১. ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি সার্ভিস – ৯৯৯, এই নম্বরে কল করে আপনি পুলিশি সহায়তা পেতে পারেন।
যেকোনো দুর্ঘটনা বা অপ্রীতিকর কোনো ঘটনার মুখোমুখি হলে জরুরি সেবা পেতে দেশের যেকোনো স্থান থেকে যে কেউ এই নম্বরে ফোন করতে পারেন। পুলিশের অধীনে এই কল সেন্টারটি পরিচালিত হচ্ছে। এই নম্বরে ফোন করে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও অ্যাম্বুলেন্স সেবা কিংবা এ–সংক্রান্ত তথ্য এবং সহযোগিতা পাওয়া যাবে। দিনরাত ২৪ ঘণ্টা এ কল সেন্টার চালু থাকে। যেকোনো ফোন থেকে বিনা মূল্যে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করা যায়।
ফোন করে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিন। কোনো দুর্ঘটনা হলে ঘটনাস্থলের নাম, সড়ক নম্বর, বাড়ি নম্বর উল্লেখ করুন। অপরাধীকে দেখে থাকলে তার চেহারার বর্ণনা দিন, যতটা সম্ভব। প্রাসঙ্গিক কথা না বলাই ভালো, আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে সুনির্দিষ্টভাবে কথা বলতে হবে। অযথা এই নম্বরে ফোন করলে আপনার নম্বর ব্লক করে দিতে পারে, ফলে পরে জরুরি মুহূর্তে আপনি ফোন করতে পারবেন না।
২. ১৬২৬৩ জাতীয় স্বাস্থ্য বাতায়ন
যেকোনো সময় যে কেউ অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। এ সময় হয়তো আপনি পরিচিত কোনো চিকিৎসককে ফোন করে পাচ্ছেন না; আবার সবার যে পরিচিত কোনো চিকিৎসক থাকে —এমন নাও হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে নিশ্চিন্তে ফোন করা যাবে স্বাস্থ্য বাতায়নের হেল্পলাইন ১৬২৬৩ নম্বরে। এটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পরিচালিত হেল্পলাইন। এই নম্বরে ফোন করে স্বাস্থ্যসংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে সরাসরি চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে আপনি পরামর্শ পেতে পারেন। দিনরাত ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে এই নম্বর। এ ছাড়া স্বাস্থ্য বাতায়ন থেকে সরকারি হাসপাতাল, ডাক্তারের তথ্য কিংবা স্বাস্থ্যসেবা–বিষয়ক অন্যান্য যেকোনো তথ্য ও ফোন নম্বর পাওয়া যাবে। সরকারি, বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা অথবা হাসপাতাল–বিষয়ক যেকোনো অভিযোগ কিংবা পরামর্শও এই নম্বরে জানানো যাবে। ওই অভিযোগের ব্যাপারে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা-ও জানানো হবে অভিযোগকারীকে।
৩. নারী ও শিশু নির্যাতন অথবা পাচারের ঘটনা প্রতিরোধে কল সেন্টার ১০৯
আমাদের দেশে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে সবসময়। এ ধরনের নির্যাতন প্রতিরোধে ‘নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ সেল’ চালু করা হয়েছে, যার নম্বর ১০৯ অথবা ১০৯২১। কোনো নারী নির্যাতনের শিকার হলে, বখাটেদের আক্রমণের মুখে পড়লে অথবা অপমানিত হওয়ার আশঙ্কা করলে সঙ্গে সঙ্গে এই নম্বরে ফোন করে সাহায্য চাইতে পারেন। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল কর্মসূচির আওতায় এই কর্মসূচি পরিচালিত হচ্ছে। এ নম্বরে ফোন করতে কোনো চার্জ দিতে হবে না। সপ্তাহের সাত দিন ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে এই নম্বর।
৪. চাইল্ড হেল্প লাইন (১০৯৮)
সুবিধাবঞ্চিত নির্যাতিত ও বিপদাপন্ন শিশুদের ২৪ ঘণ্টা জরুরি সহায়তা সেবা দিতে ২০১১ সালে যাত্রা শুরু করে চাইল্ড হেল্পলাইন ১০৯৮। সমাজসেবা অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধান অপরাজেয় বাংলাদেশ নামের একটি বেসরকারি সংস্থা এই হেল্পলাইন পরিচালনা করছে। এই নম্বরে ফোন করতে কোনো চার্জ প্রযোজ্য হবে না।
