ভিয়েতনাম যুদ্ধে আক্রান্তদের একটি আইকনিক ছবি নরওয়ের পত্রিকা আফটেনপোস্টেন প্রকাশ করলে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ নগ্নতার অভিয়োগে ছবিটি সেন্সর করে সমালোচনার মুখে পড়ে। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সমালোচনা এবং ফেসবুক ব্যবহারকারীদের প্রতিবাদের মুখে ফেসবুক আবার ছবিটি শেয়ারের সুযোগ করে দিয়েছে।
এর মাধ্যমে নিশ্চয়ই বিশ্বের সর্বাধিক ক্ষমতাধর সামাজিক মাধ্যম এই বার্তাটি দিতে পেরেছে যে ভুল হলে তার সংশোধনও আছে। এবং গণতান্ত্রিক মানসিকতা কখনই গো ধরে বসে থাকে না।
ভিয়েতনাম যুদ্ধ নিয়ে পুলিৎজার পুরস্কারজয়ী আলোকচিত্র ‘নাপাম গার্ল’, যাতে নাপাম বোমা হামলার পর নগ্ন নয় বছরের একটি মেয়েসহ কয়েকটি শিশুর রুদ্ধশ্বাসে দৌঁড়ানোর চিত্র উঠে আসে, তা সেন্সর করে ফেইসবুক।
নরওয়ের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক ‘অফটেনপোস্টেন’র প্রথম পৃষ্ঠায় ছবিটি সরিয়ে ফেলার প্রতিবাদে একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করা হয়। লেখাটিতে ফেইসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ তোলা হয়। এতে বিশ্বের সবচে’ ক্ষমতাধর সম্পাদক হিসেবে মার্ক জাকারবার্গকে বিবেচনার সাথে কাজ চালিয়ে যেতে বলা হয়।
ফেইসবুক ছবিটি সরানোর পিছনে যুক্তি দিয়েছিল, ছবিটি আইকনিক হিসেবে আমরা বুঝতে পারলেও কোনো নগ্ন শিশুর ছবি প্রচারিত হতে দেওয়া ফেইসবুকের নীতিমালা পরিপন্থী।
পরে ফেসইবুক কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্ত থেকে সের এসেছে বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞদের সমালোচনা এবং মতামতের পর। ফেইসবুক কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত বদলিয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটেনের প্রভাবশালী দৈনিক গার্ডিয়ান।
ফেইসবুক গার্ডিয়ানকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেছে, “আমাদের ইউজারদের বক্তব্য শোনার পরে পুনরায় বিষয়টি আমরা বিবেচনা করেছি, বুঝতে চেয়েছি আমাদের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড এক্ষেত্রে কীভাবে কাজ করে। যেকোনো নগ্ন ছবি আমাদের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড লংঘন করে এবং কিছু দেশে তা শিশু পর্নগ্রাফি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
“তবে বিশেষ এই ছবিটির ক্ষেত্রে মানুষের অনুভূতি ভিন্ন, এবং সেই অনুভূতি আমরা ছবিটির ইতিহাস এবং বিশেষ মুহূর্ত প্রেক্ষিতে বুঝতে চেয়েছি।”
উল্লেখ্য, ১৯৭৩ সালে ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকা সমাজতন্ত্রী উত্তর ভিয়েতনামের বিরুদ্ধে দক্ষিণ ভিয়েতনামের হয়ে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। দক্ষিণ ভিয়েতনাম তখন নাপাম বোমা নিক্ষেপ করেছিল।
বোমা হামলার পর গ্রামের অনেক শিশুর সাথে দৌঁড়াতে ছিল নয় বছরের শিশু কিম পুফ, যার শরীরে তখন কোনো কাপড় ছিল না।