

বইটি খেয়াল করুন। ‘মিষ্টি ছড়া’ নামের এই বইটি শাহনাজ বেগমের লেখা। বইয়ের নাম, তারপর লেখকের নাম— এ থেকে লেখক হিসেবে শাহনাজ বেগমকেই সণাক্ত করতে হয়। কিন্তু বইটির ভেতরে চমকে ওঠার মতো সব ছড়া রয়েছে। আবহমান বাংলার চিরায়ত ছড়াগুলো এ বইতে রয়েছে, কিন্তু কোথাও ‘সংগৃহীত’ বা ‘সংকলিত’ লেখা হয়নি। নামহীনভাবে রয়েছে কাজী নজরুল ইসলাম, নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্য এবং রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই-এর ছড়া। অর্থাৎ, পাঠক নিচের ছড়াগুলিকে শাহনাজ বেগমের ছড়া হিসেবে পড়ছে। “ভোর হল, দোর খোল” কাজী নজরুল ইসলামের লেখা, কিন্তু লেখিকা কবির নাম উল্লেখ করেননি! ‘মৌমাছি মৌমাছি, কোথা যাও নাচি নাচি, দাঁড়াওনা একবার ভাই। ওই ফুল ফোঁটে বনে, যাই মধু আহরণে, দাঁড়াবার সময়তো নাই।’ কবি নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্য-এর চমৎকার একটি ছড়া। এটিও শাহনাজ বেগম নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন!! রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই-এর বিখ্যাত ‘হাসি’ ছড়াটির অংশবিশেষ দিয়েছেন। আসল কবিতাটি শুরু হয়েছে, “হাসতে নাকি জানে না কেউ কে বলেছে ভাই, এই শোন না কত হাসির খবর বলে যাই।” —লাইনটি দিয়ে। জনৈক শাহনাজ বেগম “খোকন হাসে ফোকলা দাঁতে” —লাইনটি দিয়ে শুরু করেছেন। কোথাও লেখকের নাম উল্লেখ করেননি। এছাড়াও বইটিতে রাখা হয়েছে, “খোকন খোকন ডাক পাড়ি”, “কে মেরেছে কে ধরেছে”, “বাক বাকুম পায়রা”, “দোল দোল দুলুনি”, “আয়রে পাখি লেজ ঝোলা”, “আতা গাছে তোতা পাখি”, “চাঁদ উঠেছে ফুল ফুটেছে”, “আয়রে আয় টিয়ে”, “খোকা ঘুমাল পাড়া জুড়াল” ইতাদি আবহমান বাংলার চিরায়ত ছড়াগুলো। ভুল করে একটি ছড়াকে দুইভাগ করে দুই জায়গায়ও লেখা হয়েছে!
