রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বাংলাদেশে পণ্যমূল্যের ওপর কতটা প্রভাব পড়েছে

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ

রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি আমদানী করে গম, মসুরের ডাল, সরিষা, মটরের ডাল, তুলা এবং ভুট্টা। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে বছরে ৭৫ লাখ টন গমের চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন করে প্রায় ১১ লাখ টন (১৫%)। বাকিটা আমদানি করতে হয়। এর মধ্যে ৩৫ লাখ টন আসে রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে। এর মধ্যে শুধু ইউক্রেন থেকে আসে ২৩ লাখ টন। ২০২২ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ শুরুর পরপরই রাশিয়া কৃষ্ণসাগরে নৌ অবরোধ দিলে ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানি বন্ধ হয়ে যায়। কারণ ইউক্রেন থেকে ৯০% শস্য রপ্তানি হয় কৃষ্ণসাগর রুট দিয়ে। আমদানী ব্যাহত হওয়ায় বাংলাদেশের বাজারে খাদ্যশস্যের দামের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে আটা ময়দা দামে দিগুণ হয়েছে। বেড়েছে সম্পুরক অনেক পণ্যের দামও। ভুট্টার আমদানি ব্যাহত হওয়ায় পোলট্রি ফিড এবং মাছের খাদ্যের দাম বেড়েছে। ফলে ডিম, মাছ, মুরগীর দামও বেড়ে গিয়েছে। অন্যদিকে বিশ্বের ৪২% সূর্যমুখী তেল উৎপাদিত হয় ইউক্রেনে। তেলের সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় বিশ্বব্যাপী ভোজ্য তেলের দামও লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। সূর্যমুখী তেল উৎপাদনে ইউক্রেনের পরেই রয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেন এবং রাশিয়া সূর্যমুখী তেলের বিশ্বের বৃহত্তম সরবরাহকারী। ২০২২ সালে রাশিয়ান আক্রমণের ফলে ইউক্রেন থেকে সূর্যমুখী তেলের হঠাৎ বিশ্বব্যাপী ঘাটতি দেখা দেয়। ফলে ব্যবহারকারীরা বিকল্প তেলের দিকে ঝুঁকতে বাধ্য হয়। উন্নয়নশীল দেশগুলোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তেল হলো পাম তেল।

উন্নয়নশীল দেশ থেকে উদ্ভিজ তেলের প্রতিযোগিতায় ইউক্রেনের সংকটের প্রধান প্রভাব হলো উচ্চ মূল্য। সবচেয়ে বেশি সূর্যমুখী তেল আমদানী করে ভারত এবং চীন। তারা আমদানী ঘাটতি পূরণ করতে অন্য তেলের দিকে ঝুঁকছে, ফলে বাজারে ভোজ্য তেলের দাম বাড়ছে। রাশিয়ার চেয়ে এগিয়ে ইউক্রেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় সূর্যমুখী তেল রপ্তানিকারক। গত এক দশকে ইউক্রেন বিশ্বব্যাপী সূর্যমুখী তেলের ৪৫ থেকে ৫৫% রপ্তানি করে আসছে। রাশিয়া ১৫ থেকে ২৫% রপ্তানি করছে। উন্নয়নশীল দেশগুলো অন্যান্য ধরনের তেল যেমন পাম এবং নারকেল উৎপাদন করে, তারা ইউক্রেন এবং রাশিয়ার সাথে সরাসরি প্রতিযোগিতা করে না। কিন্তু যেহেতু উদ্ভিজ তেল একে অপরের পরিপূরক, তাই একটির দাম বাড়লে আরেকটিরও দাম বাড়ে।  

