রংপুরে ‘সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংহতি কমিটি’র প্রতিবাদ সমাবেশ

13692630_644484872374251_1987998554677835848_n

রাইহান রনো; রংপুর; ১৫ জুলাই ২০১৬ঃ ভূমির অধিকারের জন্য আন্দোলনরত আদিবাসী-বাঙালিদের ওপর হামলা, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং নারীসহ চারজনকে গুলিবিদ্ধ ও মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারের প্রতিবাদে গতকাল ১৪ জুলাই মঙ্গলবার রংপুরের পায়রা চত্বরে ‘সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংহতি কমিটি, রংপুর’ এর পক্ষ থেকে এক প্রতিবাদ সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে।  জনাব রায়হান কবীরের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশ বক্তব্য রাখেন, মিজানুর রহমান মিজান, সদস্য, বাসদ, রংপুর, প্রদীপ কুমার, সম্পাদক,  বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, রংপুর, যোনায়েদ, সদস্য, ছাত্রফ্রন্ট, রংপুর, প্রত্যয়ি মিজান, সদস্য, ছাত্র ফেডারেশন, রংপুর, হিরন্ময় বর্মন, লিপি দেবগুপ্ত, নাহিদা আকতার, দীপক রায়, অংকুর, সোহাগ শর্মা, রবিউল, আজিজুল প্রমুখ।
সমাবেশের স্বাগত বক্তব্যে লিপি দেবগুপ্তা বলেন, ১৯৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান সরকার রংপুর (মহিমাগঞ্জ) চিনিকলের জন্যে ১৫ টি আদিবাসী গ্রাম এবং ৫ টি বাঙালী গ্রাম উচ্ছেদ করে এবং তাদের সাকুল্যে ১৮৪২.৩০ একর ফসলি জমি অধিগ্রহণের নামে কোন ক্ষতিপূরণ না দিয়ে জোর করে দখল করে নেয়। পাকিস্তান ইন্ডাট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের সাথে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকারের যে লীজ চুক্তি হয় তাতে উল্লেখ ছিল- যদি দখল করা জমি চিনি কলের প্রয়োজনে ব্যবহার করা না হয় তবে তা প্রাদেশিক সরকারের কাছে ফেরত দেবে এবং প্রাদেশিক সরকার সেসব জমি আবার তাদের পূর্বতন মালিকদের কাছে ফেরত দেবে।
মিজানুর রহমান মিজান বলেন, গরীব নিরীহ আদিবাসীদের তাদের জমিজামা থেকে অন্যায় ভাবে উচ্ছেদ করা হয়, এখন তাদের প্রাপ্য জমি তাদের দেয়া হচ্ছে না। প্রদীপ কুমার বলেন, অন্যায়ভাবে সেখানকার স্থানীয় এমপি কর্তৃক আন্দোলনকারীদেও উপর হামলা করা হয় এবং আহতদের গ্রেফতার করা হয়। প্রত্যয়ি মিজান বলেন, সরকার প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে জোর জুলুম ও নির্যাতনের মাধ্যমে গরীব ও সাধারণ মানুষের অধিকার হরণ করছে। এর জন্য দরকার প্রতিটি স্তরের মানুষের মম্মিলিত প্রতিরোধ। বাগদাফার্ম এলাকা সরেজমিনে ঘুরে আসা হিরন্ময় বর্মন বলেন, আমি আন্দোলনকারী ও স্থানীয় মানুষের কাছ থেকে শুনেছি তাদের কথা, তাদের আন্দোলনের ন্যায্যতা। আন্দোলনকারীরা ঠিকানাহীন, তাই তাদের বাপদাদার সম্পত্তি পাবার অধিকার তাদের আছে।
রায়হান কবীর বলেন, গত ১২.০৭.২০১৬ খ্রিঃ মঙ্গলবার গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে ভূমির অধিকারের জন্যে আন্দোলনরত আদিবাসী-বাঙালীদের উপর স্থানীয় সাংসদ আবুল কালাম আজাদের প্ররোচনায় ও নেতৃত্বে হামলা, নির্যাতন ও গুলি চালানো হয়। তার পেটোয়া বাহিনী কর্তৃক বেশ কিছু বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়। আদিবাসীরা এতে বাধা দিলে চারজন আদিবাসী গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসারত অবস্থায় পুলিশ কর্তৃক মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার হয়। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং তাই আমাদের দাবী- চুক্তি ভঙ্গ হওয়ায় অবিলম্বে আদিবাসী-বাঙালিদের প্রাপ্য জমি বুঝিয়ে দিতে হবে। মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে ও আহতদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। ক্ষমতালোভী স্থানীয় এমপি আবুল কালাম আজাদকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
প্রতিবাদ সমাবেশের সঞ্চলনা করেন, প্রপদের সদস্য, নূরে আজম দ্বীপু।