একসময় যখন ল্যান্ডলাইনের প্রচলন ছিল তখন টেলিফোন সেটের সবগুলো বাটনের সঙ্গে আমাদের পরিচয় ছিলনা। তখন শুধু এক থেকে নয় এবং শূন্য বাটনের সঙ্গেই আমাদের সাধারণ মানুষের পরিচয় ছিল।
তবে যারা ফোন লক করে রাখতেন তাদের অবশ্য টেলিফোন সেটের হ্যাশ (#) এবং স্টার(*) বাটনের সঙ্গেও পরিচয় ছিল।
পরবর্তীতে এ দুইটি বাটনের সঙ্গে পরিচয় ঘটে যখন আমদের দেশে মোবাইল ফোন আসে। মোবাইল ফোনে রিচার্জ করতে এবং ব্যালেন্স দেখতে এ দুইটি বাটনের প্রয়োজন হতো।
তবে গত কয়েক বছরে ডায়াল করা ছাড়াও আমরা হ্যাশ (#) বাটনের একটি ব্যবহার দেখছি। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আর তা হলো, যেকোনো ইভেন্ট বা বিষয়কে একতাবদ্ধ করতে এর ব্যবহার। প্রায়ই আমাদের চোখে পড়ে হ্যাশট্যাগ (#ট্যাগ) সম্বলিত স্ট্যাটাস বা ছবি।
অনেকেই বুঝতে পারেন না, এই স্ট্যাটাস বা ছবির পেছনে কেন আঠার মতো লেগে আছে হ্যাশ (#)।
আসলে এটাকে মাইক্রোব্লগিং এর ভাষায় বলা হয় হ্যাশট্যাগ। এটা একই ধরনের বক্তব্যকে একীভূত করে। যেমন, সামনে আসছে একুশের বই মেলা। এখন যদি কেউ মেলা সম্পর্কে তথ্য বা কোনো বক্তব্য দিতে ব্যবহার করে #একুশেরমেলা তবে বুঝতে হবে এই সম্পর্কে আরো তথ্য আছে এই হ্যাশট্যাগে।
আপনি যখন কোনো শব্দের শুরুতেই হ্যাশট্যাগ (#ট্যাগ) ব্যবহার করবেন তখন সেটি নীল বর্ণ ধারণ করবে। অর্থাৎ সেটা একটা লিংক-এ পরিণত হবে। পরবর্তিতে এই রিলেটেড সকল স্ট্যাটাস বা ছবি যদি একই হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে দেয়া হয় তবে সামাজিক মাধ্যমের ব্যবহারকারীরা সহজেই সব এক জায়গাতে পাবেন। অর্থাৎ এটি সবার মতামত এক করার একটি উদ্যোগ।
তবে একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হয়, হ্যাশট্যাগ ব্যবহারের সময় ব্যবহৃত শব্দে যাতে কোনো স্পেস না থাকে। স্পেস থাকলে এটা লিংক তৈরি করতে পারে না।
সাধারণত কোনো বিষয়ে প্রতিবাদ জানাতে হ্যাশট্যাগের ব্যবহার বেশি। ইদানিং অবশ্য এর বিভিন্ন ব্যবহার বেড়েছে। আজকাল সিনেমার প্রচারেও এর ব্যবহার ব্যাপক ভাবে হচ্ছে। আবার কেউ কোনো বিষয়কে প্রাধান্য দিতেও একই কাজ করেন। কেউবা শুধুই নিজেদের ভেতর আড্ডার জন্যেও এমনটা করতে পারেন।
হ্যাশট্যাগের ব্যবহার শুরু হয় মূলত মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারে। পরে ২০১৩ সালের জুনে ফেসবুকেও এর ব্যবহার শুরু হয়। এখন গুগলপ্লাসেও এর ব্যবহার দেখা যায়। হ্যাশট্যাগের জনপ্রিয়তা এতো বেড়ে যায় যে শেষ পর্যন্ত ‘হ্যাশট্যাগ’ শব্দটি ২০১৪ সালের জুন মাসে অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারিতেও জায়গা করে নেয়।