যুদ্ধ শুরুর পর কৃষ্ণসাগরে রাশিয়ার অবরোধের কারণে ইউক্রেনের বন্দরে রপ্তানির জন্য প্রস্তুত থাকা কোটি কোটি টন খাদ্যশস্য আটকা পড়েছিলো। এ অবস্থায় ইউক্রেন যাতে খাদ্যশস্য রপ্তানি করতে পারে, এজন্য জাতিসংঘ এবং তুরস্কের মধ্যস্থতায় ইউক্রেনের সাথে রাশিয়ার একটি চুক্তি হয়। চুক্তিটি কার্যকর হয় ১ আগস্ট ২০২২ তারিখে। চুক্তির ফলে রাশিয়া কৃষ্ণসাগরে তাদের অবরোধ শিথিল করে যাতে ইউক্রেন থেকে সমুদ্রপথের নিরাপদ করিডর দিয়ে খাদ্যবাহী জাহাজ চলাচল করতে পারে। এতে অগাস্ট থেকেই ইউক্রেনের তিনটি বন্দর থেকে বাদবাকি বিশ্বে নিরাপদে খাদ্যশস্য রপ্তানির পথ খুলে যায়। গত ১৭ নভেম্বর চুক্তিটি নবায়ন করা হয়। ঐ সময় চুক্তির মেয়াদ ১২০ দিন বাড়ানো হয়েছিলো। যা শেষ হবে আসছে ১৮ মার্চে (২০২৩)। সমস্যা হচ্ছে ইউক্রেন চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে চাইলেও রাশিয়া কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছে। ফলে সংকট নতুন করে আবার ঘনিভূত হতে পারে। দাম বাড়ার কারণ হিসেবে আমদানীকারকরা বলছে, আগে যেখানে ইউক্রেন থেকে একটা জাহাজ আসতে সর্বোচ্চ এক মাস সময় লাগতো এখন রাশিয়ার বিভিন্ন পর্যবেক্ষণের কারণে জাহাজ আসতে লাগছে দুই মাস। সেক্ষেত্রে পরিবহন খরচ অনেক বেড়ে যাচ্ছে। খাদ্য রপ্তানির সূত্রে ইউক্রেন যেন কোনোভাবেই সাগর পথে অস্ত্র নিয়ে না আসতে পারে সেজন্য যে জাহাজে ইউক্রেন খাদ্যশস্য রপ্তানি করবে সেটি তুরস্কের ইস্তান্বুল বন্দরে এক দফা পর্যবেক্ষণ ও তল্লাশি করা হয়। জাহাজটি ইউক্রেন বন্দরে গিয়ে মালামাল বোঝাই করার পর আরেক দফা তল্লাশি চালানো হয়। এই সংকট এড়াতে বাংলাদেশের আমাদনীকারকদের উচিৎ এখনই বিকল্প বাজার খুঁজে বের করা।

গম রপ্তানিতে শীর্ষ পাঁচটি দেশের মধ্যে দুটিই হচ্ছে ইউক্রেন এবং রাশিয়া, ফলে এই দুই দেশে যুদ্ধ লাগায় গম আমদানীকারক দেশগুলো সংকটে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি গম আমদানী করে মিশর, নাইজেরিয়া, ইন্দোনেশিয়া, চীন এবং তুরস্ক। বাংলাদেশ যে পাঁচটি দেশ থেকে সবচেয়ে বেশি গম আমদানী করে তার মধ্যে রয়েছে ভারত, কানাডা, ইউক্রেন, অস্ট্রেলিয়া এবং রাশিয়া। এর মধ্যে বাংলাদেশ ৬৭% গম আমদানী করে ভারত থেকে। মূল সমস্যাটা হয়েছে ভারত বাংলাদেশে গম রপ্তানি বন্ধ করায়। এটা ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রতিক্রিয়া বলেই মনে করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ভারত আফগানিস্তানে বড় ধরনের খাদ্য সহায়তা দিয়েছে, যার মধ্যে গম অন্যতম। ভারত যদিও উৎপাদন সংকটের কথা বলে বাংলাদেশে গম রপ্তানি বন্ধ করেছে, বিপরীতে দেখা যাচ্ছে— ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ভারত রেকর্ড পরিমাণ গম রপ্তানি করেছে। এ পরিমাণ ৭ মিলিয়ন টন। এছাড়াও কোভিডকালীন সময়ে ভারত বিভিন্ন দেশে খাদ্য সহায়তা হিসেবে গম বিলি করেছে। দেশগুলোর মধ্যে আফগানিস্তান, কমোরোস, জিবুতি, ইরিত্রিয়া, লেবানন, মাদাগাস্কার, মালাউই, মালদ্বীপ, মায়ানমার, সিয়েরা লিওন, সুদান, দক্ষিণ সুদান, সিরিয়া, জাম্বিয়া এবং জিম্বাবুয়ে অন্যতম। ফলে বাংলাদেশ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, বিশেষ করে আটা ময়দার দাম নিয়ে যে সংকটে পড়েছে, এর সাথে কোভিড প্যানডেমিক, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং ভারতের কৌশলগত রাজনীতি দায়ী। দায় আছে বাংলাদেশের প্রধান প্রধান আমদানীকারক কোম্পানিগুলোর, যারা আমদানী অব্যাহত রাখলেও বিকল্প বাজার খুঁজে কম মূল্যে আমদানী করার মতো দক্ষতা দেখাতে পারছে না, অথবা তারা অধিক মুনাফা করার সুযোগটি লুফে নিয়েছে।

