দাঁতের যত্নে যা করবেন …

দাঁতের যত্নে করণীয়

দাঁত শুধু হাসার জন্য নয়, দাঁত না থাকলে খাবেন কীভাবে? বলবেন, যাদের দাঁত নেই তারাও তো খায়! একটু তাদের কাছে শুনবেন দাঁত না থাকার জন্য কতটা আফসোস তারা করে। তাই দাঁত থাকতেই দাঁতের মর্যদা বুঝতে হবে। আর হেলাফেলা করা যাবে না। নিয়ম মেনে দাঁত ব্রাস তো করতেই হবে, সাথে মানতে হবে আরও কিছু নিয়ম-কানুন। তাহলে জেনে নেওয়া যাক—

১. নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করুন

প্রতিদিন কমপক্ষে দুইবার ভালোভাবে আপনার দাঁত ব্রাশ করুন এবং প্রতিবার দুই মিনিট করে সময় নিবেন, খুব বেশি সময় ধরে দাঁত ব্রাস করা ভালো নয়। এমনভাবে ব্রাশ করতে হবে যেন আপনার ব্রাশ দাঁতের সব দিকে পৌঁছায় এবং আপনার জিহবাকেও যেন স্পর্শ করে।

২. দৈনিক দাঁতে ফ্লস এবং জিহবার স্ক্র্যাপার ব্যবহার করুন

যে কোনো খাবার খাওয়ার পর তা আপনার দাঁতের মধ্যে আঁটকে যায়। তাই দৈনিক আপনার দাঁতে ফ্লস ব্যবহার করুন। ফ্লস ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার দাঁতের অন্য পাশকেও পরিষ্কার করতে পারবেন যেখানে আপনার টুথব্রাশ পৌঁছোতে পারে না।

স্বাস্থ্যবিধির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে জিহবার স্ক্র্যাপার। নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ এবং জিহবার প্লাক দূর করার জন্য এটি ব্যবহার করুন। আপনার টুথব্রাশ ব্যবহার করেও জিহবা পরিষ্কার করতে পারেন।

৩. মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করুন

আপনার ডেন্টিস্টের সাহায্যে একটি ভালো ফ্লোরাইড মাউথওয়াশ খুঁজে বের করুন। ফ্লোরাইড মাউথ ওয়াশ দাঁত জোরদার করতে সাহায্য করে। ৬ থেকে ১২ বছর বয়সের মধ্যে শিশুদের মাউথ ওয়াশ ব্যবহার করা শেখানো ভালো। তবে ব্যবহারের আগে বোতলের সাথে থাকা নির্দেশনা দেখে নিবেন।

৪. বিজ্ঞতার সঙ্গে আপনার খাবার বেঁছে নিন

স্রাকস্ জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। কারন ক্রমাগত এ ধরনের খাবার খেলে দাঁতে প্লাক তৈরি হতে পারে, যা ধীরে ধীরে ক্যাভিটিস বা ছোট ছোট ছিদ্র হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। চিনিযুক্ত এবং স্টিকি খাবার এড়িয়ে চলুন। চিনি, আমাদের মুখের ভেতর ব্যাকটেরিয়া জমায়, যা দাঁতের ভাঙ্গন সৃষ্টি করে। তাই এ জাতীয় খাবার খাওয়ার পর সাথে সাথে প্রচুর পানি বা পানীয় পান করবেন। মনে রাখবেন যে, ফলের রসে প্রচুর এসিড ও প্রাকৃতিক চিনি থাকে। তাই ন্যূনতম ফলের রস পান করুন। শুধুমাত্র খাবার-সময়ে অথবা যখন প্রচুর খাবার খাওয়া হয় তখন ফলের রস পান করতে পারেন। বীজ জাতীয় খাবার এবং শক্ত হাড় কম চিবোনোর চেষ্টা করুন। কারণ এটি আপনার দাঁতের মোলারস্ এর মধ্যে ফাঁটল তৈরি করতে পারে।

৫. ডেন্টিস্ট এর কাছে যান

অন্তত প্রতি ছয় মাস পর পর আপনার ডেন্টিস্ট এর কাছে যান এবং আপনার দাঁতের কোনো সমস্যা হলে সাথে সাথে আপনার ডেন্টিস্টকে জানান। বছরে একবার একজন পেশাদারী রেজিস্টার্ড ডেন্টিস্ট-এর কাছ থেকে দাঁত পরিস্কার করুন। সবসময় খেয়াল করবেন যে কোনো ক্যাভিটিস বা মাড়ির রোগের লক্ষণ দেখা যায় কিনা। ব্রাশ এবং ফ্লস ব্যবহার করার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে আপনার দাঁতের ডাক্তারের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পারেন।

কুইক টিপস্

১. আপনার টুথ ব্রাশ প্রতি তিন মাস পর পর বদলান।

২. প্রতিদিন সামান্য দুধ পান করার চেষ্টা করুন, এটি আপনার ক্যালসিয়াম বাড়ায়। ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁত মজবুত করতে সাহায্য করে।

৩. টুথব্রাশ এমন হতে হবে যেন সহজেই তা gumline এর দিকে বাঁকানো যায়। একটি ছোট বৃত্তাকার গতিতে আপনার দাঁতের ভেতরে, বাইরে, উপরে এবং GUM লাইনের নিচে ব্রাশ করুন। চিনিযুক্ত খাবার আপনার দাঁত থেকে দূরে রাখুন।

৪. খুব শক্ত ব্রাশ আপনার মাড়িতে আঘাত করে রক্ত ঝড়াতে পারে আর খুব নরম ব্রাশ প্লাক দূর করতে পারে না। তাই মাঝারি ধরনের ব্রাশ ব্যবহার করুন।

৫. যখন আপনার সামনের দাঁতের ভেতর পাশ ব্রাশ করবেন, প্রথমে টুথব্রাশকে আপনার দাঁতের ডান পাশের উপর রাখুন। এরপর ব্রাশ নিচে এবং উপরের দিকে সরিয়ে প্রতিটি দাঁত ব্রাশ করবেন। এই পদ্ধতি প্রতিটি দাঁতের জন্য বেশ কয়েকবার করে করুন।

৬. দাঁত ব্রাশ করার পরে মুখে মাউথওয়াশ ব্যবহার করুন।

৭. আপনার জিহবা ব্রাশ করতে ভুলবেন না, সেই সাথে আপনার মুখের উপরের তালু।