ধর্মনিরপেক্ষ মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাগরণ তৈরি করতে খোলা হয়েছে একটি ফেসবুক পেজ

follow-upnews
0 0

একটি জাতির পরিচয় হতে পারে ভাষাভিত্তিক অথবা ভৌগলিক, কোনোভাবেই ধর্মীয় পরিচয়ে কোনো জাতির জাতিসত্তা গড়ে উঠতে পারে না।


ধর্মনিরপেক্ষতা অর্থ পার্থিব, ইহজাগতিকতা বা ধর্মহীনতা নয়। ধর্মনিরপেক্ষতা অর্থ ‘ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার’, নিজ নিজ ধর্ম নিজ নিজ অবস্থান থেকে অন্যকে বেকায়দায় না ফেলে স্বাধীনভাবে পালনের সুযোগ ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে সবার রয়েছে। আবার যে কোনো ধর্ম পালন করতে চায় না সেও বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের সমান অংশীদার।
ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের মূল কথা ধর্মকে রাজনীতি এবং ব্যবসার হাতিয়ার করা যাবে না, ধর্ম কখনো সম্রাজ্যবাদের হাতিয়ার হবে না। ধর্ম থাকবে ব্যক্তির অলৌকিক বিশ্বাস, প্রশান্তি এবং আশ্রয় বা শেষ অবলম্বন হিসেবে।
‘ধর্ম নিরপেক্ষতা’ আমাদের রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতির একটি, তাই রাষ্ট্রের একজন নাগরিক হিসেবে এটি অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। ব্যক্তির অপকর্ষ এবং অন্ধত্ব যে পর্যায়েই থাকুক না কেন ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে প্রত্যেককে ধর্মনিরপেক্ষ ভাবার সুযোগ রয়েছে, যেহেতু আমরা সংবিধান মেনে চলতে বাধ্য।
একজন ধর্মনিরপেক্ষ মানুষ অবশ্যই অসাম্প্রদায়িক এবং মানবিক মানুষ, তার কাছে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, ইহুদি; ধনী, দরিদ্র সবাই নিরাপদ।
ফলে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা, আধুনিক রাষ্ট্রকাঠামোর এবং সভ্য সমাজের প্রধানতম তাত্ত্বিক অবলম্বন এবং পরীক্ষিত শক্তি হিসেবে আমাদের চাওয়া সমাজের প্রতিটি মানুষ ধর্মনিরপেক্ষ হবে এবং শুদ্ধতম মানুষ হিসেবে সে ব্যক্তিজীবন এবং সামাজিক জীবনে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ এবং মানবতাবাদের চর্চা করবে।

ধর্ম নিরপেক্ষ মানবিক বাংলদেশ

ধর্মনিরপেক্ষ মানবিক বাংলাদেশ

অনেক বাধাবিপত্তি, ধর্মান্ধতা, হিংস্রতা, পশ্চাদপদতার পথ পেরিয়ে মানববিশ্ব আজ মহত্ব এবং মানবতার চর্চায় উদ্যোগী হয়েছে, মত প্রকাশ এবং ব্যক্তি স্বাধীনতার পথ যেমন আধুনিক সভ্য সমাজে প্রশস্ত হয়েছে; একইসাথে বস্তুগত প্রয়োজন একসাথে মেটানো, মৌলিক চাহিদায় সবার অধিকার এবং অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে।
বিশ্বসভ্যতার মূলভাবটি এখন আর কোনো একক রাষ্ট্রকাঠামোর মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, বিশ্বায়নের এ যুগে সব ভালো সবার, পাশাপাশি পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের অন্ধত্ব এবং হিংস্রতা দূর করার দায়িত্বটিও সবার। সে বিবেচনায় আমরা বিশ্বনাগরিক, তবে আলো ফোটানোর কাজটি শুরু করতে হয় নিজস্ব বলয় থেকে, আমরা বুঝতে পেরেছি, অনুভব করতে বাধ্য হয়েছি যে বাংলাদেশ নামক এ দেশটিতে আলোকবর্তিকা হাতে নেওয়ার কাজটি আমাদের করতে হবে। এ দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার এখন আর সুযোগ নেই, ঘুমিয়ে থাকলে দেশটি চলে যাবে হিংস্র হায়েনাদের ভয়ঙ্কর নখরের নিচে, বৃথা যাবে ত্রিশ লক্ষ শহীদের আত্মত্যাগ।
শুধু অনুভব করে বা কথা বলে ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলব্যাপী ছড়িয়ে পড়া এ অন্ধত্ব মোকাবেলা করা যাবে না। কাজ করতে হবে। ব্যক্তিগত বিশ্বাস, মত এবং পথের উর্দ্ধে উঠে সঙ্ঘবদ্ধ হতে হবে; হাল ধরতে হবে কালের চাকার। ধর্মান্ধতা, ধর্মব্যবসা, সাম্প্রদায়িকতা, উগ্রবাদ এবং জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং বিজ্ঞানভিত্তিক, আধুনিক এবং ধর্মনিরপেক্ষ মতামত গড়ে তুলতে হবে। নতুন প্রজন্মের কাছে বার্তাগুলি পৌঁছে দিতে হবে। এ দায়িত্ব কারো একার নয়, বরং সবার।
’৭২ এর সংবিধানের চার মূলনীতি পূর্ণাঙ্গরূপে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা, মুক্তিযুদ্ধের মৌলচেতনার ভিত্তিতে রাষ্ট্র এবং সমাজ গঠনে উদ্বুদ্ধ হওয়া, পরিশেষ ধর্মনিরপেক্ষ মানবিক সমাজ গড়ে তোলাই আমাদের
মূল লক্ষ্য। এই পেজটি সে লক্ষ্যেরই সারথী।


Next Post

তার শেষ কথা শোনা হলো না আমার // আলী আকবর টাবী

প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট, হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছিলেন। আমাদের দেখে মুখের মাস্কটি খুলে ফেললেন। শ্বাসকষ্ট যেন আরও তীব্রতর হয়ে উঠলো।দেশের সংকটের কথা বললেন, সংকট থেকে উত্তরণের পথও বাতলে দিলেন। এরপর তার ব্যবহার্য অক্সিজেন সিলিণ্ডার এবং বাকী জিনিসগুলো কীভাবে আর্ত ও বিপন্ন মানুষের মধ্যে বিতরণ করতে হবে সে বিষয়েও ফিরিস্তি দিলেন। বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে মৃত্যু […]
আলী আকবর টাবী

এগুলো পড়তে পারেন