চাইলাম ট্যায়া করলেন দোয়া!
ক্ষিধে লাগছে, অহন কি এই দোয়া খায়া যাইবো?
শোন, উপরের দিক তাকায়ে তিনবার নিঃশ্বাস নে,
এইবার হরি বল, হরে কৃষ্ণ বল…
মানে? আমি কি হিন্দু নাকি?
গলায় কী একটা মালা দ্যাখতাছি,
এর লাগে ভাবছিলাম তুই হিন্দু।
না, এই মালাডা দরবেশে দেছে।
শালা, বেশরিয়তে কাজ করোস তোরা!
আচ্ছা, কমু না, কাউরে আর জ্ঞান দিমু না।
তাহলে তুই যা তাই বল।
তাতে কি ক্ষিধে মেটবে?
এ পর্যন্ত কয় হাজারবার ডাকলাম,
কাজ হইছে কোনো? ঘরে খাওন নেই,
দেইখ্যা যান ছোট বাচ্চাডার অবস্থা!
মায়ের দুধ খাইব কোত্থেকে,
মায় খাইতে পারলে না দুধ হইবো?
কাম করস না কেন?
করতেছিলাম, বাঁধাই কারখানার কাটিং ম্যান ছিলাম,
এই দ্যাহেন, দুই বছর হইলো এই হাতডা নেই,
মালিক এক পয়শাও দেয় নাই,
এইভাবে চাইয়ে-চিন্তে চিকিৎসা হইছি,
কাটছিলো কিন্তু মেশিনের দোষে,
তাতে কি? দশ বছর চাকরি করেও
আমার হাতে এক পয়শা নেই,
উল্টে হাত কাইটা দেনা হইছি,
বয়শ কম হয় নাই তো, বায়ান্নো চলে,
কাজই তো করলাম সারাটা জীবন,
চল্লিশ বছরের কম না!
আপনারা সরকারি চাকরি করেন ত্রিশ বছর,
তাতেই কত কী!
বোনাস পান, পেনশন পান, পান না?
কিন্তু আমগো এইরকমই…
ভিক্ষে চাইলে আপনেরা অহন দোয়া করেন!
কই যাইব? দেশটা তো আপনেগো, তাই না?
দোয়া করলে দোয়াই সই।
শোন, সবই বুঝলাম তোর কথা,
কিন্তু কী করব, ক?
আমি নতুন গুরু ধরেছি,
শুনছিস না, দেশে মানুষ ধরে ধরে জবাই করতেছে,
শুনছিস?
হ শুনতাছি তো…
এইজন্য গুরু ধরছি, গুরুমুখি হইলে আর সমস্যা থায়ে না।
তয় গুরুই কি কইছে আপনের কাছে কেউ খাইতে চাইলে দোয়া করতে?
কইছে। আরো বহুত কিছু কইছে?
দাঁড়া, কেউরে কোসনে।
এই দশ টাকা দিয়ে পাউরুটি কিনে নিয়ে আয়,
খা, খাইতে খাইতে আমার কথা শোন,
গুরুতে কইছে, তুমি কিছু দ্যাখবা না,
সোজা হেঁটে যাবা, কেউ কিছু চাইলে দেয়ার দায়িত্ব তোমার না,
দেয়ার মালিক একজন।
বুঝতাছিস? আরো কইছে, নিজের কাজ করবা আর তারে ডাকবা।
আরো কইছে …
কী কইছে?
কইছে, পৃথিবীতে কাউরে কষ্ট দেখলে
তোমার দুঃখ পাওয়ার কিছু নেই, বরং তোমার হিংসে করা উচিৎ,
ওরা তো পরকালে সবচেয়ে ভালো থাকপে কোনো ডাকাডাকি ছাড়া,
মানে তোরা আল্লারে না ডাকলেও স্বগ্গে যাবি নিশ্চিত।
তোর কি বেহেশতো?
আরো কইছে, কইছে, তুমি ধনী মানুষ,
তোমার কিন্তু না ডাকলে উপায় নাই।
তাই লাইনে খাড়াও,
কাম-কাজ ব্যবসা বাণিজ্য যা কোরবা করো
সাথে ডাকাডাকি ছাইড়ো না।
তার মানে আমারে আপনে হিংসে করতাছেন?
তয় অহন কষে একটা পাছায় লাত্থি মারেন,
জলদি জলদি বেহেশতে চলে যাই … বাঞ্চোত কথাকার!
কয়ে দৌঁড় …
শেকস্ রাসেল