চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজ হত্যাকাণ্ড খুবই আলোচিত হয়েছিল। আপনাদের হয়ত অনেকেরই মনে আছে। বিচার পাওয়া না পাওয়া নিয়েও অনেক কথা তখন হয়েছিল। মনে থাকার কথা প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে দিয়াজ ‘আত্মহত্যা’ করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। নিহতের মা এটা প্রত্যাখ্যান করলে আদালতের নির্দেশে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করা হয়।
সেই সময়ের, সেই সময়ের বলতে হত্যাকাণ্ডের দুই বছর পরের একটি নিউজ থেকে কিছুটা প্রকাশ করা যাক—
দুই বছর অতিবাহিত হয়ে গেলেও এখনো রহস্যজট খুলেনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরী হত্যা রহস্যের। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হয়ে গেলেও আলোচিত এই হত্যাকান্ডের নেই দৃশ্যমান অগ্রগতি। পুলিশও গ্রেফতার করতে পারেনি এজাহারভুক্ত কোন আসামিকে। উল্টো মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি এ নিয়ে রহস্যজনক আচরণ করছে। মামলার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না হওয়ায় হতাশ দিয়াজের পরিবার।
দিয়াজের বড়বোন জুবাইদা ছরওয়ার চৌধুরি নাপা অভিযোগ করেন, ‘আমার ভাইকে হত্যা করার দু’বছর হয়ে গেছে। আদালত আসামিদের গ্রেফতারি ফরোয়ানা জারি করেছে। কিন্তু প্রশাসন প্রকাশ্য দিবালোকে আসামীদের দেখেও গ্রেফতার করছেনা। এ বিষয়ে আমরা খুবই হতবাকক।’ তিনি বলেন,’ আসামিদের গ্রেফতারে বিলম্ব হওয়ায় হত্যার আলামত নষ্ট হচ্ছে। আসামীদের গ্রেফতার করে জবানবন্দী নেওয়া না হলে এ ঘটনা প্রমাণ করা যাবে না।
এখন আজকের পত্রিকা থেকে কিছুটা প্রকাশ করি—
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সমিতির বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা চলছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে। গতকাল সকাল নয়টায় শুরু হওয়া প্রতিযোগিতার বেশ কয়েকটি পর্ব শেষ হয়েছে তখন। মাঠজুড়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভিড়। কেউ দর্শক, কেউবা প্রতিযোগী। ঠিক তখন খেলার মাঠের আনন্দঘন পরিবেশের সুরটা যেন কেটে গেল। উপস্থিত দর্শক আর প্রতিযোগীরা দেখলেন, বিলাপ করতে করতে ছেলে হত্যার বিচার চাইছেন এক নারী। একপর্যায়ে নিজেকে সামলাতে না পেরে মাঠে পড়ে যান তিনি। লুটিয়ে পড়েও তাঁর বিলাপ থামেনি। স্রষ্টার কাছে চাইছিলেন ছেলে হত্যার বিচার।
কে তিনি? কিছুক্ষণের মধ্যেই সবার কাছে পরিষ্কার হলো বিষয়টি। তিনি ২০১৬ সালে খুন হওয়া কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর মা জাহেদা আমিন চৌধুরী। জাহেদা নিজেও বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছাত্রী হলের কর্মচারী। ক্রীড়া প্রতিযোগিতা উপলক্ষে আর সবার মতো তিনিও মাঠে এসেছিলেন। কিন্তু প্রতিযোগিতা উপলক্ষে প্রকাশিত স্যুভেনিরে ছেলে হত্যা মামলার প্রধান আসামি মোহাম্মদ আলমগীর টিপুর ছবি দেখে নিজেকে আর সামলাতে পারেননি এই মা। স্যুভেনির হাতেই ছুটে যান মাঠে। গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে এমন দৃশ্য দেখে আবেগে আক্রান্ত হন কয়েক শ কর্মকর্তা-কর্মচারীও।
ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে চলছে আবারও আলোচনা, এখানে তারই একটি নমূনা:
উপরির বিষয়টি রাজনৈতিক, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় সহিংসতার বিষয়।
নিচে যে ছবিটি দেখতে পাচ্ছেন, এখানে একজন দু:খিত এবং ক্ষুদ্ধ মানুষ বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছে। এখানে রুমা আক্তার নামে যে নারী মারা গিয়েছে সে হয়েছে পারিবারীক সহিংসতার শিকার।
কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁওতে গায়ে কেরোসিন ঢেলে রুমা আক্তার নামের এক গৃহবধুকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পলাতক রয়েছে স্বামী ও তার স্বজনরা।
লোমহর্ষক এ ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে এলাকায়। মৃতদেহের সুরহতাল রিপোর্ট তৈরি করে সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।
নিহত গৃহবধু ওই ইউনিয়নের দক্ষিণ মাইজ পাড়া এলাকার মৃত ওবাইদুল্লাহর ছেলে ওয়াহিদ উল্লাহর স্ত্রী রুমা আক্তার।
সে পার্শ্ববর্তী চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড দক্ষিণ পাড়া এলাকার গিয়াস উদ্দীনের কন্যা এবং এক সন্তানের জননী। নিহত রুমা আক্তারের মামা আবদুল হক অভিযোগ করে বলেন, স্বামী ওয়াহিদুল্লাহর সাথে রুমা আক্তারের বিয়ে হয়েছিল বছর দুয়েক আগে। বিয়েটি প্রেম গঠিত হওয়ায় মেনে নেয়নি তার পরিবার। অনেক নির্যাতন অপমান সহ্য করে সুখের আসায় সংসার করে আসছিল সে। শুরু থেকেই যৌতুকের দাবিতে রুমাকে নির্যাতন করে আসছিল শ্বশুর পক্ষের লোকজন।
গত ২৮ জানুয়ারি ওয়াহিদুল্লাহ’র যোগসাজসে ভাই মামুন, মোর্শেদ মা তফুরা বেগম রুমা আক্তারকে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। তার শোর চিৎকারে এলাকার লোকজন ও প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে দ্রুত উদ্ধার করে ঈদগাঁওস্থ একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানে অবস্থা বেগতিক হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখানে ২/৩ দিন চিকিৎসা নেওয়ার পর আশঙ্কাজনক হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এখানে রাষ্ট্রীয়, পারিবারিক এবং সামাজিক তিন ধরনের দুবৃত্তায়নের বিষয়ই খুব স্পষ্ট, বিপরীতে আছে অসহায় মানুষের আর্তনাদ, বেশিরভাগ সময়ই তা নীরব!