।
ছেলেটি তাড়াতাড়ি বেরিয়ে আসতে চায়।
এবার অফিসের সবাই তটস্থ হয়। ছেলেটাকে মারতে মারতে বের করে। রাস্তার মানুষও জড়ো হয়। সবাই জেনে যায়, ছেলেটা ভীষণভাবে ধর্মাবমাননা করেছে।
‘ধার্মিকরা দুঃখে কাঁপতে থাকে’। কাঁপতে কাঁপতে ছেলেটার পেটে বুকে পিঠে লাথি মারতে থাকে। প্রায় দশ মিনিট ধরে চলে শ খানেক ধার্মিকের কিশোর ছেলেটির উপর তাণ্ডব।
ছেলেটা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।