ইাতহাস বিভাগের ৯২তম ব্যাচের র্যাগ ডে আয়োজন ছিল ব্যতীক্রমধর্মী। উচ্চ বাজনায়, হৈ হুল্লোড়ে ক্যাম্পাস না মাতিয়ে তারা তুলে ধরেছে ইতিহাস ঐতিহ্য, আনন্দ করেছে শৈল্পিকভাবে।
র্যাগডে বলতেই আমরা বুঝি শিক্ষাবর্ষের শেষ দিনে সবাই নেচে গেয়ে আর আবির রঙে রঙিন হয়ে আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে বিদায় নেবে। উচ্চশব্দের গানের তালে তালে নাচবে শিক্ষার্থীরা। সাদা টি শার্টের গায়ে লিখে দিবে ‘মনে রখে বন্ধু কিংবা স্মৃতিময় কোন ঘটনা।’
ক্যাম্পাস জুড়ে এ আনন্দ উৎসব করার ফলে বিঘ্ন ঘটে অন্য শিক্ষার্থী ও ব্যাচের শিক্ষার্থীদের পাঠ কার্যক্রম। পরীক্ষার হলে থাকা শিক্ষার্থীর কানে উচ্চ স্বরের মিউজিক গেলে স্মৃতি বিড়ম্বনা ঘটাও অস্বাভাবিক কিছু নয়। আর তাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ৯২তম ব্যাচ রোববার (৪ ডিসেম্বর) এক ব্যতিক্রমী র্যাগডে পালন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এ ব্যাচের শিক্ষার্থীরাই প্রথমবারের মত ক্যাম্পাসে কোন রকম শব্দ দূষণ ছাড়া এ ব্যতিক্রমী র্যাগডে পালন করেছে।
সকাল সাড়ে দশটায় বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সোনিয়া নিশাত আমিন কেক কেটে উদ্বোধন করেন ইাতহাস বিভাগের ৯২তম ব্যাচের র্যাগ ডে আয়োজন। আর সকাল ১১টার দিকে সবাই মিলে বের করে স্নাতক সমাপনী শোভাযাত্রা। অপরাজেয় বাংলা থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে দিয়ে কলা ভবনের ইতিহাস বিভাগের সামনে যেয়ে শেষ হয় এ শোভাযাত্রাটি। শিক্ষার্থীদের এ শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ, অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, অধ্যাপক ড. আহমেদ আব্দুল্লাহ জামাল, সহযোগী গোলাম সাকলাইন সাকি, অধ্যাপক আকসাদুল আলম, সহকারী অধ্যাপক শহীদুল হাসান, প্রভাষক মিঠুন কুমার সাহা ও প্রভাষক শান্তা পত্রনবিস।
ঐতিহাসিক এ শোভাযাত্রায় শিক্ষার্থীরা এসেছিল ব্যাতিক্রমী সাজে। ২০১৬ সালের সাথে মিল রেখে ১৬ জন শিক্ষার্থী সেজেছিল ঐতিহাসিক ১৬টি চরিত্রে। চরিত্রগুলোর মধ্যে ছিল ঐতিহাসিক চরিত্র সম্রাট আকবর, রোমান্টিক জুটি হিসেবে ছিল সম্রাট শাহজাহান ও মমতাজ বেগম চরিত্র, ছিল নবাব সিরাজ উদ্-দৌলা ও লর্ড ক্লাইভ, সম্রাট লালন ফকির, চিনা দার্শনিক কনফুসিয়াস, জতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ইতিহাসের নিরপক্ষতা রক্ষা করার জন্য রাখা হয়েছিল একজন মুক্তিযোদ্ধা ও একজন রাজাকার চরিত্র। শোভাযাত্রা শেষে ইতিহাস বিভাগের সামনে যেয়ে হত্যা করা হয় রাজাকার চরিত্রটিকে। বাকী চরিত্রগুলো অমর হয়ে থেকে যায় শিক্ষার্থীদের স্মৃতিপটে।
সংবাদ: পূর্বপশ্চিম
ছবি গ্যালারি :