অপরাধের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার চমৎকার একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে বর্তমানে। প্রত্যেকের হাতে একটি মোবাইল রয়েছে, ফেসবুক ব্যবহার করে অনেকে, ব্লগে লেখে কেউ কেউ। অর্থাৎ নাগরিক সাংবাদিকতার জায়গাটা এখন বেশ প্রশস্ত। সে হিসেবে সবাই এখন ‘সাংবাদিক’। তার সুফলও পাওয়া যাচ্ছে। অপরাধের খবর এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি প্রকাশিত হয়, এবং অনেক ক্ষেত্রে সবার আগে তা ফেসবুকে আসে। ফেসবুকের সূত্র ধরে পেশাদার সাংবাদিকেরা ছুটে যায় ঘটনাস্থলে।
প্রযুক্তির এবং প্রযুক্তির প্রতি মানুষের হঠাৎ এই আকর্ষণ আরো কার্যকরভাবে কাজে লাগানো সম্ভব, যদি মানুষকে আরো একটু সচেতন করে তোলা যায়। ঘটনাস্থলে থাকলেও অপরাধ প্রতিরোধ করা সবসময় সম্ভব হয় না। কিন্তু ঘটনাটার একটা ছবি বা ভিডিও যদি কোনক্রমে নেওয়া যায় এবং ছড়িয়ে দেওয়া যায়, তাহলেও কিন্তু অনেকটা কাজ হবে। ঘটনাটি যে ঘটিয়েছে তার কাছে এটি না পৌঁছালেও আর একজন সতর্ক হবে। ছোট ছোট ঘটনাগুলোও (অপরাধ) ছড়িয়ে দেওয়া যায়।
যেমন ধরুণ—
• শিশু সন্তানকে পিতা প্রহার করছে, ছবি তুলে ছড়িয়ে দিন;
• মাদ্রাসায় শিশু নির্যাতিত হচ্ছে, ছড়িয়ে দিন;
• নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, নির্যাতনকারীর ছবি তুলে ছড়িয়ে দিন;
• চাঁদাবাজদের ছবি তুলে ছড়িয়ে দিন;
• ঘুষখোর সরকারি কর্মকর্তার ছবি তুলে ছড়িয়ে দিন;
• রং সাইড দিয়ে মটর সাইকেল চালাচ্ছে, ছড়িয়ে দিন;
• ড্রাইভারের কাছ থেকে পুলিশ ঘুষ নিচ্ছে, ছবি তুলে ছড়িয়ে দিন;
• আপনার কাছে কেউ ঘুষ চাচ্ছে, এরকম সম্ভাবনা আঁচ করলে মোবাইলের রেকর্ডারটা অন করে রাখুন, রেকর্ড করে ছড়িয়ে দিন;
• ক্লাসে শিক্ষক ছাত্রকে শারীরিকভাবে প্রহার করছে, ছবি তুলে ছড়িয়ে দিন;
• লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী তোলা হচ্ছে, ছবি তুলুন, ছড়িয়ে দিন;
• ইভ টিজিং করা হচ্ছে, ছড়িয়ে দিন।
এরকম অনেক ঘটনা আপনার আমার সামনে দৈনিক ঘটছে। যেগুলো সবসময় আমরা রুখে দিতে পারি না, কিন্তু ঘটনাগুলো সামাজিক গণমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে পারি, যার একটা প্রভাব অবশ্যই থাকবে।