Headlines

ভূমি অফিসের ঘুঘুর বাসায় নজরদারিতে এবার এসিবি

পশ্চিমবঙ্গ সরকার

ভূমি রাজস্ব বিভাগ অফিসের কর্মী-অফিসারদের একাংশের বিরুদ্ধে ওঠে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ, দুর্নীতির চক্র ভাঙতে কঠোর হচ্ছে নবান্ন।


হাইলাইটস

  • জমির মিউটেশন অথবা জমির হাতবদলের মতো কাজকর্ম করতে গিয়ে সরকারি অফিসে সাধারণ নাগরিকদের ভোগান্তির অভিযোগ ওঠে প্রতিনিয়তই।
  • অনেক ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তর, বিশেষ করে ব্লক ভূমি ও ভূমি রাজস্ব বিভাগ বা বিএলএলআরও অফিসের কর্মী-অফিসারদের একাংশের বিরুদ্ধে ওঠে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগও।
  • এই দুর্নীতির চক্র ভাঙতে কঠোর হচ্ছে নবান্ন।

জমির মিউটেশন অথবা জমির হাতবদলের মতো কাজকর্ম করতে গিয়ে সরকারি অফিসে সাধারণ নাগরিকদের ভোগান্তির অভিযোগ ওঠে প্রতিনিয়তই। অনেক ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তর, বিশেষ করে ব্লক ভূমি ও ভূমি রাজস্ব বিভাগ বা বিএলএলআরও (BLRO) অফিসের কর্মী-অফিসারদের একাংশের বিরুদ্ধে ওঠে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগও। দ্রুত কাজ সম্পন্নে সাধারণ মানুষ অনেক সময়ে সেই টাকা দিয়েও দেন। এই দুর্নীতির চক্র ভাঙতে কঠোর হচ্ছে নবান্ন (Nabanna)। সূত্রের খবর, ভূমি-অফিসে নজরদারিতে রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখার (ACB) আধিকারিদের ব্যবহার করতে চান নবান্নর শীর্ষ কর্তারা। অবৈধ বালি খাদান, ইটভাটা চালাতেও স্থানীয় প্রশাসনের একটা অংশকে ব্যবহার করছে বেআইনি কারবারিরা। সেই দুর্নীতি ঠেকাতেও মাঠে নামবেন এসিবি’র অফিসাররা। নবান্নের এক শীর্ষ কর্তার দাবি, ‘দুর্নীতি ও সাধারণ মানুষের হয়রানি রোখার পাশাপাশি রাজস্ব বাড়ানোও এই অভিযানের বড় লক্ষ্য। ব্লক, মহকুমা বা জেলা স্তরে প্রশাসনের একটা অংশের সঙ্গে মিলে একশ্রেণির দালাল বেআইনি পথে নিজেদের আয়ের রাস্তা বের করেছে। কিন্তু তাতে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। আবার দুর্নামের ভাগিদার হতে হচ্ছে প্রশাসনকেই। এসিবি কয়েকটি জায়গায় অভিযান চালিয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত সরকরি কর্মী-অফিসার এবং দালালদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে এই প্রবণতা কমবে।’

সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী (Hari Krishna Dwivedi) জেলা ভূমিরাজস্ব আধিকারিদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে নবান্নের নয়া সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। মুর্শিদাবাদ, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান-সহ বেশ কয়েকটি জেলায় ভূমি দপ্তরের কাজকর্ম নিয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। নবান্ন সূত্রের খবর, তিনি মনে করিয়ে দেন, ঠিকমতো খাজনা আদায় হচ্ছে না। সরকারি জমিকে যথেচ্ছ ভাবে বেসরকারিতে রূপান্তর করা হচ্ছে। বহু এলাকায় বেআইনি ইটভাটা চলছে। এ সব ক্ষেত্রে বিএলএলআরওদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মুখ্যসচিব। এই সব বিষয়েই এ বার নজরদারি চালাবে এসিবি। দেখা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরে মহিষাদল, নন্দকুমার-সহ একাধিক এলাকায় ১৪৭টি বেআইনি ইটভাটা চলছে। মুর্শিদাবাদ, জলপাইগুড়ি, বীরভূমেও বেআইনি ভাটার রমরমা। রাজ্য সরকার বেআইনি ইটভাটাকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার নীতি গ্রহণ করার পরেও তা সর্বত্র কার্যকরী হচ্ছে না।

বৈঠকে ভূমি-আধিকারিকদের উদ্দেশে মুখ্যসচিব বলেন, ইটভাটার অনুমতি দেওয়া নিয়ে অনলাইন ব্যবস্থা চালু রয়েছে। তবুও সে ভাবে তা কার্যকরী করা হচ্ছে না কেন? এ ব্যাপারে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। যে সব বেআইনি ইটভাটাকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া সম্ভব, তা দেওয়া হোক। না হলে বন্ধ করার জন্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। বালি খাদানের নিলাম নিয়েও মাইনস অ্যান্ড মিনারেল কর্পোরেশনের সাহায্যে অনলাইন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। তার পরেও বেআইনি বালি খাদান পুরোপুরি বন্ধ করা যায়নি। মুখ্যসচিব সাফ জানিয়ে দেন, রাজস্ব আদায় বাড়াতেই হবে। ইটভাটার কাছে প্রচুর টাকা বকেয়া। মার্চের মধ্যে তা আদায় করতেই হবে। প্রসঙ্গত, পুরুলিয়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিএলএলআরওদের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। ভূমি দপ্তরকে বার বার সতর্কও করা হয়েছে। তার পরেও জমির পাট্টা, রেকর্ড নিয়ে হয়রানির শেষ নেই। বিভিন্ন জেলায় বেআইনি ইটভাটাও বন্ধ করা যায়নি।