৫. সরকারি আইনগত সহায়তায় জাতীয় হেল্প লাইন ১৬৪৩০
অনেক সময় দুস্থ ও দরিদ্র মানুষ টাকার অভাবে আইনি পরামর্শ বা সহায়তা পান না। ফলে কেউ কেউ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হন। তাদের কথা ভেবেই বিনামূল্যে আইনি পরামর্শ ও আইনগত সহায়তা দিতে ১৬৪৩০ নম্বর চালু করা হয়। ২০১৬ সাল থেকে আইন ও বিচার বিভাগের অধীনে জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থা এই সেবা দিয়ে আসছে। যেকোনো মোবাইল অপারেটর ও টিঅ্যান্ডটি নম্বর থেকে এই নম্বরে বিনা মূল্যে ফোন করা যাবে।
৬. ভোটার আইডি কার্ড সম্পর্কিত তথ্য পেতে: ১০৫
এখন জাতীয় পরিচয়পত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় এই পরিচয়পত্র হারিয়ে যায়, নষ্ট হয়ে যায়। আবার দেখা যায় যে, প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর জাতীয় পরিচয়পত্র নতুন করে করতে হয়। সেক্ষেত্রে ভুল ভ্রান্তি হলে সংশোধন করতে হয়। কখনো কখনো হালনাগাদ করার প্রয়োজন হয়। এসব বিষয়ে জানতে বা জাতীয় পরিচয়পত্র বিষয়ে যেকোনো তথ্যের জন্য ১০৫ নম্বরে ফোন করা যাবে। নির্বাচন কমিশন এই হেল্পডেস্ক চালু করেছে ২০১৫ সালে। দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে যে কেউ ১০৫ নম্বরে ফোন করে জাতীয় পরিচয়পত্র–সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে পারবেন।
৭. বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রাহক অভিযোগ হট লাইন: ডায়াল ১৬২৩৬
ব্যাংকিং সেবা পেতে হয়রানির শিকার হলে বা কোনো অভিযোগ থাকলে তা সরাসরি বাংলাদেশ ব্যাংকে জানানো যাবে ১৬২৬৩ নম্বরে। এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের হেল্পলাইন। কোনো গ্রাহক কোনো ব্যাংকে গিয়ে হয়রানির শিকার হলে বা কোনো ব্যাংকের কর্মকর্তা গ্রাহককে যথাযথ সেবা না দিলে এই নম্বরে অভিযোগ দিতে পারেন। যেকোনো মোবাইল অপারেটর থেকে এই নম্বরে ফোন করা যাবে। এ জন্য স্বাভাবিক কল রেট প্রযোজ্য হবে। পাশাপাশি [email protected] ঠিকানায় ই-মেইলের মাধ্যমেও অভিযোগ জানানো যাবে।
৮. দুর্নীতি দমন কমিশন হেল্পলাইন নাম্বার ডায়াল: ১০৬
চোখের সামনে কোনো দুর্নীতি ও অনিয়ম হচ্ছে— কিন্তু কিছু করতে পারছেন না। কিংবা আপনি নিজেই সেই অনিয়মের শিকার হচ্ছেন। এমন দুর্নীতি ও অনিয়মের তথ্য জানাতে হটলাইন ১০৬ চালু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। টেলিফোন বা যেকোনো মোবাইল ফোন থেকে কল করা যাবে এই নম্বরে। যে কেউ বিনামূল্যে এই নম্বরে কল করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে অভিযোগকারীর নাম ও পরিচয় গোপন রাখা হয়। অভিযোগকারী চাইলে তার বক্তব্য রেকর্ড করা যাবে। অফিস চলাকালে, অর্থাৎ সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কল করা যাবে এই নম্বরে।
৯. ইউনিয়ন পরিষদ হেল্প লাইন (১৬২৫৬)
ইউনিয়ন পরিষদ পর্যায়ে যেকোনো ভাতা বা অনুদানসংক্রান্ত তথ্য ও পরামর্শ সেবা দিতে ২০১২ সালে যাত্রা শুরু করে ইউনিয়ন পরিষদ হেল্পলাইন ১৬২৫৬। যে কেউ দেশের যেকোনো স্থান থেকে ফোন করে এই সেবা নিতে পারবেন। যেকোনো মোবাইল অপারেটর থেকে এই নম্বরে ফোন করা যাবে। এ জন্য স্বাভাবিক কল রেট প্রযোজ্য হবে।
১০. বিটিআরসি (১০০)
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) কল সেন্টার (১০০) চালু করে। বিনা খরচে ফোন করে যে কেউ মোবাইল সার্ভিস সংক্রান্ত অভিযোগ জানাতে পারবেন এই নম্বরে।
এ ছাড়া আরও কিছু নম্বর আছে যেগুলো থেকে নানা সহায়তা পাওয়া যায়। যেমন: কৃষি কল সেন্টার (১৬১২৩), বিটিসিএল (১৬৪০২), দুর্যোগের আগাম বার্তা (১০৯৪১), প্রবাস বন্ধু কলসেন্টার (০৯৬৫৪৩৩৩৩৩৩), ঢাকা ওয়াসা (১৬১৬২)।