বিশ্বব্যাপী পাওয়া যায় এমন একটি জনপ্রিয় ফল কলা। কলা এমন একটি ফল, যা পুষ্টিতে ভরপুর এবং সহজপাচ্য। শরীরে দ্রুত শক্তি যোগায়, এজন্য দেখা যায় খেলার মাঠে খেলোয়াড়দের কলা খেতে দেওয়া হয়। কলা বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে, রোগ প্রতিরোধ করে।
প্রতি ১০০ গ্রাম পরিমাণ কলায় আছে ১১৬ ক্যালোরি, ক্যালসিয়াম ৮৫ মি.গ্রা., আয়রন ০.৬ মি.গ্রা, অল্প ভিটামিন সি, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ৮ মি.গ্রা., ফসফরাস ৫০ মি.গ্রা., পানি ৭০.১%, প্রোটিন ১.২%, ফ্যাট/চর্বি ০.৩%, খনিজ লবণ ০.৮%, আঁশ ০.৪%, শর্করা ৭.২%।
কলা খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা
♣ কলা সারা বছর এবং সব জায়গাতেই পাওয়া যায়। আমরা যে খাবার খাই তা মূলত শরীর গ্রহণ করে পুষ্টিগুণের কারণে, শরীরের ভালো লাগা মন্দ লাগা নির্ভর করে এই খাবারের ওপর। কলা এ কাজটি করে খুবই দ্রুত, যার ফলে কলা খাওয়ার পর মেজাজ ভালো হতে খুব বেশি সময় লাগে না। যখন কোনো কিছু খেতে ইচ্ছে করে না এবং হজম হয় না তখন কলা খুবই প্রয়োজনীয় একটি খাবার।
♣ কলা শুধু শরীরের ভেতরকেই ভালো রাখে না, বাইরের সৌন্দর্যকেও বাড়িয়ে তোলে৷ কলা ছোট-বড় সবার জন্যই উপাদেয়। হলুদ রং-এর কলা বা পাকা কলা শক্তি বর্ধন তো করেই, পাশাপাশি এটা পাকস্থলীকে সক্রিয় রাখতেও সাহায্য করে।
♣ অতিরিক্ত জ্বর কিংবা হঠাৎ ওজন কমে গেলে শরীর দুর্বল হয়ে যায়। এ সময়ে কলা খেলে শরীরে শক্তির সঞ্চার হয় এবং তাড়াতাড়ি দুর্বলতা কেটে যায়।
♣ কলায় প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম আছে। তাই হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য কলা একটি ভীষণ উপকারী ফল।
♣ কলায় প্রচুর আয়রন আছে যা রক্তে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সাহায্য করে। ফলে যারা রক্ত শূন্যতায় ভুগছেন তাদের জন্য কলা খুবই উপকারী একটি ফল।
♣ যারা নিয়মিত বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যায় ভুগছেন তারা প্রতিদিন একটি করে কলা খান ভরা পেটে। কলা বুক জ্বালা পোড়া কমায় এবং পাকস্থলীতে ক্ষতিকর এসিড জমতে দেয় না।
♣ প্রায় দুই মিনিট ধরে কলার খোসা দাঁতের উপর ঘষলে এটি দাঁতের উপরে থাকা ময়লা ও দাগ দূর করে দাঁতকে সাদা করে তুলবে। মিনারেলে ভরপুর কলার খোসা দাঁতকে সাদা ঝকঝকে করে তুলতে পারে।
♣ ডায়রিয়া হলে শরীরে পানি শূন্যতা তৈরি হয় এবং শরীর থেকে প্রয়োজনীয় পটাশিয়াম বের হয়ে যায়। এ সময়ে কলা খেলে শরীরের পটাশিয়ামের অভাব দূর হবে এবং হার্টের স্বাভাবিক কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
♣ কলায় ফ্যাটি এসিডের চেইন আছে যা ত্বকের কোষের জন্য ভালো এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। এছাড়াও এই ফ্যাটি এসিড চেইন পুষ্টি গ্রহণ করতেও সাহায্য করে।
♣ কলায় প্রচুর পটাশিয়াম থাকে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য ভালো। স্ট্রোক প্রতিরোধের জন্যও কলা উপকারী।
♣ ধূমপান ছাড়তে হলে বেশি করে কলা খান। কারণ কলায় উপস্থিত ভিটামিন বি৬, বি১২, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম শরীরে নিকোটিনের প্রভাব দূর করতে সহায়তা করে।
সতর্কতা
খালি পেটে খাওয়া মোটেও ভারো নয়। যেহেতু কলায় উচ্চ মাত্রায় পটাশিয়ার এবং ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে, তাই খালি পেটে কলা খেলে এটা শরীরে পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়ামের ভারসাম্যহীনতা তৈরি করতে পারে। তাছাড়া যেকোনো ফল খালি পেটে খেলে গ্যাসস্ট্রিকের সমস্যা বাড়তে পারে, যদিও কলা গ্যাসস্ট্রিক প্রতিরোধ করে, তারপরেও খালি পেটে খেলে সমস্যা হতে পারে।