দস্যু দিয়ে হালচাষ

হালচাষ

 

ভিখিরিকে দেখলাম-

টাকা না দিলে

সে অভিশাপ দেয়, মানে ভয় দেয়;

সে আমার বংশ নিব্বংশ হওয়ার ভয় দিলো।

গেলাম পূজারীর কাছে

সে বলল, সবকিছু দান করে দিতে মন্দিরে,

তাহলে মিলবে পরিত্রাণ।

আমি ফিরে আসলাম,

বাছাই করতে বসলাম,

কোনটা আমি বেছে নেব?

এখনও আমার সামনে বিস্তর অপশন-

রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, পূজারী, ভিখিরি নাকি মাস্তান?

রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, মাস্তান

–সবার একই বুলি,

আকারে ইঙ্গিতে ভড়কে দেয়!

আমি প্রথমে ভাবলাম এগুলোই

একটা কিছু হই,

“সহজ পথ, সুখী জীবন।”

হঠাৎ নিজের দিকে তাকিয়ে ভয় পেলাম,

আমার মতো আরও যদি কেউ থাকে এমন!

আছে অনেক নিশ্চয়ই জনারণ্যে,

আস্থা পেয়ে

আমি পাঁচ বৎসর মেয়াদী একটা প্লান বানালাম,

এরপর পরে নিলাম পোশাক,

একটার পর একটা, এভাবে অনেকটা।

ছদ্মবেশ−

এভাবে পাঁচজন আমরা মিশে গেলাম

ভিখিরি, পূজারী, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী,

আমলা, সাংবাদিক এবং মাস্তানদের দলে।

ওদের ঘাড়ে চড়ে বসলাম অদৃশ্য হয়ে!

পণ করেছি-

দস্যুর ঘাড়ে জোয়াল দিয়ে মাটি কর্ষণ করে

ঠিকই আমরা এবার শীতে ফসল ফলাবো। 

 

ক্রসফায়ার

 

গভীর রাতে এখানে এরা কারা?

উন্মত্ত নুপুরের ঝঙ্কার,

বোতল গড়িয়ে দেয়ালে আটকে

যাওয়ার শব্দ,

দস্যুবৃত্তি আড়াল করছে একঝাঁক অট্টহাসি …

এখানে এরা কারা

এত রাতে লোকালয় হতে দূরে?

এরা কি তবে খেলে ফিরেছে মাত্র

নাকি খেলতে যাবে এখন?

কাকে মারবে?

মাদক ব্যবসায়ীর সাগরেদ,

ছিঁচকে চোর,

নাকি আমাকে? কবিতা লিখি যে!

কে নির্দেশ দিয়েছে?

মাদক সম্রাট, নাকি কোনো সিরিয়াল কিলার?

নাকি নির্দেশ দিয়েছে কোনো মন্ত্রী?

সচিবের নির্দেশ, নাকি কোনো

জলসাঘর থেকে বেরিয়ে

তোমরা নিজেরাই পরামর্শ করে নিয়েছো এসব?

রোজ রাতে এখান দিয়ে আমি হেঁটে যাই

এক নিষিদ্ধ প্রেমের টানে,

তোমাদের দরবারের পাশ দিয়ে,

দাঁড়িয়ে শোনার চেষ্টা করি ফিসফিসানি,

জেনে গেছি-

অমানুষেরা আজ মানুষের তালিকা করে,

এরপর তরবারি ঘুরিয়ে ‘আল্লাহু আকবর’

নয়তো সরকারি ক্রসফায়ার।


দিব্যেন্দু দ্বীপ