হান্নান কল্লোল
`বাংলা মঞ্চ’র বর্ষবরণ উৎসবে হাজারো দর্শক-শ্রোতার সামনে আহ্বায়কের স্বাগত বক্তব্য প্রদান করতে গিয়ে আনন্দে আপ্লুত হয়েছিলাম৷ গৌরীপুরের সর্বস্তরের মানুষকে ধন্যবাদ জ্ঞাপনের পর বলেছিলাম, ‘বাংলা মঞ্চ একটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, ভাষার নামে যার নামকরণ৷ শাশ্বত বাঙলার লোকায়ত ঐতিহ্য ও চিরায়ত সংস্কৃতিকে লালন-পালন এবং মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে সমুন্নত রাখার অভিপ্রায়ে এই সংগঠনের আত্মপ্রকাশ৷ আমাদের জাতীয় ও সামাজিক দিবসগুলোসহ বাঙালি নাড়ির সঙ্গে সম্পর্কিত প্রায় সকল অনুষ্ঠানকে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করবো৷ আর আমাদের লক্ষ-উদ্দেশ্য প্রকাশিত হবে কর্মসূচির মাধ্যমে৷
ইতোমধ্যে আমরা বর্ষবরণসহ মহান মে দিবস, রবি ঠাকুরের জয়ন্তীতে ‘রবীন্দ্রসন্ধ্যা’ ও বিদ্রোহী কবির জন্মোৎসবে ‘চির-উন্নত মম শির!’ উদযাপন করেছি৷ ৩০ শ্রাবণ আরেকটু বিস্তৃত পরিসরে পালন করতে চাচ্ছি বিপ্লবী কবি সুকান্ত’র জন্মবার্ষিকী ৷ চিত্রাংকন, আবৃত্তি ও রচনা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সম্পৃক্ত করতে চাই স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের৷ উল্লেখ্য মে দিবস উপলক্ষে রচনা ও কুইজ প্রতিযোগিতায় ৩১ জনকে পুরস্কৃত করেছিলাম সম্মাননা ক্রস্ট প্রদান করে৷
সুকান্ত’র জন্মোৎসবের আগাম আমন্ত্রণ জানিয়ে রাখছি আপনাদের সবাইকে৷ সুখের কথা, নজরুল-জয়ন্তীর মতো আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকছেন লেখক-গবেষক হরিদাস ঠাকুর ও রণজিৎ কর এবং বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি, বিশিষ্ট সাহিত্যিক ড. রতন সিদ্দিকী৷ তাঁদের পাশাপাশি আরও ক’জন অগ্রগামী সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বকে আনার চেষ্টা করবো আমরা৷
আর একটি কথা, বাংলা মঞ্চ কিছু আওয়াজ তুলছে৷ গৌরীপুরে একটা অত্যাধুনিক অডিটরিয়াম নির্মাণ, একটা গণগ্রন্থাগার স্থাপন, একটা সাংস্কৃতিক একাডেমি গঠন ইত্যাদি দাবি-দাওয়াও উত্থাপন করে যাচ্ছে৷ আশা রাখি একদিন আমাদের সবই হবে৷ কেননা আমাদের সঙ্গে আছেন গৌরীপুরের সাহিত্য-সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অগ্রসর ব্যক্তিত্ববর্গ, গণমাধ্যমকর্মীবৃন্দ, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের জনগণ৷ সর্বাত্মক সহযোগিতা করে আসছেন সমুদয় সংগীত-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সংশ্লিষ্ট সকলেই৷ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, চাঁদের হাট, সংগীত নিকেতন, সরকার শুদ্ধ সংগীত বিদ্যায়তন, অগ্রদূত সংগীত বিদ্যালয়, অপূর্ব শিল্পীগোষ্ঠী, গৌরীপুর শিল্পীগোষ্ঠী, এমিউজ শিল্পীগোষ্ঠী, সারেগামা সাংস্কৃতিক একাডেমি, সজাগ সাংস্কৃতিক সংসদ, গৌরীপুর থিয়েটার, ছায়ানীড় যাত্রা ও নাট্যশিল্পী কল্যাণ সংস্থা, প্রত্যাশা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন সংস্থা, ইব্রাহিম স্মৃতি সংসদ, নূরু মিয়া স্মৃতি সংসদ ও সান কালচারাল টীমের কাছে বাংলা মঞ্চ চিরকৃতজ্ঞ৷ জনপ্রতিনিধি, দাতা ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ গৌরীপুরবাসীর নিকট বেড়েই চলছে আমাদের ঋণ৷ মঞ্চের সহযোদ্ধাদের জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ৷ আর গৌরীপুর প্রেসক্লাবের ক্ষেত্রে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ, ঋণ স্বীকার, ধন্যবাদ জ্ঞাপন- কোনোটাই যথেষ্ট নয়; কারণ জন্মলগ্ন থেকে বাংলা মঞ্চ নামের সংগঠনটির সঙ্গে তার সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য৷