কেন ওরা মৌমাছি পোষ মানায় মৌমাছিরা কি জানে না তা?
তবু আমার মতো বুঝতে চায়নি তোমাদের দানবিয়তা।
বিন্দু বিন্দু করে জমানো সম্পদ সব হারিয়ে
স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে পালিয়ে বাঁচে,
আবার নাচে! একই উপায়ে ঘর বানায়, ঘর সাজায়, হায়! আবার সব হারায়।
স্বজন বাড়ে, বৃদ্ধ মৌমাছি তবুও ঘর গড়ে!
মানুষ ভাবে মৌমাছি বোকা, মৌমাছি ভাবে মানুষ বোকা।
মধু নয়, মৌমাছিরা চায় স্বজন,
মধুর চাকটা শুধু ওদের ভালোবাসার ফাঁদ, ক’দিনের খাদ্য,
বলো— মানুষেরা এসব জানে ক’জন?
আমি না মানুষ, না মৌমাছি,
আমি না দানব, না পরিশ্রমী, বিস্ময়— এখনো যে টিকে আছি!
একটু মেঘ মেঘ করছে যেন,
হয়ত কোনো আকাশ ভেঙেছে ঝড়ে,
আমার? তমসাচ্ছন্ন, ভেতরে; বাইরে; এবং ঘরে।
ভেঙে যাচ্ছে হৃদয়, বোধে এবং বিপাকে,
আমি ঠিক বুঝতে পারি না—
পৃথিবীতে এখন ঠিক বলবো কাকে?
আমারও এক ঈশ্বর আছে—
আমি অভিমানী সে অহংকারী, অথবা ঠিক বিপরীত,
হয়ত আমি জানি না,
কিচ্ছু জানি না, হতে পারে আমার ঈশ্বর শুধুই এক নৈঋত।
হাঁটছি, প্রাতঃভ্রমণ নয়, আবার কোনো গন্তব্যও নেই, তবু হাঁটছি—
ধর্মতলা থেকে তালতলার দিকে।
দু’জন মানুষ নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে
ঠিক যেখান দিয়ে আমার চলে যেতেও ভয়;
আচ্ছা, ওদের দেহের ভেতরে এসব নেই—
যকৃত, খাদ্যনালী, হৃদপিণ্ড, অগ্ন্যাশয়?
মানে একটা মানুষের যা যা থাকে?
এই কবুতরগুলো আবার ভিন্নরকম, মৌমাছিদের মতো নয়,
কবুতরেরা মানুষেরে পায় না কখনো ভয়,
কারণ, ওরা জানে মানুষেরা পরম যত্নে ওদের পেতে চায়,
কারণ, খেতে হয়।
আমাকেও একদিন কেউ যেমন পেয়েছিলো ক্ষুধায়-ভালোবাসায়,
অথবা অন্যথায়, মানুষের সবটুকু কি আসলে কখনো জানা হয়?
এখনো সে আছে রাক্ষসের বেশে,
নাকি রাক্ষসই এসেছিলো মানুষ হয়ে পাশে? আমি জানি না।
মোড়টা পেরোলেই একটা মন্দির!
মানুষ এমনই নিষ্ঠুর যে,
নিজেরা পূণ্য পেতে ভগবানেরে থাকতে বাধ্য করে যেথায় সেথায়,
মানুষের কাছে চিরকালই ঈশ্বর এমন অসহায়!
ফুলের দোকানদার,
আচ্ছা, সে কি কখনো একটি ফুলকে ভালোবাসে?
তবু দেখো—
এমনই একটি ফুল হাতে কীভাবে সারাক্ষণ সে কেঁদে যাচ্ছে হেসে!
এই ফুলটার মধ্যে একটা ভুল আছে,
ভুলটার জন্য দোকানীর মায়া আছে,
নিজে শূন্য, তবু একটা আকাশেরও যেমন ছায়া আছে।
সামনে এগোতেই দেখি একটি মাংসের দোকান,
এটা ইন্ডিয়া, তাই গরুর মাংস হওয়ার জো নেই,
খাসিরও চার পা এবং তৃণভোজী, কিন্তু অজুহাত একটাই—
খাসির বিচিতে কোনো ভগবান বাঁধা নাই।
এরপর আবার একই,
একটি শিশু রাস্তায় ঘুমিয়ে আছে পদদলিত হয়ে,
তাতে কোনো সমস্যা হয় না, না ঢাকার, না কোলকাতার;
সমস্যা শুধু ভগবান আর আল্লাহর।
আরো অগ্রসর হবো? হই।
এটা বিখ্যাত সেন্ট টেরেসা গীর্জা,
একই বিকার, কিন্তু অভিজাত, উন্নত, ভিন্ন প্রকার,
বোঝা যায় না, এটা এখন ভীষণ বিভ্রান্তিকর!
আর যাবো না, হাটার শক্তি শেষ,
কোনো শপথ নেবো না,
জানি— সবই একদিন পৃথিবীতে আপনা থেকে হবে নিঃশ্বেস।