এদিকে করোনা অতিমারি পরবর্তী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবেলা করতে গিয়ে সরকার পড়েছে আরেক ধাক্ষায়। রপ্তানি ব্যয় মেটাতে সরকারের প্রয়োজন হয়েছে ঋণ। আইএমএফ থেকে এ ঋণ নিতে গিয়ে সরকারকে কিছু শর্ত পূরণ করতে হচ্ছে। সেই শর্ত পূরণের অংশ হিসেবেই আসলে সরকার জ্বালানি খাত থেকে ভর্তুকি তুলে নিতে বাধ্য হয়েছে। জ্বালানি খাত থেকে ভর্তুকি তুলে নেওয়ার অর্থ জ্বালানি ব্যয় বেড়ে সকল পণ্যের দাম বৃদ্ধ পাওয়া। তবে সরকারের এই অজুহাতের মধ্যেও কিছুটা ফাঁকি আছে। ২০১৪-১৫ অর্থ বছর থেকে ২০২০-২১ অর্থ বছর পর্যন্ত তেলের দাম নজিরবিহীনভাবে কম ছিলো। এই সাত বছরে বিপিসি তেল বিক্রি করে লাভ করেছিলো প্রায় ৪৭ হাজার কোটি টাকা। এরপর করোনা অতিমারি এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে তেলের দাম বেড়ে যাওয়ার সরকার বড় ধরনের ভর্তুকিতে পড়ে, এই ভর্তুকির টাকা লাভ থেকেই দেওয়া যেত, কিন্তু সমস্যা হলো বিপিসি বাধ্য হয়েছিলো টাকাটা অর্থমন্ত্রণালয়ে জমা দিয়ে দিতে। ঐ অর্থ তখন সরকার নিয়ে না নিলে এখন বিশ্ব বাজারে দাম বাড়ার কারণে বাড়তি ব্যয় যা হচ্ছে সেটা বিপিসি সামাল দিতে পারতো। জ্বালানি খাতের এ সমস্যাগুলোর সাথে অনেক বিশেষজ্ঞ দুর্নীতির একটি গভীর সম্পর্ক খোঁজেন। ২০২২ সালে নভেম্বরে এক বক্তৃতায় জাতীয় সংসদে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, জ্বালানি খাতে দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরা হবে। একইসাথে প্রতিমন্ত্রী বিএনপি সরকারের সময়ে জ্বালানি খাতে দুর্নীতির বিষয়টি তুলে ধরেন। সাধারণত জ্বালানি খাত নিয়ে দুর্নীতির কোনো চিত্র জনগণের সামনে নেই। গুরুত্বপূর্ণ এই খাতটি নিয়ে গণমাধ্যমও সবসময় একটি ধোয়াশার মধ্যে থাকে।

জ্বালানি খাতে দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরতে একটি উদাহরণ অন্তত উল্লেখ করা যায়— ২৪ জুলাই ২০২০ তারিখে যুগান্তরে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সরকারের ৫০ শতাংশ মালিকানাধীন একটি তেল কোম্পানির ২০০ কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করেছে দুর্নীতিবাজ একটি সিন্ডিকেট। চট্টগ্রামে অবস্থিত এ তেল কোম্পানির নাম স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেড (এসএওসিএল)। যুগান্তরের অনুসন্ধানে জানা যায়, সিন্ডিকেটটি অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে ঢাকায় এসএওসিএলের নামের সঙ্গে মিল রেখে আরেকটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করে এবং এ কোম্পানির নাম দেওয়া হয় এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেড (এওসিএল)। কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠার পর এসএওসিএলের পণ্য বিক্রি থেকে প্রাপ্ত চেক, ডিডি, ব্যাংক ড্রাফট জমা করা হয় এ কোম্পানির ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। সিন্ডিকেটটি আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠান খুলে নামে-বেনামে আত্মসাৎ করে ২০০ কোটিরও বেশি টাকা। আলোচ্য দুর্নীতির মহাযজ্ঞের মূল নায়ক এসএওসিএলের বেসরকারি অংশের এক প্রভাবশালী পরিচালক মিশু মিনহাজ। তিনিই এওসিএলের স্বত্বাধিকারী। তার নেতৃত্বেই পরিচালিত হয়েছে সিন্ডিকেট এবং তিনি একাই আত্মসাৎ করেছেন ১২৫ কোটি টাকা। এরকম দু’একটি খবর সামনে আসলেও জ্বালানি খাতের দুর্নীতির চিত্রটি থেকে যায় অন্ধকারে। ফলে বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির যে বর্তমান চিত্র তার জন্য শুধুমাত্র করোনা প্যানডেমিক বা ইউক্রেন-রাশিয়া দায়ী নয়। দেশের অভ্যান্তরীণ দুর্নীতি এবং দুর্নীতিবাজ সিন্ডেকেটও অনেকাংশে দায়ী।

দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, এই প্রচার গত কয়েক বছর ধরেই করা হচ্ছে। বিপরীতে খাদ্যপণ্যের দামও লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ ১ কোটি ৫ লাখ ৩৩ হাজার টন খাদ্য আমদানি করতে হয়েছে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলে এই আমদানী হওয়ার কথা নয়। খাদ্যপণ্যের মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি আমদানী করে ভোজ্য তেল এবং গম। ৭৫ লাখ টন গম আমদানী ব্যতিরেখে হিসেব করলে বাংলাদেশ কোনোভাবেই খাদ্যে এখনো স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। শুধু গম নয়, বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ চালও আমদানী করে থাকে। ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ শুধু চাল আমদানি করেছে ৮৫ কোটি ৯ লাখ ডলার। গম ১৮২ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। গত ১২ বছরে দেশে খাদ্য আমদানি ধারাবাহিকভাবে বেড়েছে।  সংরক্ষণের অভাবে দেশে বিপুল পরিমাণ কৃষিপণ্য প্রতিবছর নষ্ট হয়। বেশ কয়েকটি কৃষিপণ্য দেশে চাহিদার চেয়ে বেশি উৎপাদিত হয়। কিন্তু সেগুলো বিদেশের বাজারে বিক্রি করা যায় না। যেমন আলুর কথা বলা যায়। দেশে বর্তমানে বছরে প্রায় ১ কোটি টন আলু উৎপাদিত হয়। এর মধ্যে ২০ থেকে ৩০ লাখ টন আলু সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট হয়। বাংলাদেশে যে ধরনের ও জাতের আলু হয়, বৈদেশিক বাজারে এর চাহিদা কম। ফলে তা রপ্তানি করা যায় না। এ সংকটগুলো কাটিয়ে উঠতে পারলে খাদ্য আমদানী রপ্তানিতে একটা ভারসাম্য আসতে পারে। অর্থাৎ বাংলাদেশ যে পরিমাণ খাদ্যপণ্য রপ্তানি করে তার চেয়ে অনেক বেশি আমদানী করে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ভোজ্য তেলের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার পিছনে বিশ্বের অন্যতম প্রধান দুই ভোজ্য তেল উৎপাদনকারী দেশের মধ্যে যুদ্ধ যেমন দায়ী, একই সাথে দায়ী ইন্দোনেশিয়ার পাম ওয়েল রপ্তানি হঠাৎ করে বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়টি। রাশিয়া ইউক্রেন থেকে বিশ্ববাজারে তেল সরবারাহে বাধা সৃষ্টি হওয়ায় ২৮ এপ্রিল ২০২২ থেকে ইন্দোনেশিয়া পাম তেল রপ্তানি বন্ধ করে দেয়, মূলত এরপর থেকেই বাংলাদেশে ভোজ্য তেলের দাম হুহু করে বেড়ে যায়।

ভৌগলিক বাস্তবতা, দক্ষতা এবং অবকাঠামোগত কারণে প্রয়োজনীয় সকল খাদ্যপণ্য একটি দেশ উৎপাদন করতে পারবে না, এটাই বাস্তবতা। কিন্তু কোনো দেশ যদি এক্ষেত্রে আমদানী রপ্তানিতে একটি ভারসাম্য বজায় রাখতে না পারে, তাহলে তৈরী হয় মূল সংকট। বাংলাদেশে যে খাদ্যপণ্যগুলো বেশি উৎপাদিত হয় সেগুলো আরো বেশি করে উৎপাদন করে বিশ্ব বাজার ধরতে না পারলে এবং আমদানীকৃত খাদ্যপণ্যের নির্ভরশীলতা কমাতে না পারলে এ সংকট সহজে কাটবে না। উৎপাদন নীতি ঠিক করতে পারলে বাংলাদেশে বাৎসরিক যে পরিমাণ গম এবং ভুট্টা প্রয়োজন হয়, তার প্রায় সবটুকু অভ্যন্তরীণভাবে উৎপাদন করা সম্ভব বলে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন। 


ফলোআপ নিউজ ডেস্ক