বিশ্ব-আতঙ্কের কারণ করোনা ভাইরাসের অনুপ্রবেশ ও বিস্তার রোধে যা করা উচিত // ডাঃ শেখ বাহারুল আলম

Baharul Alam

করোনা ভাইরাসের অনুপ্রবেশ রোধে সরকারের উচিত সকল বহিরাগমন স্থান— স্থল ও বিমানবন্দরে করোনা ভাইরাসের বিস্তারে আধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত পর্যাপ্ত পর্যবেক্ষণ দল নিয়োজিত রাখা। পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতে এ ভাইরাসের উপস্থিতি আমাদের অধিক জনসংখ্যার দেশের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

করোনা ভাইরাস

যেহেতু ভাইরাস প্রাণি জগত থেকেই সংক্রমিত হয়েছে সেহেতু দেশের অভ্যন্তরে সকল পশুপালনের খামার, কসাইখানা ও ট্যানারি, সাপ-কুমীরের খামারের উপর কঠোর নজরদারি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা। এ ভাইরাস আক্রমণ প্রতিরোধের সতর্কতা স্বরূপ সকলের ঘর থেকে বের হওয়ার সময় মাস্ক ব্যবহার করা উচিৎ। এরপরেও আক্রান্ত দেশের নাগরিকের অনুপ্রবেশ ঘটলে সাথে সাথে তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে (কোয়ারেন্টাইন) রাখা প্রয়োজন।

বাংলাদেশের উপনিবেশীয় স্বাস্থ্যব্যবস্থার সীমাবদ্ধতার কারণে স্বাস্থ্য বিপর্যয় হতে জনগণকে রক্ষা করার শক্তি সামর্থ্য সীমিত। এখানে গবেষণা, বিজ্ঞানী, চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও জনগণের সম্পৃক্ততা না থাকায় রোগ আক্রমণ ঠেকানোর ক্ষেত্রে এ কাঠামো আস্থাশীল হয়ে ওঠেনি । হৈচৈ আছে , চিৎকার আছে , সাবধানবানী আছে, প্রচার আছে, কিন্তু নেই কেবল রোগ প্রতিরোধের কার্যকর শক্তি সামর্থ্য। সে কারণেই ‘করোনা ভাইরাস’ বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ঘটলে বিগত দিনে ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমাদের স্বাস্থ্যব্যবস্থা যে ভূমিকা রেখেছিল, যে চিত্র জনমনে এখনও আতঙ্ক ছড়ায়— তার থেকে ভিন্নতর কিছু হবে না। অনেক জীবনহানির আশংকায় মানুষ প্রতিনিয়তই আতঙ্কে থাকবে। বিদ্যমান চিকিৎসা বিপর্যয় তো আছেই, তার ওপর কোনো একক রোগের (করোনা ভাইরাস) প্রাদুর্ভাব (এপিডেমিক)দেখা দিলে আমাদের স্বাস্থ্য কাঠামো রানা প্লাজার মতো ভেঙ্গে পড়বে।

কোন বিপর্যয়ে আমাদের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও তার মন্ত্রণালয় জনস্বার্থে পরবর্তীতে সঠিক সিদ্ধান্ত কোনো উপলব্ধিতে আসে না। একেই বলে উপনিবেশিকতা। উপরন্তু প্রচার মাধ্যমে অসত্য তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে। বিগত দুই-দুইবার ডেঙ্গু ভাইরাস আক্রমণে আমরা সেটাই দেখেছি এবং শাসকদের জনসমর্থন ও জনপ্রিয়তার কারণেই স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় তার অক্ষমতা ও ব্যর্থতাকে পাত্তা দেয় না । কারণ, জনগণের কাছে ও সংসদে তার কোন জবাবদিহিতা নাই।


ডাঃ শেখ বাহারুল আলম